ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পঞ্চম দিনেও খোঁজ মেলেনি ডুবে যাওয়া ট্রলার ও ২০ শ্রমিকেরু

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ২০ জানুয়ারি ২০১৯

পঞ্চম দিনেও খোঁজ মেলেনি ডুবে যাওয়া ট্রলার ও ২০ শ্রমিকেরু

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ পাঁচ দিনেও সন্ধান মেলেনি মেঘনায় তেলবাহী জাহাজের ধাক্কায় মাটি ভর্তি ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ ২০ শ্রমিকের। অত্যাধুনিক সব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেও সন্ধান পাওয়া যায়নি ট্রলারটির। এটির সন্ধানে উদ্ধার অভিযান শনিবার বিকেল পাঁচটায় সমাপ্তের মধ্য দিয়ে মুন্সীগঞ্জ অংশের উদ্ধার সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রবিবার চাঁদপুরের ষাটনলের মেঘনায় অভিযান চলবে। এদিকে নদীজুড়ে নৌবাহিনীর সদস্যরা জাহাজ দিয়ে রশি বেঁধে র‌্যাকি টেনেও কোন সন্ধান পায়নি ট্রলারটির। গত চারদিনে মুন্সীগঞ্জের মেঘনার ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে উদ্ধার অভিযান চালানো হলেও কোন নিখোঁজ ব্যক্তি বা ট্রলারটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা জানান, উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’ ও নৌযান শনাক্তকারী বিশেষ সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএ ও নৌবাহিনীর সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সাইড স্ক্যান সোনারের মাধ্যমে ট্রলারটির অবস্থান শনাক্তের চেষ্টাও চলছে। নৌবাহিনীর একটি, বিআইডব্লিউটিএর দুটি ও ফায়ার সার্র্ভিসের তিনটি ইউনিটের সঙ্গে যৌথভাবে উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে জেলা প্রশাসন, নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা। ট্রলার চালকের অনুপস্থিতি এবং ঘাতক তেলবাহী জাহাজটিকে শনাক্ত করা না যাওয়ায় ট্রলারডুবির স্থানও নিশ্চিত করতে পারছে না উদ্ধারকারীরা। সোমবার কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ট্রলারে মাটি তুলে ৩৪ শ্রমিক নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বক্তাবলী নিয়ে যাচ্ছিল। তেলবাহী একটি জাহাজ ট্রলারটিকে ধাক্কা দিয়ে চাঁদপুরের দিকে চলে যায়। এতে ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে ১৪ জন সাঁতরে প্রাণে বাঁচলেও ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা ২০ শ্রমিকের ভাগ্যে কি হয়েছে এখনও জানা যায়নি। নিখোঁজ শ্রমিকদের ১৮ জনের বাড়িই পাবনা জেলায়। সোমবার রাতে ট্রলারডুবি হলেও উদ্ধার অভিযান শুরু হয় বুধবার সকালে। গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান সাদিক জানান, চতুর্থদিনের মতো শনিবার সকাল থেকে বিআইডব্লিউটিএ ও নৌবাহিনীর এক্সপার্ট টিম পুরো মেঘনা নদীতে উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে। তিনি আরও জানান, নিদির্ষ্ট স্থান না জানায় পুরো মেঘনা নদী চষে বেড়ানো সম্ভব নয়। তারপর কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে খোঁজা হয়েছে। কিন্তু কোন সন্ধান মেলেনি। এজন্য ট্রলার চালককে আটক বা ঘটনাস্থলে হাজির করা দরকার। মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার হাজী শুক্কুর হালদারকান্দির মৃত করিম বেপারীর ছেলে ট্রলারের চালক হাবিব বেপারী দুর্ঘটনার পর থেকেই পলাতক। গজারিয়া থানার ওসি হারুন-উর-রশিদ জানান, বেআইনীভাবে বেপরোয়া গতিতে নৌযান চালিয়ে প্রাণহানি ও দুর্ঘটনা ঘটনানোর দায়ে শুক্রবার রাতে বেঁচে যাওয়া ট্রলারের যাত্রী শাহআলম বাদী হয়ে ট্রলারচালক হাবিব বেপারী, ট্রলারের মালিক জাকির দেওয়ান ও তেলবাহী জাহাজের চালককে (অজ্ঞাতনামা) আসামি করে গজারিয়া থানায় একটি মামলা করেছেন। শ্রমিক লীগ নেতারা খোঁজ না নিয়ে বাণিজ্যমেলায় বেড়াচ্ছে ॥ ট্রলারডুবির পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও মুন্সীগঞ্জের কোন শ্রমিক নেতাকে দেখা যায়নি শোকাহত শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে। স্বজনদের হারিয়ে মেঘনা পাড়ে যখন চলছে শোকের মাতম, তখন মুন্সীগঞ্জ শ্রমিক লীগের সভাপতি একেএম দেলোয়ার হোসেন ঘুরে বেড়াচ্ছেন ঢাকার বাণিজ্যমেলায়। এমন কি শ্রমিক লীগের কোন নেতাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি শোকাহত এই শ্রমিকদের পাশে। বরং প্রশাসনই এদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। শ্রমিক লীগের এরকম ভূমিকায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- তাহলে এই শ্রমিক নেতাদের কাজ কী?
×