ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শত শত বেসরকারী কলেজ অবশেষে ভারমুক্ত হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯

শত শত বেসরকারী কলেজ অবশেষে ভারমুক্ত হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশের গ্যাঁড়াকলে পড়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলা সারাদেশের শত শত বেসরকারী কলেজ অবশেষে ভারমুক্ত হচ্ছে। নতুন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দিপু মনির ত্বরিত পদক্ষেপে বেসরকারী কলেজে স্থায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগের বিধিনিষেধ তুলে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এদিকে সঙ্কটের চিত্র তুলে ধরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেছে দেশের অত্যতম নামী প্রতিষ্ঠান রাজধানীর ভিকারুন নিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজের গবর্নিং বডির সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদারসহ বোর্ডের সদস্যরা। সঙ্কটের চিত্র তুলে ধরে শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দিপু মনির সহায়তাও চেয়েছেন তারা। তারা শিক্ষা মন্ত্রীকে বলেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পূর্বের এক স্থগিতাদেশের কারণে উদ্যোগ নিয়েও অধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে পারছেন না তারা। মাসের পর মাস কখনও বছরের পর বছর ধরে ভারপ্রাপ্তদের নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাতে হচ্ছে। এতে প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে, সঙ্কট তৈরি হচ্ছে প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনায়। তারা মন্ত্রণালয়ের আদেশ বাতিল করে দ্রুত অধ্যক্ষ নিয়োগের পথ খুলে দেয়ার আবেদন করেছেন। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে করা আবেদনে বলা হয়েছে, ঐতিহ্যবাহী ভিকারুন নিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজ ২০০৮ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে। দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দ্বারা পরিচালিত হওয়ায় একদিকে যেমন কাক্সিক্ষত সেবা পাওয়া যাচ্ছে না অন্যদিকে জনমনে নানা ধরনের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হচ্ছে। মন্ত্রণালয়, ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের প্রত্যাশা অনুসারে জরুরী ভিত্তিতে সরকারী নীতিমালা অনুসারে একজন দক্ষ ও যোগ্য অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পূর্বের এক আদেশে নিয়োগ স্থগিত থাকায় নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় দ্রুত বিশেষ বিবেচনায় দ্রুত অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার অনুমতি চেয়েছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার বলছিলেন, বছরের পর বছর ধরে ভারপ্রাপ্তদের নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাতে হচ্ছে। এতে প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে, সঙ্কট তৈরি হচ্ছে প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনায়। তবে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যক্ষ নিয়োগের বিরুদ্ধেও সক্রিয় আছে একটি বিশেষ গোষ্ঠী। আবার নির্বাচিত গবর্নিং বডি ভেঙ্গে দিয়ে কর্তৃত্ব নিতেও সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি মহল। যারা সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটিতে এক ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনাকে পুঁজি করে বর ধরনের সঙ্কট সৃষ্টির পাঁয়তারা করেছিলেন। তবে কেবল এ প্রতিষ্ঠানই নয়, এই মুহূর্তে প্রায় ১১ শ’ কলেজ চলছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে। ঢাকা বোর্ডে অধ্যক্ষ নেই ২০০ কলেজে। খোদ ঢাকা মহানগরীর ৬২টি কলেজেই নেই অধ্যক্ষ। তালিকায় আছে দেশের নামীদামী প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সরকারী আদেশে সকল প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নিয়োগ এই মুহূর্তে বন্ধ থাকলেও বাধা উঠে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ বলেছেন, আদেশ এখনও বাতিল হয়নি। তবে দ্রুত কাজ চলছে। আমরা পর্যালোচনা করছি। নিয়োগের বাধা আর থাকবে না। দ্রুতই হয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা বলেছেন, মাননীয় মন্ত্রী বিষয়টি দেখছেন। তিনি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক সাহেদুল খবীর চৌধুরী বলছিলেন, আসলে সারাদেশেই কম বেশি এই সমস্যা। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। আমরা পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাঠিয়েছি।
×