ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আর বাধা নেই ঢাকা উত্তর সিটি ভোটে

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১৭ জানুয়ারি ২০১৯

আর বাধা নেই ঢাকা উত্তর সিটি ভোটে

শাহীন রহমান ॥ টানা এক বছর স্থগিতাদেশ থাকার পর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনের ওপর থেকে অবশেষে বাধা কেটে গেছে। এছাড়া দুই সিটির সম্প্রসারিত ৩৬ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদেও নির্বাচনে এখন আর বাধা নেই। এদিকে বাধা কেটে যাওয়ায় উত্তরের মেয়র পদে পুনরায় ভোটের আয়োজন করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মার্চে উপজেলা নির্বাচনের মধ্যেই এই নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে। জানালেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। বুধবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপ-নির্বাচন ও সম্প্রসারিত অংশের কাউন্সিলর নির্বাচন নিয়ে রুল খারিজ করে দেয় হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। মূলত এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের ওপর শুনানি চলাচালে রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী না থাকায় এই রুল খারিজ করে দেয় আদালত। এতে এ নির্বাচনের ওপর হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশ ওঠে গেল। নতুন করে ভোট আয়োজনের আইনী কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার রুল খারিজের এ আদেশ দেয়। রিটকারীর পক্ষে আইনজীবী আহসান হাবিব ভুইয়াও জানান রিটকারীরা এই মামলা চালাতে আর অগ্রহী নন। ’১৮ সালের ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে উপ-নির্বাচন এবং দুটির সিটির সম্প্রসারিত ৩৬ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের ওপর স্থাগিতাদেশ দেয় আদালত। এর আগে ওই বছরের ৯ জানুয়ারি এই নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী দুই সিটিতে ভোট গ্রহণের কথা ছিল ওই বছরের ২৬ জানুয়ারি। তফসিল ঘোষণার ৮ দিনের মাথায় আদালতের স্থগিতাদেশে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে দুই সিটির ওপর থেকে নির্বাচনের বাধা কেটে যাওয়ায় এখন নির্বাচনের দিকে নজর দিয়েছে ইসি। ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে উপ-নির্বাচন এবং দুই সিটির সম্প্রসারিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচনও তাড়াতাড়ি হবে বলে জানায় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন ঘিরে দ্রুতই কমিশনের বৈঠক হবে এবং নির্বাচনের জন্য পুনর্তফসিল করা হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা এ বিষয়ে বুধবার বিকেলে সাংবাদিকদের জনান, মার্চেই ঢাকা উত্তরের (ডিএনসিসি) নির্বাচনের ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে কমিশনের সঙ্গে বসতে হবে। আমরা এই নির্বাচন তাড়াতাড়ি করে ফেলব। তিনি বলেন, মার্চে শুরু হওয়া উপজেলা পরিষদের মাঝেই এ নির্বাচন হবে। তবে এ বিষয়ে কমিশনে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পুনর্তফসিল করা হবে। বসতে হবে সবার সঙ্গে। তাড়াতাড়ি করে ফেলব। উপজেলা নির্বাচন এতে প্রভাব ফেলবে না। জনপ্রিয় মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে ’১৭ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। আইন অনুযায়ী পদ শূন্য ঘোষণার ৩ মাসের মধ্যেই নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে। সে অনুযায়ী ’১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা ছিল। এছাড়া গত ’১৫ সালের ২৮ এপ্রিল উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মেয়র নির্বাচনের পর নতুন করে দুই সিটিতে ৩৬ নতুন ওয়ার্ড সম্প্রসারণ করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। গত বছর ৯ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি এ দুটি সিটির সম্প্রসারিত ওয়ার্ডের নির্বাচনের জন্য তফসিল দেয়া হয়। কিন্তু প্রথম থেকেই উপ-নির্বাচনের পাশাপাশি সম্প্রসারিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচন নিয়ে আইনগত জটিলতা দেখা দেয়। বিশেষ করে মেয়র পদে বাকি মেয়াদের জন্য উপনির্বাচন পরিচালনা করা হলেও ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচনের মেয়াদ কতদিনের হবে তা আইনে স্পষ্ট না থাকায় শুরু হয় এই জটিলতা। তবে ইসির পক্ষ থেকে মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের মতো বাকি মেয়াদের জন্যও ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নির্বাচন নিয়ে বিশেষজ্ঞ মত এই যে আইন অনুযায়ী সাধারণ নির্বাচন পরিচালনা করা হয় পুরো মেয়াদের জন্য। ফলে আইনগত জটিলতা নিরসন না করেই তফসিল দেয়ায় আদালত স্থগিতাদেশ দেয়।
×