ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভাল খেলেও চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে মুক্তিযোদ্ধার হার

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ২০ জানুয়ারি ২০১৯

ভাল খেলেও চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে মুক্তিযোদ্ধার হার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ খেললো মুক্তিযোদ্ধা, আর জিতলো চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড। হ্যাঁ, শনিবার যেসব ফুটবলপ্রেমী বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এসেছিলেন খেলা উপভোগ করতে, তারা তেমনটাই দেখেছেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রকে ১-০ গোলে হারিয়ে শুভসূচনা করেছে চট্টগ্রাম আবাহনী। ম্যাচের প্রথমার্ধে অবশ্য গোল করতে পারেনি কোন দলই। এদিকে একইদিনে ঢাকার বাইরে ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভুঁইয়া স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত নিজেদের হোম ম্যাচে জয় পেয়েছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে তারা হারায় ২-১ গোলে। সাইফের জাবেদ খান ও হাসান নয়ন এবং রহমতগঞ্জের ফয়সাল আহমেদ ১টি করে গোল করেন। চট্টগ্রাম আবাহনী-মুক্তি ম্যাচের প্রসঙ্গে ফেরা যাক। বন্দরনগরীর দল খ্যাত চট্টগ্রাম আবাহনী হচ্ছে গত লীগের রানার্সআপ দল। তবে তাদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল দ্য রেডস্ খ্যাত দু’বারের লীগ চ্যাম্পিয়ন মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু ভাগ্য সহায় না হওয়াতে জয়ের মুখ দেখতে পারেনি তারা। মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষক হিমেল ‘প্রো-এ্যাক্টিভ’ গোলরক্ষণের নির্দশন দেখান বেশ সাবলীলভাবে। আধুনিক ফুটবলে আধুনিক গোলকিপিং হচ্ছে প্রো-এ্যাক্টিভ গোলকিপিং। ডিফেন্সের পেছনে যে জায়গাটা ফাঁকা থাকে, সেই স্থানটা কভার করা এবং গোল রক্ষা করাই হচ্ছে প্রো-এ্যাক্টিভ গোলকিপিং। এ ধরনের গোলকিপারদের মুভমেন্ট ও ফুটওয়ার্ক অন্যদের চেয়ে ভিন্নধাঁচের। এরা বক্সে বল এলে সেটা বিপজ্জনক হবার আগেই অঙ্কুরেই বিনাশ করে দেন। আমাদের দেশে এ ধরনের গোলকিপারের বড়ই অভাব। এখনকার ফুটবলে প্রো-এ্যাক্টিভ গোলকিপারের খুবই গুরুত্ব। হিমেল এই কাজটাই সফলভাবে করার চেষ্টা করেছেন। আর তাকে এমন শিক্ষা দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষক কোচ নুরুজ্জামান নয়ন, যিনি জাতীয় দলেরও গোলরক্ষক কোচ। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে মুক্তিরা। তারা যেভাবে খেলেছে তাতে করে তিন পয়েন্ট না হোক অন্তত একটি পয়েন্ট পেতেই পারতো। যদিও শুরুর দিকে এগিয়ে যাবার সুযোগ পেয়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনীই। ৯ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের গড়ানো শট নেন ফাহিম মোর্শেদ। মুুক্তি গোলরক্ষক আরিফুজ্জামান হিমেল ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি। কিন্তু চট্টগ্রাম আবাহনীর কপাল মন্দ, বল বাঁ পোস্টে লেগে ফেরত আসে। গোল হজমের হাত থেকে বেঁচে গিয়ে ম্যাচে এগিয়ে নেবার চেষ্টা করতে থাকে আবদুল কাইয়ুম সেন্টুর শিষ্যরা। এক পর্যায়ে তারা চাপও সৃষ্টি করে প্রতিপক্ষের গোলমুখে। ২৩ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে আইভরি কোস্টের ফরোয়ার্ড বাল্লো ফেমোস্সার হেডে উড়ন্ত সেন্টার করেন মিডফিল্ডার সুজন বিশ্বাস। বল সরাসরি গিয়ে পড়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলরক্ষক মোহাম্মদ নেহালের হাতে। ৩২ মিনিটে বক্সের বেশ কাছেই ফ্রি কিক পায় মুক্তিযোদ্ধা। জাপানিজ মিডফিল্ডার ইউসুকে কাতুর ভাসিয়ে দেয়া বল বক্সে হেডে বিপদমুক্ত করেন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডাররা। দ্বিতীয়ার্ধে খেলা শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ফ্রি কিকের সুযোগ কাজে লাগিয়ে দর্শনীয় গোলে ম্যাচে এগিয়ে যায় চট্টলার দলটি। ম্যাচের সময় তখন ৫০ মিনিট। বক্সের বেশ কাছেই ফ্রি কিক পায় চট্টগ্রাম আবাহনী। বাঁপ্রান্ত থেকে নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড মাগালান আওয়ালা মুক্তির রক্ষণ দেয়াল টপকে বল পাঠান বক্সে। তার ডানপায়ের বাঁকানো শটটি প্রতিপক্ষের গিনি ডিফেন্ডার ইউনেসা কামারার পায়ে লেগে বল গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধার জালে জড়িয়ে যায় (১-০)। ৬৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে বাল্লো ফেমোস্সার শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক নেহাল। ৮৪ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে আবারও জোরালো শট নেন আইভরি কোস্টের এই ফুটবলার। কিন্তু বল সাইডপোস্টে লেগে ফেরত আসায় আবারও গোলবঞ্চিত হয় মুক্তি শিবির। তাদের শেষ প্রচেষ্টা পর্যবসিত হয় ব্যর্থতায়। রেফারি এম জেড এফ নাহিদ খেলা শেষের বাঁশি বাজালে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে চট্টগ্রাম আবাহনী। আর হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে মুক্তিযোদ্ধা।
×