ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কেরানীগঞ্জে হকারদের দখলে ফুটপাথ ॥ ভোগান্তি

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

 কেরানীগঞ্জে হকারদের দখলে ফুটপাথ ॥ ভোগান্তি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেরানীগঞ্জ, ২৫ জানুয়ারি ॥ কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন সড়কের ফুটপাথের ওপর গড়ে ওঠা দোকানগুলোকে কেন্দ্র করে দৈনিক চলছে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য কার্যক্রম। ফুটপাথের ওপর গড়ে ওঠা এসব দোকান-পাট কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন অবৈধ ঘোষণা করে উচ্ছেদ অভিযান চালালেও বাস্তবে মিলছে না এর কোন প্রতিকার। রাজনৈতিক প্রভাবশালী ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মদদেই চলছে অবৈধভাবে ফুটপাথের ওপর দোকান বসানোর প্রতিযোগিতা। কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে একদিকে উচ্ছেদ অভিযান চলে অন্যদিকে আবার পুনরায় বসে যায় এসব অবৈধ দোকান। ফলে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে এ এলাকার অর্ধ লক্ষাধিক সাধারণ মানুষকে। সরেজমিনে ঘুরে কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, আগানগর, কালীগঞ্জ বাজার, কদমতলী গোল চত্বর, গোলাম বাজার, কালিন্দী, খোলামোড়া বাজার, আটি বাজার, কলাতিয়া বাজার, রুহিতপুর, আবদুল্লাহপুর, হাসনাবাদসহ প্রায় আরও অনেক এলাকাতেই চলছে অবৈধ দোকান ও বাজার বসানোর রমরমা বাণিজ্য। শুধু হাঁটার পথই না যেখানে খালি জায়গা পাচ্ছে সেখানেই বসছে এসব দোকানপাট ও বাজার। চায়ের দোকান, খাবার হোটেল, ফলের দোকান, কাঁচা বাজার, মাছ বাজার, বিভিন্ন ধরনের হকারি দোকান ইত্যাদি। কি না পাওয়া যায় কেরানীগঞ্জের এসব ফুটপাথের দোকানে। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে জুয়েলারি, কসমেটিক, জামা-কাপড়, মোবাইল থেকে শুরু করে দৈনন্দিন প্রয়োজনের বেশির ভাগ পণ্যই মিলছে এসব অবৈধ টং দোকানগুলোতে। আর ব্যবসার ধরন হিসাবেই পৃথক পৃথক টোল আদায় করছে স্থানীয় রাজনৈতিক পাতি নেতারা। টং দোকান ও বসার জন্য একটু জায়গার জন্য প্রতিদিন পাতি নেতাদের দিতে হচ্ছে ১শ’ থেকে ৫শ’ টাকা। সারা কেরানীগঞ্জ উপজেলা হিসাব করতে গেলে প্রতিদিন প্রায় অর্ধকোটি টাকার উপরে আদায় করছে সিন্ডিকেটের লোকজন। আর এ টাকা তোলার জন্য পাতি নেতাদেরও কিছু নির্দিষ্ট ছিসকে মাস্তান লোক নিয়োগ করা আছে। যাদের কাজই হচ্ছে জোরপূর্বক টাকা আদায় করা। টাকা আদায় করে প্রতিদিনই ভাগাভাগি করে নিচ্ছে সিন্ডিকেটের লোকজন। আবার সপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতেও এসব চাদার টাকা বিভিন্ন মহলেও দেওয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক নেতা জানায়, আমরা দোকান বা বাজার বসিয়ে যে টাকা পাই তা শুধু আমরা খাই না। উপরের মহল ও বিশেষ মহলেও যায় এ টাকা। উপরের মহল ও বিশেষ মহল বুঝাতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ থেকে শুরু করে উপজেলার কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী পর্যন্ত এ টাকা ভাগাভাগি করে নেয়। স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা, পাতি মাস্তান, পুলিশ ও উপজেলার অসাধু কর্তা ব্যক্তিদেরই দিন দিন পকেট ভারি হচ্ছে। কেরানীগঞ্জে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব দোকন ও বাজারের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও তদারকির না থাকার কারণে সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। আর সাধারণ মানুষ পোহাচ্ছে জানজটসহ নানান ধরনের ভোগান্তি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহে এলিদ মাইনুল আমিন জনকণ্ঠকে জানান, ইতোপূর্বে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকান ও বাজার উচ্ছেদের জন্য আমরা উপজেলা প্রশাসন বেশ কয়েকবার বিভিন্ন জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি এবং এ উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে এ বিষয়ে আমরা আইন প্রণয়ন করে জেল ও নগদ টাকা জরিমানার বিধান চালু করব।
×