স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রায় বারো হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চার লেনে উন্নীত হতে যাচ্ছে একশত নব্বই কিলোমিটার দীর্ঘ এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক। দ্বিতীয় সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) সড়ক সংযোগ প্রকল্পের আওতায় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এডিবির আর্থিক সহযোগিতায় এ কাজ সম্পন্ন হবে।
বৃহস্পতিবার প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরুর লক্ষ্যে নগরীর একটি হোটেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৬নং প্যাকেজের চুক্তি সই হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তিকৃত প্যাকেজ-৬ এর আওতায় ছয়শত পঁচাত্তর কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্ত থেকে হাটিকুমরুল মোড় পর্যন্ত প্রায় বিশ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। মহাসড়কের এ অংশে চুক্তির আওতায় সাতটি সেতু, ১৭টি কালভার্ট, কড্ডা এলাকায় একটি ফ্লাইওভার, পাঁচটি আন্ডারপাস এবং বারোটি বাস-বে নির্মাণ করা হবে আগামী ছত্রিশ মাসের মধ্যে।
চুক্তিপত্রে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের পক্ষে প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান এবং নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের প্রতিষ্ঠান হিগো ও বাংলাদেশের মীর আকতার হোসেন লিঃ-এর পক্ষে লিও শিওয়াও ম্যে সই করেন।
চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম, এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পার্কাশ, প্রকল্প পরিচালক কাজী শাহরিয়ার হোসেনসহ মন্ত্রণালয়, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, তেরোটি প্যাকেজের আওতায় গুরুত্বপূর্ণ এ জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। চার লেনের পাশাপাশি মহাসড়কের দু’পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য মূল সড়ক থেকে সামান্য নিচুতে দুটি সংরক্ষিত লেনও থাকবে। ২০১৮ সালের আট নবেম্বর দুই হাজার ১১০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্পের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয় সরকারী ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বিএনপি নিজেদের কর্মকা-ে লেজেগোবরে অবস্থা ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি তাদের কর্মকা-ে নিজেদের এলোমেলো ও লেজেগোবরে করে ফেলেছে। দলটি অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই ভেঙ্গে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ‘এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের চুক্তিস্বাক্ষর শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
‘সরকার বিএনপিকে ভাঙ্গার চক্রান্ত করছে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির যা পারফরম্যান্স আন্দোলনে ও নির্বাচনে, তাতে দলটি যদি ভাঙনের মুখে যায়, তাহলে তা তাদের ঘরোয়া কলহ-কোন্দলের জন্যই ভাঙবে। সরকারের এমন কী প্রয়োজন আছে যে নড়বড়ে, এলোমেলো বিএনপিকে ভেঙে দিতে হবে। আমরা তো একটা শক্তিশালী বিরোধী দল চাই।’
বিএনপির মধ্যে ভাঙনের শুরু ইঙ্গিত দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইতোমধ্যে তাদের নেতারা ভিন্ন ভিন্ন সুরে কথা বলছেন। তাদের নিজেদের মধ্যেই ভাঙনের সুর। যাদের নিজের ঘরেই শত্রু, তাদের সঙ্গে শত্রুতা করার জন্য বাইরের শত্রুর কোনও প্রয়োজন আছে বলে কেউ মনে করে না।
ঐক্যফ্রন্ট থাকবে না বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্ট একটা জগাখিচুড়ি। এই জগাখিচুড়ির ঐক্য থাকবে না, এটা সবাই জানে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টির সিদ্ধান্ত হয়েছে, জাতীয় সংসদে তারা বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি না আসলে ইতোমধ্যে তো জাতীয় পার্টি অপজিশনের ভূমিকায় চলে গেছে। ১৪ দলের যারা সংসদে আছেন, তারাও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্ট্রং অপজিশনের ভূমিকায় থাকবেন। কাজেই বিরোধী দল থাকবেই। তারপরও যদি বিএনপি আসে তাহলে আরও কণ্ঠ যোগ হবে। অপজিশনের কণ্ঠ সোচ্চার হবে। সেটা গণতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল তো।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নিত্যদিন যদি তাদের অফিসে লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন, একে অপরে হাতাহাতি, একে অন্যকে সরকারের দালাল বলা- এসব তাদের নিত্যদিনের চিত্র। তারা নিজেরা কলহ-কোন্দলে জর্জরিত। এই অবস্থায় তাদের নিজেদের সঙ্গে শত্রুতা করার জন্য তারা নিজেরাই যথেষ্ট।’
ক্ষমতাসীদের দলের এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি না আসলে
মহাজোট ও ১৪ দল, দুটোরই নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ। নৌকা প্রতীকে ভোট করেছে তারা। তাহলে তারা কীভাবে বিরোধী দলে যায়? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দল তো ভিন্ন। একটা প্রতীক নিয়ে তারা নির্বাচন করেছে। কিন্তু তারা যদি এখন মনে করে, তারা অপজিশনের রোল প্লে করবে, এটা তাদের অপশন। দে ক্যান ডু ইট (এটা তারা করতে পারে)।’
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে বিএনপি যদি না আসে তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন হতে যাচ্ছে কি না? এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবে। বিএনপির জন্য নির্বাচনও থেমে থাকবে না, প্রতিদ্বন্দ্বিতার লোকও থাকবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন হবে না। অন্যান্য দল আছে না? শুধু কি বিএনপিই একমাত্র অপজিশন? আরও দল আছে।