ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মেয়েশিশু ধর্ষণ, হত্যার নেপথ্যে বিকৃত মানসিকতা, অবক্ষয়

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯

মেয়েশিশু ধর্ষণ, হত্যার নেপথ্যে বিকৃত মানসিকতা, অবক্ষয়

ওয়াজেদ হীরা ॥ বিকৃত মানসিকতা, মাদকাসক্তিসহ নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে সমাজের নারী ও শিশু ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেই চলছে। এসব ঘটনার প্রভাব পড়ছে সমাজের অন্য মেয়ে-শিশুদের ওপরও। আইন এবং সচেতনতা থাকা সত্ত্বেও থেমে নেই এসব অপরাধ। মেয়ে শিশু নিয়ে কাজ করা বেসরকারী সংস্থার তথ্যানুসারে বিগত বছরের চেয়ে শিশু ধর্ষণ কমলেও ধর্ষণের পর হত্যার সংখ্যা বেড়েছে। আর শিশুদের ওপর যারা এসব যৌন নির্যাতন চালায় বিশিষ্টজনরা তাদের উন্মাদ ও বিকৃত মনের ‘পশু’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার কথাও বলছেন বিশিষ্টজনরা। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া কয়েকটি কেসস্ট্যাডি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মেয়ে শিশু ধর্ষণের পেছনে অনেক সময়ই পুরুষের লালসা কাজ করে। যা বিকৃত মানসিক পরিচয় দেয়। সম্প্রতি নোয়াখালীর সুবর্ণচরের নারী ধর্ষণের ঘটনা আলোড়ন তুলে সারাদেশে। গত ৩০ ডিসেম্বরে সুবর্ণচরে একটি বাড়িতে হানা দিয়ে চার সন্তানের জননী এক নারীকে দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে উল্লেখ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পূর্ব শত্রুতার জেরে’ এই ঘটনা ঘটেছে। অনেক নারীদের ধর্ষণের ক্ষেত্রেই পূর্ব শত্রুতা আর পুরুষের অতি মাত্রার লালসা কাজ করছে। দুর্বল হিসেবে বিবেচনা করে ধর্ষণ করা হচ্ছে শিশুদের। চলতি বছরের গত ৫ জানুয়ারি ঢাকার গে-ারিয়া এলাকার ঘটনা। আয়েশা নামের দুই বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, নাহিদ (৪৫) নামের এক প্রতিবেশী শিশুটির বাসার পাশের একটি চার তলা ভবনের তিন তলায় থাকেন। নাহিদ দুই বছরের ওই শিশুকে খিচুড়ি খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে নিজের বাসায় ডেকে নেন। পরে শিশুটিকে ‘ধর্ষণের’ পর তিন তলার বারান্দা থেকে ছুড়ে ফেলে হত্যা করে। ৬ জানুয়ারি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ৮ বছর বয়সী এক শিশু ‘ধর্ষণের’ শিকার হয়। ধর্ষণের পর শিশুটি অবচেতন হয়ে গেলে, মারা গেছে ভেবে তাকে পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে ফেলে দেয়া হয়। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। ৭ জানুয়ারি রাজধানীর ঢাকার ডেমরা এলাকার একটি ঘরের খাটের নিচ থেকে ফারিয়া আক্তার দোলা (৫) ও নুসরাত (সাড়ে ৪ বছর) নামের দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘরের মালিক মোস্তফা ও তার মামাতো ভাই আজিজুল জবানবন্দীতে স্বীকার করে, শিশু দুটিকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে তারা। এসব ঘটনার বাহিরেও প্রায়ই অসংখ্য ঘটনা ঘটে যাচ্ছে যা আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিরোনাম হওয়া গত পাঁচ বছরের শিশু নির্যাতনের চিত্রটাও খুব ভয়াবহ। শিশু ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যা, আর ধর্ষণের পর অপমানে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে অনেক। এমনকি ধর্ষণের হাত থেকে প্রতিবন্ধী শিশুরাও রেহাই পায়নি। মেয়ে-শিশু ধর্ষণ নিয়ে নারী নেত্রী ও মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির জনকণ্ঠকে বলেন, ধর্ষণ যে করে সে একটি ক্রিমিনাল। তার আর কোন পরিচয় থাকতে পারে না। প্রত্যেকের উচিত এই ঘৃণিত ব্যক্তিকে বর্জন করা। আরেকটি বিষয় আমাদের দ্রুত এই বিচারটা হওয়ার কথা থাকলেও অনেক সময় দেরি হয়, তদন্ত ঠিকমতো হয় না, আসামি ধরলে অনেক সময় ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এমনকি কখনও কখনও সামাজিকভাবে এসব মীমাংসা হচ্ছে। আমি মনে করি আমাদেরও নারী শিশুদের সুরক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে। সচেতনতো অবশ্যই থাকতে হবে। কমপক্ষে ১৫টি দৈনিকের তথ্য দিয়ে ভয়াবহ বার্তা দিয়েছে শিশুদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম (বিএসএএফ)। সংস্থাটির মতে, ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৮ সালের নবেম্বর মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ গত প্রায় পাঁচ বছরে সারাদেশে ২৩২২ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আর ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে আরও ৬৩৯ জন শিশু। অন্যদিকে ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৮ সালের নবেম্বর মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ গত চার বছরে সারাদেশে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৩১ শিশুকে। এ ছাড়া ধর্ষণের পর অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে ১৯ শিশু। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে নবেম্বর মাস পর্যন্ত সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫৬৩ জন শিশু। আর ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয় ১৭৯ শিশু। এ ছাড়া ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় ৫৮ শিশুকে এবং ধর্ষণের পরে আত্মহত্যা করে ছয় শিশু। এই ১১ মাসে ৯৩ শিশু সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। এ ছাড়া এই সময়ের মধ্যে ২৬ জন প্রতিবন্ধী শিশুও ধর্ষণের শিকার হয়। বিএসএএফের ২০১৭ সালের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৭ সালে সারাদেশে ধর্ষণের শিকার হয় ৫৯৩ শিশু। আর ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিল ১৬২ শিশু। এ ছাড়াও ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয় ২২ শিশুকে এবং ধর্ষণের পরে আত্মহত্যা করে সাত শিশু। ২০১৭ সালের এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৭০ শিশু ওই বছর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আর ২০১৭ সালে সারাদেশে ৪৪ জন প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২০১৬ সালের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ওই বছরে সারাদেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৪৬ শিশু। আর ধর্ষণ চেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিল ১৩৪ শিশু। এ ছাড়াও ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয় ২১ শিশুকে এবং ধর্ষণের পরে আত্মহত্যা করে দুই শিশু। ২০১৬ সালের এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৬৮ শিশু ওই বছর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। এ ছাড়া সে বছর ৪২ প্রতিবন্ধী শিশুও ধর্ষণের শিকার হয়। বিএসএএফের তথ্যানুযায়ী, ২০১৫ সালে সারাদেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫২১ শিশু। আর ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিল ১৪৩ শিশু। এ ছাড়াও ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয় ৩০ শিশুকে এবং ধর্ষণের পরে আত্মহত্যা করে চার শিশু। ২০১৪ সালে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৯৯ শিশু। আর ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে ২১ শিশু। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ডা. হেদায়েতুল ইসলামের মতে, পারসোনালিটি ডিজঅর্ডার থেকেই এ ধরনের মানুষ ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ করে। সমাজে তারা সঠিকভাবে কারও সঙ্গে মিশতে না পারায় একাকিত্বে ভোগে। সুস্থভাবে নিজের মনের বহিঃপ্রকাশ করতে না পেরে তারা বিচ্ছিন্নভাবে থাকে। ফলে এ ধরনের কিছু মানুষ দুর্বলের ওপর আঘাত করে। আসলে তারা অসুস্থ। তাদের যৌনপ্রবৃত্তির বহিঃপ্রকাশ অত্যন্ত অস্বাভাবিক ও অসামাজিক হয়। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জনকণ্ঠকে বলেন, ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যাধি। নারী ধর্ষণ, শিশু ধর্ষণ মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে। প্রায় এসব ঘটছে। আর যারা করছে তারা আমি বলবো অপ্রকৃতিগ্রস্ত সুস্থ নয়। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা শুধু জিপিএ দিয়ে না মেপে শিক্ষার আরও উন্নয়ন করেও এসব দূর করতে ভূমিকা রাখবে। কেননা, ছোট বেলা থেকেই শিশুদের পরিপূর্ণ শিক্ষা দিয়ে গড়তে হবে। সুবর্ণচরের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই দোষীরা গ্রেফতার হয়েছে এখন দ্রুত শাস্তি হোক এটিই চাই। ধর্ষণের বিলম্ব বিচার একটি সমস্যা উল্লেখ করে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, এসব ক্ষেত্রে শাস্তি দ্রুত হলে অন্যজন উৎসাহিত হয় না। একই সঙ্গে বিলম্ব হলে দোষীরাও নানাভাবে পাড় পেয়ে যায়। এসব ঘটনা আরও কমিয়ে আনতে সমাজকে নারীবান্ধব ও শিশুবান্ধব করার কথাও বলেন তিনি। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের একাধিক কর্মকর্তারা জানান, যে কোন ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়ন পুলিশের পক্ষ থেকে অনেক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হয়। এসব ঘটনা বিকৃত মানসিকতা পরিচয় দেয়। ধর্ষণের পেছনে মাদকাসক্তিও একটি বড় কারণ বলে কর্মকর্তারা মনে করছেন। নাম প্রকাশ না করে এক কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি সুবর্ণচরের ঘটনার ক্ষেত্রেও কিন্তু পুলিশ দ্রুতই আসামিদের ধরতে পেরেছে। এসব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। আর একাধিক আইনজীবীদের মতে পূর্বের চেয়ে এখন এখন অনেকটাই দ্রুত এসব ধর্ষণের মামলা পরিচালিত হচ্ছে। আর জেলায় জেলায় দ্রুত নারী শিশু মামলা দ্রুত বিচার আদালতে হচ্ছে ফলে মামলা জটও কমছে বলে জানান আইনজ্ঞরা। এদিকে সম্প্রতি আইন ও সালিশকেন্দ্র (আসক) বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০১৮ পর্যবেক্ষণে জানায়, ২০১৮ সালে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের শিকার হয় ৪৪৪ শিশু। নারী ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৭৩২ জন। এর মধ্যে ধর্ষণ-পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৬৩ জন ও আত্মহত্যা করেছেন ৭ নারী। তবে ২০১৭ সালে নারী নির্যাতন ও গণধর্ষণের সংখ্যার তুলনায় ২০১৮ সালে কমেছে বলেও জানায় সংস্থাটি। কেননা ২০১৭ সালে এই নারী ধর্ষণের সংখ্যা ছিল ৮১৮। সমাজে এমন অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক (সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক) তৌহিদুল হক জনকণ্ঠকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের ধর্ষণগুলো দেখলে দেখা যায় ব্যক্তিগত লালসা, আচরণগত ও নানা কারণ। আর শিশু ধর্ষণ হয় কারণ ধর্ষকের হাত থেকে বাঁচার মতো সক্ষমতা একটি শিশু রাখে না, শিশুরা ধর্ষকের চেয়ে একটু দুর্বল হয়। অনেক সময় একজন ব্যক্তি নানা ফাঁদ পেতে শিশুকে কাছে এনে ধর্ষণ করছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়াটা সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি ভয়ানক চিত্র ও সতর্কবাণী। সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক আরও বলেন, ধর্ষণের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখতে পাই এর পেছনে দায়ী মূলত কয়েকটি বিষয়। প্রথমত হলো- প্রযুক্তির অপব্যবহার। কারণ ইন্টারনেটে অতি সহজে যৌন ছবি, উত্তেজক ভিডিও পাওয়া যায়। ফলে ধর্ষণের নৈরাজ্য বেড়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে- পুঁজিবাদের ফলে মানুষের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে মানুষের মধ্যে দূরত্ব, পারস্পারিক সম্মানবোধ, সহনশীল আচরণ অনেকটাই কমে গেছে। আর একইসঙ্গে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে অস্থিরতা বেড়ে যাচ্ছে। আর তৃতীয়টি হলো- ধর্ষণের ঘটনায় বিচারের ক্ষেত্রে এক প্রকার শিথিলতা লক্ষ্য করা যায়। এটা থেকে বিচারহীনতার একটা সংস্কৃতি তৈরি হয়। যখন কোন ধর্ষণের দ্রুত বিচার না হয়, তখন এটি আরও একটি ধর্ষণের ঘটনার জন্য দায়ী। এ সব বিষয় যদি সংশ্লিষ্টরা মাথায় রেখে কাজ করে, তবে ধর্ষণের ঘটনা অনেকাংশে কমে যেতে পারে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩)-এর ধারা ৯-তে অনুসারে যদি কোন পুরুষ কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-ে দ-িত হবেন এবং অতিরিক্ত অর্থদ-েও দ-িত হবেন। যদি কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা ওই ধর্ষণ-পরবর্তী অন্য কার্যকলাপের ফলে ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহলে ওই ব্যক্তি মৃত্যুদ-ে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত এক লাখ টাকা অর্থদ-েও দ-িত হবেন। যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ফলে ওই নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে বা আহত হয়, তাহলে ওই দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। অতিরিক্ত এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন। কেউ ধর্ষণের চেষ্টা করলেও অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের কথা রয়েছে। মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষক কিংবা সমাজকমী সবার মতেই নিরাপদ থাকুক প্রতিটি নারী শিশু। আর কোন কারণে কেউ এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়ে গেলে তার শাস্তির আওতায় আসুক দ্রুত। এতে করে আরেকজন দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাবে বলে মত বিশিষ্টজনদের।
×