স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) উদ্যোগে রাজধানীর মতিঝিলে বিসিক ভবনে গত ১৩ জানুয়ারি রবিবার থেকে পাঁচ দিনব্যাপী হেমন্তমেলা এবং কারুশিল্প প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার হেমন্তমেলা এবং কারুশিল্প প্রদর্শনীর শেষ দিন।
হেমন্তমেলা-১৪২৫ এবং ৬৩তম ত্রৈমাসিক কারুশিল্প প্রদর্শনী উপলক্ষে মেলায় ৬০টি স্টল স্থান পেয়েছে। স্টলগুলোতে হরেক রকমের পোশাক, নকশীকাঁথা, তাঁত, জামদানি শাড়ি, পাটজাত হস্তশিল্প, মধু এবং বিভিন্ন ধরনের খাদ্যসামগ্রী বিক্রি ও প্রদর্শনী হচ্ছে।
বিসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, মেলা এবং কারুশিল্প প্রদর্শনী প্রতি তিন মাস পর পর অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় কেউ ইচ্ছা করলেই স্টল দিতে পারে, সেজন্য তাকে পাঁচ দিনে মাত্র ১৮০০ টাকা মেলা কর্তৃপক্ষকে দিতে হয়। সে আরও বলেন, আমরা নতুন উদ্যোগক্তা তৈরি করতে ১২টি ট্রেডে দুই মাস দীর্ঘমেয়াদী কুটির ও হস্তশিল্পের ওপর প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। এতে করে প্রচুর নতুন নতুন উদ্যোগক্তা সৃষ্টি হচ্ছে। মূলত আমরা বেকারদের স্বাবলম্বী করতে প্রশিক্ষণ এবং এই হস্ত ও কুটির মেলার আয়োজন করে থাকি।
মেলায় বহু নতুন উদ্যোগতাকে দেখতে পাওয়া যায়। তারা বেসিক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন রকমের হস্ত এবং কুটির শিল্পের পণ্যে তৈরি করেছে। এসব পণ্যে বিক্রির মাধ্যমে আজ তারা স্বাবলম্বী।
মেলায় স্বপ্নরূপ বুটিকসের কর্ণধার আইরিন সুলতানা কেয়া জনকণ্ঠে বলেন, আমি ২০১৩ সালে বেসিক থেকে তাঁত শিল্পের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার পর আমার নিজ উদ্যোগে এই তাঁত শিল্পের বুটিকস্ গড়ে তুলি। বিগত পাঁচ বছর ধরে আমি এই ব্যবসা সফলতার সঙ্গে অতিবাহিত করছি। তিনি আরও বলেন, আমাকে সফল উদ্যোক্তা হতে বিসিকের ভূমিকা অপরিসীম, কারণ বেসিক থেকে যদি আমি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে না পারতাম তাহলে আজ আমি উদ্যোক্তা হতে পারতাম না। আমি ৫ বছর ধরে সর্বদা বেসিকের মেলায় অংশগ্রহণ করে থাকি।
এইবারের হেমন্তমেলা সম্পর্কে কেয়া বলেন, এইবারের মেলাতে বিক্রি কিছুটা কম। তবে মেলার শেষ দিন বিক্রি ভাল হবে বলে আমি আশা করছি। বেসিকের মেলার পরিবেশ সর্বদায় ভাল হয়, এইবারেও মেলার পরিবেশও সুন্দর। মেলায় পর্যাপ্ত দর্শনার্থীর অভাব দেখা যায়। বেসিকের বিগত মেলার চেয়ে এইবারে দর্শনার্থী কিছুটা কম। বিগত মেলায় বেসিকের প্রাঙ্গণ দর্শনার্থী দিয়ে পরিপূর্ণ থাকত, কিন্তু এবার মেলার প্রাঙ্গণ কিছুটা ফাঁকা।
পুরো পরিবার নিয়ে হেমন্তমেলায় ও কারুশিল্প প্রদর্শনীতে ঘুরতে আসা মাসুদ আলম জনকণ্ঠকে বলেন, আমি প্রতিবার মেলাতে পুরো পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে আসি। হস্ত ও কুটির শিল্পের সঙ্গে আমার পরিবারকে পরিচিত করাতে এই মেলাতে আসার অন্যতম কারণ। মেলার পরিবেশ খুব সুন্দর, তাই খুব ভালভাবেই এই শিল্পের সঙ্গে আমার পরিবারকে পরিচিত করাতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, এইবারে মেলার দর্শনার্থী কম হওয়ার পিছনে বাণিজ্যমেলার একটি কারণ রয়েছে। এই ছাড়াও প্রচারের অভাব এই বারের মেলায় দর্শনার্থী কম হওয়ার আরেকটি অন্যতম কারণ বলে আমি মনে করি। সরকারী মুখ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতের উন্নয়ন ও বিকাশে বিসিক দীর্ঘদিন ধরে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। এই শিল্পের পণ্যে এর ব্যাপক প্রসার, প্রচার, গবেষণা, উন্নয়ন ও বিপণের লক্ষ্যে বিসিকের নকশা কেন্দ্র ১৯৬০ সালের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এই প্রতিষ্ঠান কাজ করে আসছে।