ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জুলহাস মান্নান হত্যার আসামি আসাদুল্লাহ অবশেষে গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৭ জানুয়ারি ২০১৯

জুলহাস মান্নান হত্যার আসামি আসাদুল্লাহ অবশেষে গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ’১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগান লেক সার্কাস রোডের বাসায় ঢুকে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির খালাত ভাই ইউএসএআইডি কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু থিয়েটারকর্মী মাহবুব তনয়কে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি অংশ নেয়া জঙ্গী শিবিরের সাবেক সাথী আসাদুল্লাহ অবশেষে গ্রেফতার হয়েছে। হত্যাকা-ের পর বিয়ে করে সংসারী হয়ে লেবাস বদলে গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিতে চেয়েছিল আসাদুল্লাহ। তাকে ৩ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত পুরস্কার ঘোষিত জঙ্গী মেজর জিয়ার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ও তার নির্দেশ পেয়ে এ হত্যাকা-টি ঘটায় আনসার আল ইসলামের জঙ্গীরা। বুধবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ডিআইজি মনিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে টঙ্গী থেকে আসাদুল্লাহ ওরফে ফখরুল ওরফে ফয়সাল ওরফে জাকির ওরফে সাদিককে (২৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। সে হত্যাকা-ে সরাসরি অংশ নিয়েছিল। সে সময় জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু তনয় হত্যার দায় স্বীকার করে জঙ্গী সংগঠন আনসার আল-ইসলাম। প্রথমে ডিবি পুলিশ মামলার তদন্ত করে। বর্তমানে কাউন্টার টেররিজম (সিটি) বিভাগ মামলাটির তদন্ত করছে। তদন্তে ওই হত্যাকা-ের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে ১৩ জনের জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে। যার মধ্যে সাত জন সরাসরি অংশ নিয়েছিল। ওই সাত জনই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। সাত জনের পাঁচজন সরাসরি হত্যায় অংশ নেয়। অন্য দুজন গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য ছিল। হত্যাকা-ে সরাসরি জড়িতদের চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চারজনের মধ্যে আসাদুল্লাহ ও আরাফাত অন্যতম। আরাফাত আগেই গ্রেফতার হয়েছে। বাকি দুজন জুবায়ের ও সায়মন, গোয়েন্দা শাখার সদস্য। আগে আটক তিন জনই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। আটক আসাদুল্লাহর বাবার নাম এমদাদুল। তিনি স্থানীয় জামায়াতের ‘রোকন’। আসাদুল্লাহর মা রিজিয়া বেগম। তাদের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুরে। আসাদুল্লাহ ঝিনাইদহ দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র ছিল। পরে সে মাদ্রাসা থেকে যশোর পলিটেকনিকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয়। সে যশোরের নওয়াপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সাথী ছিল। ’১৪ সালে জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলামের সঙ্গে জড়ায়। সে পুরস্কার ঘোষিত জঙ্গী চাকরিচ্যুত মেজর জিয়ার কাছ থেকে সামরিক প্রশিক্ষণ নেয়। তার নির্দেশ মোতাবেকই এই হত্যাকা- ঘটায়। হত্যাকা- ঘটাতে তারা টঙ্গীতে আস্তানা গড়ে। সেখান থেকে এসেই তারা হত্যাকা-টি ঘটায়। হত্যার পর তারা যে যার যার মতো আত্মগোপনে চলে যায়। আসাদুল্লাহ বাড্ডা, আশকোনা ও গাজীপুরের বিভিন্ন আস্তানা গড়ে তুলেছিল। ’১৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বাড্ডার সাঁতারকুলের এক বাসায় গোপন বৈঠকের সময় অভিযানকালে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক বাহাউদ্দিন ফারুকীকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে তার কাছ থেকে পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় আটক আসাদুল্লাহ। পিস্তলটি উদ্ধারের সম্ভাবনা আছে। ঘটনার পর পরই আটকদের তথ্যমতে, মোহাম্মদপুর থেকে জঙ্গীদের বিপুল বিস্ফোরক উদ্ধার হয়। সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান, সিটির উপকমিশনার মহিবুল ইসলাম খান, রাকিবুল হাসান, প্রলয় কুমার জোয়ার্দারসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×