ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শান্ত ধোনিতে মুগ্ধ শাস্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ২০ জানুয়ারি ২০১৯

শান্ত ধোনিতে মুগ্ধ শাস্ত্রী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুনিয়া সফলদের জয়গান গায়। গত কিছুদিন নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছিলেন না মহেন্দ্র সিং ধোনি। দু’দুটি বিশ্বকাপ জয়ের নায়কের সব কৃতী ভুলে দুয়ো দেয়া শুরু করেছিলেন নিন্দুকেরা। অনেকে বলছিলেন, ধোনি আসলে ফুরিয়ে গেছেন। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে তাকে দলে রাখার খেসারত দিবে ভারত। অথচ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ে নায়ক সেই ধোনি। টানা তিন ওয়ানডেতে হাঁকিয়েছেন হাফ সেঞ্চুরি। উপহার দিয়েছেন ৫১, অপরাজিত ৫৫ ও ৮৭ রানের কার্যকর ইনিংস। পঞ্চম ভারতীয় হিসেবে ওয়ানডেতে ১০ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। সাবেক ‘ক্যাপ্টেন কুল’ কে সত্যিকারের শান্ত মেজাজের ক্রিকেটার এবং চলমান কিংবদন্তি বলে অভিহীত করেছেন বর্তমান কোচ রবি শাস্ত্রী। ধোনিকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন সাবেক তারকা অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীও। ধোনি বিশ্বের অন্যতম বুদ্ধিমান ও শান্ত মেজাজের ক্রিকেটার, মাস্টার ব্লাস্টার শচীন টেন্ডুলকরের প্রসঙ্গ টেনে শাস্ত্রী বলেন, ‘ধোনি কিংবদন্তি। ইতিহাসে ভারতের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে পরিচিত থাকবে সে। শচীনকেও মেজাজ হারাতে দেখেছি, ধোনিকে নয়। মাঠে এত শান্ত থাকতে কাউকে দেখিনি।’ তিনি আরও যোগ করেন,‘ ধোনির বিকল্প কেউ হতে পারে না। ধোনির মতো ক্রিকেটাররা ৩০-৪০ বছরে একবারই আসে। ও যেদিন চলে যাবে দলে এমন এক শূন্যতা তৈরি হবে যা পূরণ করাটা হবে খুবই কঠিন।’ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ধোনির ব্যাটিং গড়- ৫০-এর ওপরে। অথচ গেল বছরটা সবচেয়ে বাজে গেছে। ২০ ম্যাচের ১৩ ইনিংসে ২৫ গড়ে মাত্র ২৭৫ রান করেছেন। ছিল না কোন হাফ সেঞ্চুরি বা সেঞ্চুরি। তাই ওয়ানডে দলে ধোনির স্থান পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন সমালোচকরা। বিশ্বকাপের আগে ধোনির ব্যাপারে ভাবার আহ্বানও ছিল তাদের। কিন্তু ২০১৮ নতুন বছরের প্রথম ওয়ানডে সিরিজেই নিজের চেহারায় ফিরলেন ধোনি। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তিন ওয়ানডের সবক’টিতেই হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। তার ইনিংসগুলো ছিলো এমন- ৫১, অপরাজিত ৫৫ ও অপরাজিত ৮৭ রান। সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে চার নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে ৮৭ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলার পর এখন ধোনির প্রশংসা সর্বত্র। সাবেক অধিনায়ক সৌরভ বলেন, ‘ধোনি যেভাবে এই সিরিজে ব্যাট করেছে তা অনেকদিন পরে দেখা গেল। এ্যাডিলেড ওয়ানডের পর ওকে নিয়ে সমালোচনা বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমি জানতাম এই ইনিংসে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে ধোনি। ঠিক তাই-ই হয়েছে। পরের দু’ম্যাচে দলের জয়ে সবচেয়ে বেশি অবদান তারই। আর অস্ট্রেলিয়ার কঠিন কন্ডিশনে সিরিজ নির্ধারণী শেষ ওয়ানডেতে তার শান্ত মেজাজের ব্যাটিং আমাকে মুগ্ধ করেছে।’ সিডনিতে আগের ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর ধোনির মন্থর ব্যাটিংয়ের সমালোচনা ছিল সর্বত্র। তবে সেদিন দুরন্ত সেঞ্চুরি হাঁকানো রোহিত শর্মা ছিলেন সাবেক অধিনায়কের পাশে। বলেছিলেন, ধোনিকে চার নম্বরেই পছন্দ তার। অধিনায়ক বিরাট কোহলি আগে থেকেই চারে আমবাতি রাইডু আর পাঁচে ধোনিকে চাচ্ছিলেন। ধোনি নিজে বলেছেন, যে কোন পজিশনে খেলতেই প্রস্তুত তিনি। রোহিতের মতো সৌরভও চান অভিজ্ঞ আর শান্ত ধোনি একধাপ ওপরে উঠে এসে চারেই খেলুক, ‘আমার মনে হয় কেদার যাদব নামবে পাঁচ নম্বরে। আর ধোনি অবশ্যই চারে। এই পজিশনে নামার সুযোগ কাজে লাগিয়েছে ওরা। তাই বিরাট তিনে, ধোনি চারে, পাঁচে কেদার, ছয়ে দীনেশ কার্তিক। চার নম্বরে ধোনি নামলে ও ক্রিজে থিতু হওয়ার সময় পাবে। ইনিংস গড়তে পারবে নিজের মতো করে। ওয়ানডেতে এটাই হতে পার ভারতের সেরা কম্বিনেশন।’
×