ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাতামুহুরীর দু -তীরে বাদামের চাষ বাড়ছে

প্রকাশিত: ১৯:০৭, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯

মাতামুহুরীর দু -তীরে বাদামের চাষ বাড়ছে

অনলাইন রির্পোটার ॥ প্রাকৃতিক নৈস্বর্গের অঙ্গরাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রামের পলি পড়া মাতামুহুরী নদীর দু-তীরে এবার বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার ফলন অনেক বেশি হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। তাই বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে চলা এই নদীর তীরবর্তী কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। তারা এখন বাদাম চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শিগগিরই এই বাদাম তোলা হবে। এবার বাদাম বিক্রি করে ভালো লাভের আশা করছেন কৃষকরা। লামা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে মাতামুহুরীর চরে ১৯০ হেক্টর জমিতে চীনা বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ইতিমধ্যে ২০০ হেক্টরের অধিক পরিমাণ জমিতে বিভিন্ন চীনা জাতের বাদাম চাষ করা হয়েছে। যা গত বছর থেকে প্রায় ৬০ হেক্টর বেশি। ২০১৮ সালে ১৪০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। সাধারণত, চরের বালুতে প্রতি হেক্টরে ১১৮ থেকে ১২০ মণ বাদাম হয়। সে হিসাবে এবার মাতামুহুরীর চরে প্রায় ২৩ হাজার মণ বাদাম হওয়ার আশা করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা। গত বছর প্রায় ১৭ হাজার মণ বাদাম হয়েছিল এ উপজেলায়। আর প্রতি মণ কাঁচা চীনাবাদাম এখানে প্রায় দেড় হাজার টাকা দরে পাইকারীভাবে বিক্রি হয়। লামার পাইকারী ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ, আলী আহমদ ও মো. জামালের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি মৌসুমে উপজেলার পাইকারী ব্যবসায়ীরা গড়ে প্রায় দেড় হাজার মণ করে বাদাম কিনে থাকেন। ছাগলখাইয়া এলাকার চাষী তোতা মিয়া, আব্দুল মালেক, আব্দুল হামিদ জানান, প্রতি বছরের মতো এবারো লামা কৃষি বিভাগ এবং তামাক কোম্পানীগুলোর সহায়তায় সময়মতো চীনা বাদামের বীজ পেয়েছেন তারা। ফলে বীজ বোনা থেকে শুরু করে চাষের সমস্ত প্রক্রিয়াই সঠিক সময়ে শেষ করতে পেরেছেন। তাই ফলনও ভালো হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের হাইব্রিড তামাক আবাদের কারনে তামাক চাষের আওতাধীন জমির পরিমান ২০-২৫ শতাংশ কমে গেছে। ফলে ঐ সমস্ত নদী পাড়ের জমিতে এখন বাদাম ও বিভিন্ন রকম শীতকালীন সবজি চাষ হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, অন্যান্য ফসলের তুলনায় বাদাম চাষে শ্রমিক ও প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ তুলনামূলকভাবে কম লাগে। তাই বাদাম চাষ করে চাষীরা অধিক লাভবান হয়। প্রতি হেক্টর জমিতে বাদাম চাষে উৎপাদন খরচ ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। মোট আয় হয় প্রায় ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। আর লাভ থাকে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। লামা পৌরসভার লাইনঝিরি এলাকার কৃষক মো. জালাল জানান, গত বছর বাদাম চাষ করে একর প্রতি ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা লাভ করেছেন তিনি। এতে অনুপ্রাণিত হয়ে দরদরী ও বৌদ্ধভিটা এলাকার চাষীরাও এ বছর বাদাম চাষে বেশি ঝুঁকেছেন। লামা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নদীর তীর ঘেষা ভূমিতে অল্প খরচে চাষাবাদের বিষয়ে কৃষকদের মাঝে এবার বিশেষ প্রশিক্ষণ ও সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। ফলে শাক-সবজি ও বিভিন্ন ফসলের ফলনও ভালো হয়েছে।
×