ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পোল্যান্ড সম্মেলন নিয়ে প্রশ্ন

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২০ জানুয়ারি ২০১৯

পোল্যান্ড সম্মেলন নিয়ে প্রশ্ন

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো পোল্যন্ডে অনুষ্ঠেয় মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ১৩-১৪ ফেব্রুয়ারি পোল্যান্ডে এ সম্মেলন হবে। ধারণা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র একে ইরানের ওপর চাপ বাড়ানোর একটি উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। আল-জাজিরা। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও শুক্রবার কায়রোতে সম্মেলনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেন। ইইউ কূটনীতিকরা বলছেন, অল্প সময়ের নোটিসে সম্মেলনটি আয়োজন করা হয়েছে। তাছাড়া এতে ইরানকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না বলেই মনে হচ্ছে। ইইউ পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ফেদেরিকো মোগেরিনি সম্মেলনে যোগ দেবেন না। নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে একজন কূটনীতিক বলেছেন, সম্মেলনে আলোচ্য বিষয় নিয়ে মন্ত্রীদের এখনও অবহিত করা হযনি। পম্পেও মধ্যপ্রাচ্য সফরকালে শুক্রবার ওই সম্মেলনের কথা ঘোষণা করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের আকস্মিক ঘোষণা দেয়ার পর পম্পেও মধ্যপ্রাচ্য সফরে যান। সিরিয়া থেকে হঠাৎ সৈন্য প্রত্যাহারের ফলে ওই অঞ্চলে ইরানের প্রভাব বেড়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কা তৈরি হওয়া মিত্র দেশগুলোর উদ্বেগ দূর করতে পম্পেও এ সফরে যান। পম্পেও বলেন, ‘অনেক দেশকে আমরা এ সম্মেলেনে আনতে পারব বলে আমি আশাবাদী। এতে মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা, শান্তি, মুক্তি ও নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। এর মধ্য দিয়ে ইরানের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নষ্টের চেষ্টা রোধ করা যাবে।’ তিনি জানান, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে এ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ৭০টির মতো দেশকে এতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইরান এ সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। গত সপ্তাহে পোলিশ চার্জ দ্য আফেয়ার্স উজসিয়েচ উনলটের প্রতি সমন জারি করে তেহরান। সরকারী বার্তাসংস্থা জানায়, পোল্যান্ডের এ ধরনের ‘শত্রুতামূলক’ আচরণ করা উচিত হবে না, এ কথা ওই দূতকে বলা হয়েছে। এরপর তিনি তেহরানের কাছে ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জরিফ শুক্রবার টুইটে বলেন, এ সম্মেলন আয়োজন পোল্যান্ডের জন্য লজ্জাজনক। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় ইরানীরা পোলিশদের জীবন রক্ষা করেছিল। ওই যুদ্ধ চলাকালে ইরান সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে শ্রম শিবির ফেরত হাজার হাজার পোলিশ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল। শরণার্থীদের কেউ কেউ পরে ইসরাইল, নিউজিল্যান্ড ও কিছু আফ্রিকান দেশে চলে যায়। অনেকে আবার ইরানেই থেকে যায়। তেহরান ও ওয়ারশোর মধ্যে তুলনামূলক উষ্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ক্রমাম্বয়ে বাড়ছে। শনিবার পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাক জাপুটোভিচ বলেন, এই সম্মেলন ইরান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আরও ঘনিষ্ঠ অবস্থানে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে একটি প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। তিনি ইরানের পরমাণু চুক্তির প্রতি ইইউ’র অবস্থানের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, কেবল একটি চুক্তি দিয়ে ইরানকে আঞ্চলিক ‘অস্থিতিশীলতা ’ তৈরির চেষ্টা রোধ করা সম্ভব নয়। ট্রাম্প প্রশাসন গত বছর মে মাসে একতরফাভাবে ইরান ও ছয়জাতিক চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। এরপর থেকে ট্রাম্প তেহরানের ওপর বিভিন্ন সময় চাপ দিয়ে চলেছেন। তিনি ইরানকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রতি সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেন। এদিকে ইরানের প্রেস টিভি জানিয়েছে ইইউ এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যে তারা ইরানবিরোধী জোটে যোগ দেবে না।
×