ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গাইবান্ধায় ট্রাক্টর চলায় সড়ক বেহাল ॥ ভোগান্তি

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ২১ জানুয়ারি ২০১৯

 গাইবান্ধায় ট্রাক্টর চলায় সড়ক বেহাল ॥  ভোগান্তি

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা, ২০ জানুয়ারি ॥ কৃষিজমি চাষের জন্য ভারত থেকে আমদানি করা ইঞ্জিন দিয়ে গাইবান্ধায় মালামাল পরিবহনের জন্য স্থানীয়ভাবে প্রস্তুত করা ট্রাক্টর (কাঁকড়া) নামের এক ধরনের অবৈধ যান কাঁচা-পাকা রাস্তায় চলাচল করে নষ্ট করে ফেলছে সড়ক। নেই সরকারীভাবে এই যানের কোন অনুমোদন। চালকদের নেই প্রশিক্ষণ, নেই ড্রাইভিং লাইসেন্সও। তবুও এই অবৈধ যানটি শহর-গ্রামে চলছে বীরদর্পে। এই অবৈধ যানটি এতটাই বেপরোয়া গতিতে চলার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে অনেক। প্রতিবছরই জেলার বিভিন্নস্থানে এই গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মারা যাচ্ছে শিশু-নারীসহ সাধারণ মানুষ। সরজমিনে দেখা গেছে, ট্রাক্টর (স্থানীয়ভাবে কাঁকড়া নামে ডাকা হয়) নামক এই যানের ডালা (মালামাল রাখার স্থান) বেশি বড় হওয়ার কারণে বেশি পরিমাণে বালু, মাটি, ইটসহ বিভিন্ন ধরনের ভারি মালামাল পরিবহন করা হয়। এতে করে কাঁচা ও পাকা সড়ক নষ্ট হচ্ছে দ্রুত। এসব বালু ও মাটি পরিবহনের জন্য কেটে ফেলা হচ্ছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ফলে বর্ষা মৌসুমে এসব বাঁধ প্রবল পানির চাপে ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্নস্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে এসব কাঁকড়া চলাচলের কারণে চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে অনেক স্থান। যদি বর্ষাকালে এসব ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ ভেঙ্গে যায় তাহলে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবে সাধারণ মানুষসহ রাস্তা, কৃষি জমি, মৎস্য চাষ প্রকল্পসহ অনেক সম্পদ। আর এই ট্রাক্টর যারা চালায় তাদের অনেকেরই আবার বয়স ১৮ বছরের নিচে। জানা গেছে, অতিরিক্ত মুনাফার আশায় এসব ট্রাক্টরের (কাঁকড়া) মালিক ও চালকরা বেশি পরিমাণে মালামাল পরিবহন করে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। এতে করে ইঞ্জিনের উচ্চ শব্দে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। ব্যস্ত শহরের বিভিন্ন অলিতে-গলিতেও দ্রুত গতিতে চলাচল করে এসব ট্রাক্টর। এতে করে বাড়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। ট্রাক্টর চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব ট্রাক্টর (কাঁকড়া) দিয়ে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন কাজের বালু, মাটি ও ইট পরিবহন করা হয়। এই যানটির ধারণক্ষমতা বেশি হওয়ার কারণে মালামাল পরিবহনও করা হয় বেশি পরিমাণে। এতে করে মানুষ উপকৃতও হচ্ছে। যদি এই যানটির মালামাল রাখার স্থান (ডালা) ছোট হতো তাহলে কম পরিমাণে মালামাল পরিবহন করা হতো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের এক চাকরিজীবী বলেন, আগে ট্রলি নামের একটি ছোট ধারণক্ষমতার গাড়িতে করে বালু, মাটি ও ইট পরিবহন করা হতো। এতে করে রাস্তা তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হতো না। এসব ট্রলি ধীরে চলত বিধায় দুর্ঘটনায় প্রাণহানীও ঘটত না। কিন্তু বর্তমানে মালামাল পরিবহনের এই ট্রাক্টর (কাঁকড়া) নামক যানটি চরম বিপাকে ফেলেছে মানুষদের। কাঁকড়া নামক এই যানটির মালামাল ধারণক্ষমতা কমিয়ে দিতে ডালা ছোট করে তৈরি করতে হবে।
×