ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রতি ওয়ার্নারের কৃতজ্ঞতা

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২১ জানুয়ারি ২০১৯

 বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রতি ওয়ার্নারের কৃতজ্ঞতা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বড় ধরনের সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলেন, প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলা সম্ভব হচ্ছিল না নিষেধাজ্ঞার খড়গে আটকা পড়ে। নিদারুণ যন্ত্রণার সেই সময়টাতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ খেলতে পেরেছেন ডেভিড ওয়ার্নার। বল টেম্পারিংয়ে জড়িয়ে ১ বছরের জন্য ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হন তিনি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) কাছ থেকে। সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফেরার ক্ষেত্রে যে প্রস্তুতিটা থাকা দরকার এবার বিপিএলে ৭ ম্যাচ খেলে তা হয়ে গেছে এ বাঁহাতি ওপেনারের। তবে ইনজুরির কারণে ফিরে যেতে হয়েছে মাঝ পথে। যাওয়ার আগে বাংলাদেশের ক্রিকেট, দর্শক-ভক্ত আর বিপিএলের প্রতি নিজের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গেছেন তিনি। ৩২ বছর বয়সী ওয়ার্নার সিলেট সিক্সার্সকে নেতৃত্ব দিয়ে অনেক ক্রিকেটীয় দর্শনও দেখিয়ে গেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। এবার বিপিএলে সবচেয়ে আলোচিত দুই বিদেশী ক্রিকেটার ছিলেন ওয়ার্নার এবং স্টিভেন স্মিথ। বল টেম্পারিং দোষে দুষ্ট হয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক হয়ে যাওয়া এ সহঅধিনায়ক ও অধিনায়ক ছিলেন চমকপ্রদ সংযোজন। স্মিথ অবশ্য ইনজুরির কারণে ২ ম্যাচের বেশি খেলতে পারেননি। চলে গেছেন আগেই। তবে ওয়ার্নার ৭ ম্যাচ খেলে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ইনজুরি নিয়েও খেলে গেছেন তিনি। আর দারুণ নেতৃত্বগুণের পাশাপাশি আবার ব্যাট হাতেও পারফর্মেন্স দেখিয়েছেন। মূলত ওপেনার হলেও বিপিএলে তাকে তিন/চার নম্বর পজিশনেও ব্যাট করতে দেখা গেছে। ৭ ম্যাচে তার ইনিংসগুলো ছিল- ১৪, ৫৯, ৭, ০, ৬১*, ৬৩ ও ১৯। এর পাশাপাশি রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচটিতে ব্যাটিংয়ের সময় হুট করে একটি ওভারে ডানহাতে ব্যাট চালিয়ে আলোচনার জন্ম দেন ওয়ার্নার। ক্রিস গেইলের করা সেই ওভারে তুলে নেন ১৪ রান। অবশ্য পরবর্তীতে মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) এটাকে স্বীকৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ক্রিকেট আইন অনুসারে এটা যে কেউ করতে পারেন। কারণ আইনে এমন কিছু নেই যে পুরোটা সময় ব্যাটসম্যানকে শুধু বাঁহাতি কিংবা শুধু ডানহাতি হয়েই ব্যাট চালাতে হবে। এতকিছুর ভিড়ে মাঠে ওয়ার্নারের উপস্থিতি, কার্যক্রম ছিল চোখে লাগার মতো। দারুণভাবে দলের দেশী-বিদেশী ক্রিকেটারদের সঙ্গে মিশে গেছেন তিনি। প্রথম ম্যাচ থেকেই সিলেট সিক্সার্স দলকে একই ছাতার তলে সংঘবদ্ধ করতে পেরেছেন। স্থানীয় ক্রিকেটারদের সামর্থ্যে বিশ্বাস রেখেছেন, বের করে আনার চেষ্টা করেছেন সেরা পারফর্মেন্সটি। কেউ ব্যর্থ হলেই তাকে পরের ম্যাচে ছিটকে ফেলেননি একাদশ থেকে। একই সঙ্গে অধিনায়ক হিসেবে ব্যক্তিগত পর্যায়েও বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের চেনার চেষ্টা করেছেন। সতীর্থ ও দলের বাকি সদস্যদের জন্য পারফর্মেন্স দিয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। ওয়ার্নার চোখ খুলে দিয়েছেন অনেক স্থানীয় ক্রিকেটারের। তাই তো টুর্নামেন্টের মাঝপথে দেশ ছাড়ার আগে কিছু উপদেশ দিয়ে গেছেন দলের প্রতি, আরেকটু গভীর দৃষ্টিতে দেখলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রতি। তবে দলকে নেতৃত্ব দেয়ার ধারাটা বাংলাদেশী ক্রিকেটের সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। ওয়ার্নার ইঙ্গিত দিয়েই বাংলাদেশ ক্রিকেটের সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিপিএলে নিজের শেষ ম্যাচ খেলার পর। তিনি বলেন, ‘সাধারণত ম্যাচের দিকে সচেতন মনোভাব থাকতে হয়। দলের সবাই সবসময় অধিনায়কের দিকে লক্ষ্য রাখে না। অবশ্য ছেলেরা শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করছে, এটা নিয়ে সংশয় নেই।’ এবারই প্রথম বিপিএল খেলতে পেরেও নিজেকে সৌভাগ্যবান দাবি করেছেন ওয়ার্নার। তিনি বলেন, ‘এখানে দর্শকরা চমৎকার। আমি বিসিবির কাছে খুবই কৃতজ্ঞ এখানে এসে খেলতে দেয়ার জন্য। দুর্দান্ত পরিবেশ। আশা করছি দল পরবর্তীতে আরও ম্যাচ জিতবে।’
×