ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীকে হারিয়ে দিল সিলেট

প্রকাশিত: ০৪:২১, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

রাজশাহীকে হারিয়ে দিল সিলেট

মিথুন আশরাফ ॥ পয়েন্ট তালিকার তলানিতে যে দলগুলো তারমধ্যে সিলেট সিক্সার্সও আছে। কিন্তু দলটি শুক্রবার চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচেই রাজশাহী কিংসকে ৭৬ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে। এই জয় পেয়ে ‘প্লে-অফ’ খেলার আশাও জিইয়ে রেখেছে সিলেট। ডেভিড ওয়ার্নার অস্ট্রেলিয়ায় চলে যাওয়ার পর পাকিস্তান পেসার সোহেল তানভিরের কাঁধে দলটির দায়িত্ব পড়ে। প্রথম ম্যাচেই হারেন সোহেল। এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হয় দেশী ক্রিকেটারদের ওপরই অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হবে। অলক কাপালীকে অধিনায়ক করা হয়। তাতে জয়ও মিলে সিলেটের। সোহেল দুর্দান্ত বোলিং করেন। রাজশাহীর বিরুদ্ধে ৪ ওভার বল করে ১৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন। মোহাম্মদ নাওয়াজও (৩/২২) দুর্দান্ত বোলিং করেন। তাসকিন আহমেদ ও অলক কাপালীও ২টি করে উইকেট নেন। সিলেট বোলারদের অসাধারণ বোলিং নৈপুণ্যেই জয় মিলে। রাজশাহীকে হারানো যায়। টস জিতে রাজশাহী অবশ্য সিলেটকে আগে ব্যাটিং করতে দিয়েই যেন ভুলটি করে। সিলেট সুযোগটি পেয়ে ভালই কাজে লাগায়। ব্যাটসম্যানরাও ঐক্যবদ্ধ নৈপুণ্য দেখান। ওয়ার্নারের পরিবর্তে নেয়া ইংল্যান্ডের জেসন রয়ের ৪২, আফিফ হোসেন ধ্রুবর ২৮ ও লিটন কুমার দাসের ২৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৮০ রান করে সিলেট। শেষে সোহেল তানভির অপরাজিত ২৩ রান করেন। মুস্তাফিজুর রহমান ২ উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে রাজশাহীর ভরাডুবি হয়। ফজলে মাহমুদ রাব্বি এতদিন ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি। শুক্রবার জ্বলেছেন। ৪১ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলেন। কিন্তু দলের অন্য ব্যাটসম্যানরা এতটাই ব্যর্থ হয়েছেন, মাত্র দুই ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছেন। তাও ২০ রানের নিচেই করেছেন জাকির হাসান (১৬) ও রায়ান টেন ডয়েশ্চেট (১২)। তাতে করে রাজশাহীও ১৮.২ ওভারে ১০৪ রান করতেই গুটিয়ে যায়। লরি ইভান্স দুর্দান্ত ব্যাটিং করছিলেন। রাজশাহীর এ ব্যাটসম্যানের কাছ থেকেই এবারের বিপিএলে প্রথম সেঞ্চুরি মিলে। কিন্তু শুক্রবার তাকে আউট করে দেন সোহেল তানভির। এরপর থেকেই রাজশাহীর ভরাডুবি শুরু হয়ে যায়। তা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এই ম্যাচটি হারায় রাজশাহী টানা দুই ম্যাচেই হারে। পয়েন্ট তালিকায় পঞ্চম স্থানেই আছে দলটি। আর সিলেট জিতে আবার সাত দলের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে ওঠে। অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়ে ম্যাচসেরা হন সোহেল। তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নেই দেশী ক্রিকেটারদের দিয়ে অধিনায়কত্ব করাব। তাতে কাজও হয়। আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি পাওয়ার প্লেতে (৫৭ রান করে সিলেট) ভাল স্কোর করা গেলে ম্যাচও জেতা যাবে। আমাদের (প্লে-অফে খেলার) সুযোগ কম। তারপরও আমরা আশায় আছি। টুর্নামেন্টে এখনও টিকে আছি।’ মেহেদী হাসান মিরাজ শুরু থেকেই রাজশাহীর অধিনায়ক। হার-জিতের মধ্য দিয়েই কাটছে তার নেতৃত্ব। শুরু থেকে এক ম্যাচ হার, আরেক ম্যাচ জয় পেয়েছে রাজশাহী। শেষ চার ম্যাচে দুই ম্যাচ জিতে। আরেকদিকে দুই ম্যাচে হারে। মিরাজ বলেন, ‘আমরা ব্যাটিং ভাল করতে পারিনি। আমরা টানা দুই ম্যাচ হেরেছি। এখনও লীগে তিন ম্যাচ বাকি আছে। আমাদের শক্তভাবে ফিরে আসতে হবে। আশাকরি, পরের ম্যাচেই শক্তভাবে ফিরব।’ রাজশাহী এখনও পঞ্চম স্থানে আছে। হাতে আছে তিন ম্যাচ। ৮ পয়েন্ট আছে। টানা তিন ম্যাচ জিতলে হবে ১৪ পয়েন্ট। দুই ম্যাচ জিতলেও ‘প্লে-অফে’ খেলার সুযোগ থাকবে। তার মানে সুযোগ ভালভাবেই আছে। সিলেট ৬ পয়েন্ট পেয়েছে। হাতে আছে ৩ ম্যাচ। যদি টানা তিন ম্যাচ জিতে, তাহলে ১২ পয়েন্ট হবে। যে কোন একটি ম্যাচ হারলেই ‘প্লে-অফ’ থেকে ছিটকে পড়বে সিলেট। এখন দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত রাজশাহী ও সিলেটের কি দশা হয়। স্কোর ॥ সিলেট সিক্সার্স ইনিংস- ১৮০/৬; ২০ ওভার (লিটন ২৪, সাব্বির ১, জেসন ৪২, আফিফ ২৮, পুরান ১৯, কাপালী ১৬*, নাওয়াজ ১১, সোহেল ২৩*; মুস্তাফিজ ২/৪৩)। রাজশাহী কিংস ইনিংস- ১০৪/১০; ১৮.২ ওভার (ইভান্স ১, মুমিনুল ৫, রাব্বি ৫০, ডয়েশ্চেট ১২, জাকির ১৬, জোঙ্কার ১, সেকুগে ২, মিরাজ ১, আরাফাত ৮, কামরুল ২, মুস্তাফিজ ১*; সোহেল ৩/১৭, নাওয়াজ ৩/২২)। ফল ॥ সিলেট সিক্সার্স ৭৬ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ সোহেল তানভির (সিলেট সিক্সার্স)।
×