ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চুক্তিহীন ব্রেক্সিট হলে কোন প্রস্তুতি ছাড়াই সম্পর্ক ছেদ করতে হবে

ব্রেক্সিট ভোটের পর কি ঘটতে পারে ব্রিটেনে

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১৭ জানুয়ারি ২০১৯

ব্রেক্সিট ভোটের পর কি ঘটতে পারে ব্রিটেনে

ব্রিটেনের পার্লামেন্টে ২৩০ ভোটের বিশাল ব্যবধানে প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মের ব্রেক্সিট চুক্তি নাকচ হওয়ার পর এখন কি হতে যাচ্ছে দেশটির জন্য ও তার নাগরিকদের জীবনে- সেই প্রশ্নটিই ঘুরছে সবার মাথায়। ব্রেক্সিটের সময় ঘনিয়ে আসছে। ২৯ মার্চের মধ্যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার কথা। হাতে আছে আর মাত্র ৭৩ দিন। বিবিসি। এই চুক্তিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- চুক্তি ছাড়া ইইউ ছেড়ে গেলে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে বসবাসরত ব্রিটিশ নাগরিকদের কী হবে? বের হওয়ার জন্য কত অর্থ ইইউর কাছে খোয়াতে হবে? ইইউভুক্ত দেশগুলোতে ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ও কোম্পানিগুলো কি ধরনের সুবিধা পাবে? ব্রিটেন তাদের জন্য একটি সুবিধাজনক চুক্তি করতে চাইছে। কোন চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট হওয়ার অর্থ হলো ব্রিটেনকে রাতারাতি বিচ্ছেদের প্রস্তুতির জন্য কোন সময়সীমা ছাড়াই সম্পর্ক ছেদ করতে হবে। কোন খাতে কি ধরনের প্রভাব পড়বে আর তা মোকাবেলায় কি করতে হবে- সেটি বোঝার কোন সময় পাবে না ব্রিটেন। আর এতে যারা ভুক্তভোগী হবে তাদের সহায়তার জন্য কি ব্যবস্থা নেয়া দরকার বা তাদের নতুন ব্যবস্থার জন্য কিছু সময় দেয়ার সুযোগ থাকবে না। সবকিছু গুটিয়ে রাতারাতি সরে আসতে হবে। ইইউ সদস্য দেশগুলোতে যারা ব্যবসা করছেন তাদের জন্য বাড়তি আমদানি ও রফতানি কর আরোপ হবে। কৃষকদের জন্য কর ৬০ শতাংশ হতে পারে। তার মানে তাদের কাজের খরচ বাড়বে আর এর ফলে পণ্য বা সেবার জন্য ব্রিটিশদের বেশি অর্থ দিতে হবে। ব্রিটেন যেসব বাণিজ্য চুক্তির আওতায় ইইউ দেশগুলোতে নানা ধরনের সুবিধা পাচ্ছিল সব সুবিধা সে হারাবে। ইইউ দেশগুলোর সবার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে তাকে আবার দেন-দরবার করে নতুন চুক্তি করতে হবে। সেগুলো করতে হবে আলাদা আলাদা করে। ব্রেক্সিটের বিপক্ষের অনেকেই মনে করেন হঠাৎ এভাবে বের হয়ে গেলে ব্রিটেনে বিভিন্ন পণ্যের সঙ্কট দেখা দেবে। পণ্যের দামও বাড়বে যেগুলো কম খরচে ইইউভুক্ত দেশগুলো থেকে পেত। অভিবাসীদের ওপর পড়বে নানা প্রভাব। অভিবাসন ইস্যুতে নিজের মতো আইন করতে পারবে ব্রিটেন। এতদিন অভিবাসন বিষয়ে ইইউর যেসব নীতিমালা ছিল সেগুলো মানতে হতো তাকে। ব্রিটেনে কর্মরত ইউরোপের অন্য দেশের অভিবাসীদের সম্পর্কে বিরূপ মনোভাবের কারণেই অনেকে ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। ওইসব নাগরিক তাদের কাজ দখল করে নিচ্ছে বলে তাদের অনেকেই অপছন্দ করেন। কিন্তু ব্রিটিশরাও ইইউভুক্ত দেশে কাজ করছেন। তাদের জন্যেও তৈরি হবে অনিশ্চয়তা। দুই দেশে যাতায়াত ভিসা আর কাজের অনুমতি (ওয়ার্ক পারমিট) পাওয়ার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ হয়ে যাবে। হঠাৎ করে বদলে যাবে বহু অভিবাসীর জীবন। আবার ব্রিটিশদের অনেকেই সেখানে বসবাসরত অন্য দেশের অভিবাসীবিরোধী। লন্ডনের বার্কিং এ্যান্ড ডাগেনহ্যাম কাউন্সিলের কাউন্সিলর ও লন্ডনে বাঙালী কমিউনিটির একজন নেতা সৈয়দ ফিরোজ গনি বলছেন, একটা অনিশ্চয়তা রয়েছে সেখানকার সব অভিবাসীদের ওপরও। ১৯৭৩ সালে ব্রিটেন ইইউর সদস্য হয়েছিল। ২০১৬ সালের জুন মাসে ঐতিহাসিক একটি গণভোটে সেদেশের মানুষ এটি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়। এরপর থেকেই দেশটির রাজনীতিবিদরা বিতর্ক করে চলেছেন ব্রেক্সিট কিভাবে হবে। ব্রিটেন ইইউর সঙ্গে কি ধরনের বিচ্ছেদে যাবে।
×