ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আনিসুলের পদ আর আশরাফের আসনে ভোট ২৮ ফেব্রুয়ারি

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯

আনিসুলের পদ আর আশরাফের আসনে ভোট ২৮ ফেব্রুয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের শূন্য মেয়র পদে উপ-নির্বাচন হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার। মঙ্গলবার এই সিটির মেয়র পদে উপ-নির্বাচন এবং দুই সিটির সম্প্রসারিত ৩৬ ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জ-১ আসনের পুনর্নির্বাচনের জন্যও তফসিল দেয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী ৮/৯ মার্চে সারাদেশের প্রথম ধাপে উপজেলা নির্বাচন হবে। দ্বিতীয় ধাপে ১৮ মার্চ, তৃতীয় ধাপে ২৪ মার্চ এবং চতুর্থ ধাপে ৩১ মার্চ উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৩ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাচনে জন্য তফসিলের বিস্তারিত ঘোষণা করা হবে। এছাড়াও মার্চের প্রথম সপ্তাহেই সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের ভোট নেয়ার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের ৪৩তম বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ এই তফসিল ঘোষণা করেন। ঢাকার সিটি মেয়র পদের উপ-নির্বাচন ২৮ ফেব্রুয়ারি ॥ তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ঢাকার উত্তর সিটির কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপ-নির্বাচন হবে। এ সিটির মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে গত ২০১৭ সালের ৩০ নবেম্বর শূন্য ঘোষণা করা হয়। একই দিকে অনুষ্ঠিত হবে দুই সিটির ৩৬টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে সাধারণ নির্বাচন। এই নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে ২ ফেব্রুয়ারি শনিবার এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ঘোষণা করা হয়েছে ৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার। তফসিল ঘোষণা অনুষ্ঠানে ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, এই সিটিতে নতুন তফসিলে উপ-নির্বাচন হবে। এজন্য প্রার্থীদের নতুন করে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে। মেয়র পদে মেয়াদ হবে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। একইসঙ্গে দুই সিটি কর্পোরেশনে নতুন করে যুক্ত হয়ে ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ডেরও সাধারণ নির্বাচন হবে। এরও মেয়াদ হবে সিটি কর্পোরেশনের মেয়াদ পর্যন্ত। এই সিটি মেয়র পদের উপ-নির্বাচনের জন্য গত বছর ৯ জানুয়ারি তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আইনী জটিলতার কারণে আদালতে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্বাচনী কর্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় এক বছর পর গত ১৬ জানুযারি বুধবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপ-নির্বাচন ও সম্প্রসারিত অংশের কাউন্সিলর নির্বাচন নিয়ে রুল খারিজ করে দেয় হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। মূলত এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের উপর শুনানি চলাকালে রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী না থাকায় এই রুল খারিজ করে দেয় আদালত। এর ফলে এ নির্বাচনের ওপর হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশ উঠে যায়। নতুন করে ভোট আয়োজনের আইনগত কোন বাধা না থাকায় মঙ্গলবার এই সিটিতে নতুন করে ভোটের তারিখ ঘোষণা করেছে। বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার রুল খারিজের এই আদেশ দেয়। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিশোরগঞ্জ-১ আসনের নির্বাচন ২৮ ফেব্রুয়ারি ॥ এদিকে ঢাকা সিটির মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের পাশাপাশি একই দিনে কিশোরগঞ্জ-১ আসনের ভোট গ্রহণের জন্য তফসিল দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি এই আসনে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে এই আসনে নতুন করে ভোট গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়ায় কমিশনের পক্ষ থেকে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী কিশোরগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থীরা ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। মনোনয়নপত্র বাছাই কবে ৩ ফেব্রুয়ারি রবিবার। ১০ ফেব্রুয়ারি রবিবার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ধার্য করা হয়েছে। ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ বলেন, কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করায় তিনি শপথ গ্রহণ করেননি। যেহেতু তিনি শপথ গ্রহণ করেননি তাই সাধারণ নির্বাচন হিসেবে গণ্য করে ২৮ ফেব্রুয়ারি এই আসনের ভোট হবে। উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদের ভোটগ্রহণ করা হয়। এই নির্বাচনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নির্বাচিত হন। কিন্তু শপথ নেয়ার আগেই গত ৩ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মার্চ থেকে ৫ ধাপে উপজেলা নির্বাচন ॥ এদিকে সারাদেশে উপজেলা পরিষদের মার্চের প্রথম সপ্তাহও থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। এই নির্বাচনের জন্য আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি বিস্তারিত তফসিল ঘোষণা করা হবে। তবে ইসি সচিব জানান প্রথম দফায় ২/২টি বিভাগের অর্ধেক জেলার সব উপজেলায় প্রথম ধাপে ভোট নেয়া হবে ৮ অথবা ৯ মার্চ। এরপর দ্বিতীয় ধাপে ভোট নেয়া হবে ১৮ মার্চ। তৃতীয় ধাপের উপজেলায় ভোট হবে ২৪ মার্চ। চতুর্থ ধাপে ভোট হবে ৩১ মার্চ। বাকি উপজেলায় পঞ্চম ধাপে ভোট নেয়া হবে রমজানের পরে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৪৯২ উপজেলার মধ্যে এবার প্রথম ধাপে ৯৮, দ্বিতীয় ধাপে ১১৫, তৃতীয় ধাপে ৮১, চতুর্থ ধাপে ৯১টি ও পঞ্চম ধাপে ৭৪টি ভোট করার প্রাথমিক প্রস্তাব রয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ বিবেচনায় বাকিগুলোয় আলাদা এক ধাপে করা হতে পারে। সদর উপজেলাগুলোতে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনার কথাও ইতোমধ্যে জানিয়েছে ইসি। এজন্য বিধিমালা প্রণয়নের জন্য মঙ্গলবারের বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৪ সালেও ধাপে ধাপে উপজেলায় ভোট করেছিল তৎকালীন ইসি। এছাড়াও মার্চের প্রথম সপ্তাহেই সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। ৩ ফেব্রুয়ারি এই নির্বাচনের বিষয়েও বিস্তারিত তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। আইন অনুযায়ী সংসদের নির্বাচিত এমপিদের ভোটের নারী সদস্যরা নির্বাচিত হয়ে থাকেন। তবে প্রতি আসনের একজন মাত্র প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ায় নারী আসনে এর আগে ভোটের প্রয়োজন হয়নি। প্রত্যাহারের শেষ দিনেই কমিশন থেকে তাদের নিবনির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। এবারের ৫০টি আসনের মধ্যে আসন সংখ্যার অনুপাত অনুযায়ী আওয়ামী লীগ ৪৩ আসনের প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবে। অপরদিকে জাতীয় পার্টি মাত্র চার আসনে বিএনপি ১টি অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো মিলে আরও দুটি আসনের প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবেন। তবে বিএনপির নারী আসনের নির্বাচন অংশ না নিলে সংসদের প্রতিনিধিত্বশীল অন্য দলের মধ্যে এই আসন সংখ্যা বণ্টন হয়ে যাবে। পরবর্তীতে বিএনপির প্রার্থীরা শপদ নিলেও সেক্ষেত্রে নারী আসনে আর প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবে না।
×