ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কবিতা

প্রকাশিত: ০৭:৩৫, ২৫ জানুয়ারি ২০১৯

কবিতা

প্রতিপক্ষে অন্যস্বর সোহরাব পাশা প্রতিপক্ষে অন্যস্বর, ভেংচি কাটে তীব্র শীত অন্ধ-অন্ধকার। বন্ধনের অন্য পাশে ছায়ার কঙ্কাল, ঘরশূন্য অজস্র দেওয়াল, অন্তঃপুরে ভুল মানুষের নিরন্তর চিৎকার- কোলাহল। বেদনায় নতমুখী কেউবা সুতো ছেঁড়া পুরনো স্মৃতির ভেতর বিহ্বল বিনিদ্র জেগে থাকে, বিন¤্র লজ্জায় নুয়ে পড়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে, অন্ধকারে ফুল ফোটে ভিজে যায় জোছনার তুমুল বৃষ্টিতে, পাতারা আবৃত্তি করে লোরকার ধ্রুপদী কবিতা। শূন্যদাহ। বুঝি নি অশ্রুভাষা শিশিরের মন্ত্রগুপ্তি মেঘ- বৃষ্টির খেলা রং উঠে যাওয়া ভালবাসা, তাঁবুর ভেতর সার্কাসের ধূর্ত সংসার। জীবন তো অন্ধের চোখে পূর্ণিমা দেখা স্বপ্নঘুম- ঘুমের ভেতর ছোট ছোট মৃত্যু নীল পরির কাহিনী। মানুষের শব্দে ভেঙে যায় গোলাপি সকাল দুপুরের চিল ওড়ে ফিরে যায় স্বপ্নশূন্য নিরালা বাসায়, সন্ধ্যের বিষণ্ণ ধুলো ওড়ে, অন্ধকার নামে চোখের পাতায় মানুষ নিঃশব্দে নিদ্রিত থাকে অন্য এক ভোরের প্রতীক্ষায় ** মিথ ও মিথ্যেরা রাহমান ওয়াহিদ কাঁচ মসৃণ গোটা পথটাই কি আটকে গেছে মলম পিচ্ছিলতায়? দাঁড়াতে পারবে না, হায় মেঘপাখি, হৃদসাদা রোদের ঝলক। কত গ্রীষ্ম গেল, বর্ষা গেল, দেখি না আর ঘাম ঝরা তারার বকুল। একদা মাথা ঠুকেছে যে স্রোতের বহ্নি ছোবল তারও পদচিহ্ন আজ পথহারা নিটোল পাথর। ওই যে আসছে ধেয়ে যে ঘূর্ণিত ঢেউ এর যুথবদ্ধ মিথ ও মিথ্যেরা, দ্যাখো হাতে হাত ধরে আশ্চর্য দাঁড়িয়ে তারই প্রতীক্ষায়। ** মন আমার রাশেদুল বারী আমার মনটা যেনো কেমন কেমন করে বিরান ভিটায় একটা শালিক যেমন যেমন করে আমার মনটা এখন তেমন তেমন করে। আমার মনটা যেনো কেমন কেমন করে। একটা চড়ুই বুকের ভেতর ফুরুৎ ফুরুৎ উড়ে খুঁজে ফেরে স্বপ্নগুলো হারিয়ে ফেলার পরে আমার মনটা যেনো কেমন কেমন করে। যেই তুমিটা দুঃখ দিলে সারাজীবন ধরে সেই তুমিটার জন্যও আমার মনটা কেন পোড়ে আমার মনটা কেন এমন এমন করে? কেমন একটা মানুষ আমি ওরে আমার মনটা শুধু কেমন কেমন করে। ** মগ্ন আকাশে ছাই কালো মেঘ রুহুল আমিন রাকিব আধখানা চাঁদনী জ্বলে জ্বলে আলো দেয় নিশ্চুপে; নীল গরলের আয়োজনে মগ্ন আকাশে ছাই কালো মেঘ, আলো আঁধারি’র খেলা বেশ জমছে! নশ্বর জুড়ে যেন শ্মশান, সুনসান নীরবতা। বাঁশের বনে চলছে জোনাক দলের কারফিউ; উত্তরের জানালা খুলে কান পেতে শুনতে পাই, মাদি কুকুরে’র করুণ সুরের বিলাপ! মাঝ রাতে ‘শুনতে পাই’ না পাখির কিচির মিচির কলতান। গুমোট বাঁধা এই শহরের কোল জুড়ে নামছে যেন মৃত্যুর জয় উল্লাস! প্যাঁচাদের তীক্ষ্ন চোখে বিশ্ব জয়ের নেশা! ভোর হলে পোয়াতি রোদের স্বচ্ছ আলোয় আলোকিত হয় সকাল। ** মখমলে রোদের তপস্যায় বজলুর রশীদ কীভাবে জীবনের প্রশংসা লিখি? স্মৃতির তোড়ে পরিচিত উপলব্ধির আয়নায় দেখছি এখন আত্মার মুখ। বদলে গেছে লাবণ্যময় জীবন; একদিন উদ্দীপ্ত যৌবন ছিল। বেঁচে আছি মৌনতার খোলা বারান্দায় অস্থির সময়ে কাঁপে নির্ভুল জটিল শীতে জমে কষ্টের বিষণ্ন রাত। বুকের অতলে নিঃশব্দ বেদনায় হই নীল! অথচ মৃত্যুহীন সুবাস ফুলগুলো দেখে দেখে নিশ্চুপ নীরবতায় কেটে যায়; স্মৃতির আল্পনায় গুন গুন করে বসন্ত রঙের অপেক্ষায় জেগে থাকা বিশ্বাসে ফেলে আসা দিনগুলো বড় অসহায়! অথচ চৌকাঠজুড়ে সুখতাপের অজানা রহস্য মাখা প্রেম- নিঃসঙ্গতার একলা সময় কাটে আমার মখমলে রোদের তপস্যায়...। ** হয়তো বা নই গণ্য এসএম সেবুল এই যে আমি একলা থাকি নীল আকাশের ছবি আঁকি এ লাগে বেশ ভালো, নদীর ধারে কাশের বনে মধ্য রাতে আপন মনে দেখি চাঁদের আলো। আমার মনে দেশের ছবি উদাস ব্যাকুল দগ্ধ কবি আমার আছে গান, ফুলের বনে শিউলি ঝরে আমাকে বেশ মুগ্ধ করে সবুজ ধানের ঘ্রাণ। এই যে আমি ব্যর্থ কবি কিন্তু আমার আছে সবই বলতে কথা মানা, পাখির গানে মুগ্ধ আমি টাকার চেয়েও এসব দামি এসব আমার জানা। এই যে থাকি মায়ের বুকে শ্রেষ্ঠ আমি বোনের চোখে এতেই আমি ধন্য, বাংলা ভাষার বইয়ের পাতায় তোমাদের এই মনের খাতায় হয়তো বা নই গণ্য।
×