ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে অপরাধে জড়াচ্ছে প্রবাসীদের আত্মীয়স্বজন

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯

 চট্টগ্রামে অপরাধে জড়াচ্ছে প্রবাসীদের আত্মীয়স্বজন

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ আপন বোনের কাছে পাওনা মাত্র ২৫ হাজার টাকা ফেরত চাওয়ায় ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ইন্ধন যুগিয়েছে আরেক বোন। আপন তিন বোনের পরিবারের দ্বন্দ্বের জের ধরে এক বোনের ছেলেই অপহরণ করে আরেক খালাত ভাইকে। খেলনা পিস্তল ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার নগরীর হকার্স মার্কেট থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টার ঘটনায় অপহরণকারী খালাত ভাইকেও গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এই মামলায় আসামির আরেক খালা নাসিমাকেও খুঁজছে পুলিশ। সাতকানিয়া থানার জিডি থেকে জানা গেছে, গত ১০ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে সাতকানিয়ার করাইয়া নগর এলাকার ফৌজুল কবিরের ছেলে সোবহান সাকিব (১৭) অপহরণের ঘটনা ঘটে। নিজ বাসা হতে বিজিসি ট্রাস্ট কলেজে যাওয়ার পথে ঠাকুরদীঘি মেইন রোড হতে অস্ত্রের মুখে তার আপন খালাত ভাই মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জয় তাকে অপহরণ করে। এ সময় আরও ৪/৫ জন সহযোগী ছিল। এ ঘটনায় সাতকানিয়া থানায় একটি জিডি দায়েরের পর দুদিন পার হলেও পুলিশ কোন কূলকিনারা করতে না পারায় সাকিবের বাবা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (পশ্চিম) সাহায্য কামনা করেন। ফলে গত ১৩ জানুয়ারি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লোহাগাড়ার বটতলী এলাকার এম কে শপিং সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করে গোয়েন্দা বিভাগ। ভবনের তৃতীয় তলায় থাকা এম কে বোর্ডিং নামের আবাসিক হোটেলে অভিযান চালানো হয়। ৩০৪ নম্বর কক্ষ হতে ভিকটিম মোঃ সাদেক সোবহান সাকিব (১৭) কে উদ্ধারের সময় আসামি মোহাম্মদ হোসেনকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত হোসেন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে আর জাহাঙ্গীর মিলে সাকিবকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। মুক্তিপণ আদায়ের পর সাকিবকে মেরে ফেলা হতো। হোসেনের সূত্র ধরে জাহাঙ্গীরের স্ত্রীর মাধ্যমে গত মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয় নগরীর হকার্স মার্কেট এলাকা থেকে। গ্রেফতারকৃত আসামি জাহাঙ্গীর জানিয়েছে, মূলত সাকিবের মা তার আপন বোন নাসিমার কাছে ২৫ হাজার টাকা পেতেন। এই টাকা নাসিমা না দিতেই তার অপর বোনের ছেলে জাহাঙ্গীরকে অপহরণ পরিকল্পনা করতে বলে। এছাড়াও সাকিবের বাবা একবার গাড়ি কেনার জন্য জাহাঙ্গীরকে বলেছিল। সাকিবের বিদেশ ফেরত বাবার কাছে অনেক টাকা রয়েছে এমন তথ্য দিয়েছিল খালা নাসিমা। কারণ সাকিবের বাবা ফৌজুল কবির স্থানীয় একটি ইটভাঁটায় অনেক টাকা বিনিয়োগ করেছেন। অনেক টাকা পাওয়ার লোভে জাহাঙ্গীরও নাসিমা খালার কথায় রাজি হয়ে যায়। সে অনুযায়ী অপহরণ পরিকল্পনা অনুযায়ী সাকিবকে অপহরণ করা হয়। দাবিকৃত ৫০ লাখ টাকা না দিলে আসামিরা ভিকটিমকে হত্যা করার হুমকি প্রদান করে। ভিকটিমের পিতা উক্ত বিষয়ে সাতকানিয়া থানায় জিডি করেন। এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম জানান, কৌশলে ভিকটিমকে লোহাগাড়া থানাধীন বটতলীস্থ এম কে শপিং সেন্টারের তয় তলা এম কে বোর্ডিং আবাসিক হোটেলের ৩০৪ নম্বর কক্ষ হতে উদ্ধার করা হয়। এ সময় অপহরণকারী চক্রের সদস্য হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।
×