ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার অসুস্থতা আরও অবনতির দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে ॥ রিজভীর অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ১৮ জানুয়ারি ২০১৯

খালেদার অসুস্থতা আরও অবনতির দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে ॥ রিজভীর অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অসুস্থতার কারণে বুধবার আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন নজীরবিহীনভাবে তাকে কারাগারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। তার অসুস্থতাকে আরও অবনতির দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকিয়ে রাখার পেছনে ব্যক্তির প্রতিহিংসা পূরণের সাধ মেটানো হচ্ছে। এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তার সুচিকিৎসার জন্য পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে কোন আবেদনই কারা কর্তৃপক্ষ রক্ষা করেনি। তিনি বলেন, চিকিৎসা শেষ না হতেই হাসপাতাল থেকে তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে কারাগারে। অবিলম্বে বিশেষায়িত হাসপাতালে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। রুহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা সত্ত্বেও সেটিকে আমলে না নিয়ে বারবার তাকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য বাধ্য করা হচ্ছে। হয়রানি ও শারীরিকভাবে কষ্ট দেয়ার জন্যই সাজানো মামলায় খালেদা জিয়াকে ঘন ঘন আদালতে উপস্থিত করা হচ্ছে। তার জীবন এখন গভীর সঙ্কটের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। রিজভী বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে টিআইবির রিপোর্টে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের আঁতে ঘা লেগেছে। সরকারের নিয়ন্ত্রণের ঘন অন্ধকার ভেদ করে টিআইবি রিপোর্টে ভোট ডাকাতির সত্য প্রকাশ হওয়াতে সরকারের মন্ত্রীরা ও নির্বাচন কমিশন মুখ লুকাতে পারছে না। সেজন্য আর্তচিৎকার করে সত্য লুকানোর চেষ্টা করলেও কোন লাভ নেই। মানুষ যা জানার নির্বাচনের আগের দিন রাত থেকেই জেনেছে। রিজভী বলেন, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিভিন্ন সংগঠন নির্বাচনে ভোট ডাকাতি নিয়ে প্রতিবেদন ও মন্তব্য করেছে। বিশ্বের নানা গণতান্ত্রিক দেশ বলেছে এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ। তারা এই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং তদন্ত দাবি করেছে। বিশ্ববাসী এই নির্বাচনকে ইতিহাসের নিকৃষ্ট নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করেছে। রিজভী বলেন, ক্ষমতা চিরদিনের জন্য কোলবালিশের মতো আঁকড়ে ধরে রেখে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্যই ভোটারদের ভোট দেয়া থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। গণমাধ্যমকে সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির মধ্যে রেখে, বিরোধী দলকে কারাগারে ঢুকিয়ে, ভোটারদের আতঙ্কের মধ্যে রেখে, নির্বাচন কমিশনে মোসাহেবদের বসিয়ে নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করে পার পাওয়া যাবে না। দেশের মানুষ জীবন উৎসর্গ করে এই দেশ স্বাধীন করেছে, তারা প্রয়োজন হলে জীবন দিয়ে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনবে। সংবাদ সম্মেলনে ১৯ জানুয়ারি প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২ দিনব্যাপী কর্মসূচী ঘোষণা করেন রুহুল কবির রিজভী। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে আজ ১৮ জানুয়ারি বেলা আড়াইটায় সুপ্রীমকোর্ট বার অডিটোরিয়ামে বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা। আগামীকাল ১৯ জানুয়ারি সকালে ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির পতাকা উত্তোলন এবং সকাল ১০টায় জিয়াউর রহমানের মাজারে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পমাল্য অর্পণ। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে ইতোমধ্যেই পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে এবং ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে বলে রিজভী জানান। এর বাইরে সারাদেশের প্রতি জেলা-উপজেলায় যথাযোগ্য মর্যাদায় কর্মসূচী পালন করা হবে বলে তিনি জানান। এ জন্য কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, অধ্যাপক সাহিদা রফিক, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম, দলের কেন্দ্রীয় নেতা শামীমুর রহমান শামীম, নেওয়াজ হালিমা আরলি, বিলকিস ইসলাম শিরিন প্রমুখ।
×