ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিপিএলে সাকিব-মুশফিকের ভিন্ন লড়াই

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ২৫ জানুয়ারি ২০১৯

বিপিএলে সাকিব-মুশফিকের ভিন্ন লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিপিএলের দ্বিতীয় আসরের কথা মনে আছে? ব্যাটিংয়ে মুশফিকুর রহীম উড়তে থাকেন। আরেকদিকে অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়ে মন জয় করেই চলেন সাকিব আল হাসান। বিদেশী ক্রিকেটারদের পেছনে ফেলে এ দুই দেশী ক্রিকেটারই নজর কাড়েন। দুইজনের মধ্যে লীগ সেরা হওয়ার প্রতিযোগিতাও চলে। সবার একটা ধারণা হয়ে গিয়েছিল, সবচেয়ে বেশি রান করা মুশফিকই লীগ সেরা হবেন। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে শেষ পর্যন্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যের জন্য সাকিবই লীগ সেরা হন। এবারও দুইজনের মধ্যে এ ভিন্ন লড়াই চলছে। ব্যাটিংয়ে দেশী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মুশফিকই সবার ওপরে আছেন। আর বল হাতে সাকিব আছেন শীর্ষে। দেশী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এ মুহূর্তে মুশফিকই আছেন শীর্ষে। রংপুর রাইডার্সের রাইলি রুশো (৮ ম্যাচে ৮৯.৭৫ গড়ে ৩৫৯ রান) রান সংগ্রাহকের তালিকায় এখনও শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছেন। তবে সবাইকে পেছনে ফেলে নিচ থেকে মুশফিক উঠে এসেছেন দ্বিতীয় স্থানে। সর্বশেষ চার ম্যাচের তিনটিতেই হাফ সেঞ্চুরি করে, ঝড়ো ইনিংস খেলে মুহূর্তেই ওপরের দিকে উঠে আসছেন মুশফিক। রুশোর চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে ৪৬.১৬ গড়ে ২৭৭ রান করে মুশফিক পঞ্চম থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠেছেন। হাতে এখনও লীগের পাঁচটি ম্যাচ বাকি আছে। মুশফিকের চিটাগং ভাইকিংস দলটিও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আছে। ‘প্লে-অফ’ খেলা প্রায় নিশ্চিতই হয়ে গেছে দলটির। তাতে করে মুশফিকের ম্যাচ খেলার সংখ্যা আরও বাড়বে। ফাইনাল পর্যন্ত খেলতে পারলে দুটি অথবা তিনটি ম্যাচ আরও বাড়তে পারে মুশফিকের। এমন সুযোগ মিললে, আর যে ধারাবাহিকতা আছে, তা ধরে রাখতে পারলে; মুশফিকই ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সেরার স্থানটি দখল করে নিতে পারেন। শুরুতে দেশী ব্যাটসম্যানরা সেরা পাঁচেও ছিলেন না। এখন সেরা দুইয়ে স্থান হয়েছে। সেরা পাঁচে আবার খুলনা টাইটান্সের জুনায়েদ সিদ্দিকীও (চতুর্থ স্থান) রয়েছেন। ধীরে ধীরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের তামিম ইকবাল (২৪.০০ গড়ে ১৯২ রান), ঢাকা ডায়নামাইটসের সাকিব আল হাসান (২৭.০০ গড়ে ১৮৯ রান), খুলনা টাইটান্সের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (২০.৩৩ গড়ে ১৮৩ রান) উঠে আসছেন। ব্যাটিংয়ে দেশী ব্যাটসম্যানদের নিয়ে যে ভাবনা তৈরি হয়েছিল তা ভালভাবেই দূর হতে চলেছে। চট্টগ্রামে আজ থেকে বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের চতুর্থ পর্ব শুরু হবে। এ পর্বে পাঁচদিনে ১০ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এই পর্বেই হয়তো দেশী ব্যাটসম্যানরা সেরা পাঁচে পোক্তভাবে অবস্থান নিতে পারবেন। বোলিংয়ে চিত্রটা একেবারেই ভিন্ন। ঢাকায় তৃতীয়পর্ব শুরু হওয়ার আগে একজন বিদেশী বোলার (রবি ফ্রাইলিঙ্ক-১২ উইকেট) সেরা পাঁচে ছিলেন। তৃতীয়পর্ব শেষ হতেই সেরা পাঁচের সব বোলারই বাংলাদেশী! দুর্দান্ত বোলিং করে চলেছেন দেশী বোলাররা। অসাধারণ ‘আপ-ডাউন’ লড়াইও চলছে। তৃতীয়পর্ব শুরুর আগে সিলেট সিক্সার্সের তাসকিন আহমেদ ছিলেন বোলারদের মধ্যে শীর্ষে। চতুর্থপর্ব শুরুর আগে সাকিব সেই স্থান দখল করে নিয়েছেন। তাসকিনকে পেছনে ঠেলে দিয়েছেন। সাকিব ১৭ উইকেট নিয়ে শীর্ষে আছেন। তাসকিনের শিকার মোট ১৬ উইকেট। তৃতীয় স্থানে রংপুরের মাশরাফি বিন মর্তুজা (১৩ উইকেট), সমান উইকেট নিয়ে চতুর্থ স্থানে একই দলের শফিউল ইসলাম রয়েছেন। পঞ্চম স্থানে ফ্রাইলিঙ্ককে পেছনে ঠেলে দিয়ে রাজশাহী কিংসের আরাফাত সানি (১২ উইকেট) সেই স্থান দখল করেছেন। বোলিংয়েতো আগে থেকেই দেশী বোলারদেরই দাপট ছিল। এখন ব্যাটিংয়েও দেশী ব্যাটসম্যানদের দাপট ভালভাবেই নজরে পড়ছে। তবে এবার লীগে সাকিব-মুশফিকের লড়াইও যেন ধীরে ধীরে জমে উঠতে শুরু করেছে। ২০১৩ সালের বিপিএলে মুশফিক সর্বোচ্চ ৪৪০ রান করেছিলেন। কিন্তু ব্যাটিং-বোলিং কোনটিতেই সেরা পাঁচে না থেকেও সাকিব যে ব্যাট হাতে ৩২৯ রান ও বল হাতে ১৫ উইকেট নিয়ে অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন, তাতেই বাজিমাত করেন। লীগ সেরাও হন সাকিব। এবার কী হবে? তা সময়ই বলে দেবে। তবে যেভাবে মুশফিকের ব্যাটিং ও সাকিবের অলরাউন্ড নৈপুণ্যের গতি তাতে এবারও এ দুইজনের মধ্যে লীগ সেরা হওয়ার এ ভিন্ন লড়াই চলবে, তা ভালভাবেই বোঝা যাচ্ছে।
×