ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘যার যার দলীয় প্রতীকেই ভোট হবে’

উপজেলা নির্বাচন জোটগতভাবে হবে না ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯

উপজেলা নির্বাচন জোটগতভাবে হবে না ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন জোটগতভাবে হবে না। মহাজোটের শরিকরা নিজ নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করবে। যার যার দলীয় প্রতীকে ভোট হবে। আমরা স্থানীয় নির্বাচন সবসময় দলীয়ভাবে করি। স্থানীয় নির্বাচন আগেও জোটগতভাবে হয়নি, এবারও হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমণ্ডির হোয়াইট হল কনভেনশন সেন্টারে আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের প্রথমে তৃণমূল থেকে রেকোমেন্ডশন আনতে হবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি তাদের স্বাক্ষরসহ সম্ভাব্য তিনজন প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠাবেন। সেখান থেকে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড একজন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। এছাড়া দলের সভাপতি শেখ হাসিনার জরিপ হয়েছে, সেই জরিপে যারা এগিয়ে এবং যোগ্য তাদের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে। আগামী ১৯ জানুয়ারি ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের ‘বিজয় সমাবেশ’ সফল করতে আয়োজিত বর্ধিত সভায় সংলাপ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি কখনও বলিনি সংলাপ হবে। কেউ যদি মনগড়া খবর পরিবেশন করেন তাহলে তো কিছু করার নেই। আমি যে বক্তব্য রেখেছি তার অডিও-ভিডিও ক্লিপ রয়েছে, সেখানে সংলাপের কোন বিষয় নেই।’ বর্ধিত সভায় মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সংলাপ হবে না দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন নিয়ে সংলাপের কোন প্রয়োজন নেই। এখানে সংলাপ নিয়ে ধুম্রজাল কোথায় থেকে এলো? আমি তো সংলাপ শব্দটি উচ্চারণ করিনি। বলা হয়েছে, গণভবনে নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমন্ত্রণ জানাবেন, শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। একটু আপ্যায়নের ব্যবস্থাও থাকবে। এটা ছিল আমাদের কথা। এখানে ধুম্রজাল কেন হবে, সংলাপ কেন হবে? তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্ট, বিএনপি, বাম গণতান্ত্রিক জোট, জাতীয় পার্টি, ১৪ দল, ইসলামী জোট সব মিলিয়ে মোট ৭৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছিলেন। সেই দলগুলোর নেতৃবৃন্দকে আমাদের নেত্রী আবারও গণভবনে আমন্ত্রণ জানাতে চান শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য। ওবায়দুল কাদের এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী একবারও সংলাপের কথা বলেননি। আমি বলেছি তিনি আমন্ত্রণ জানাবেন। আমি তো সংলাপের কথা বলিনি। কাজেই এ শব্দটি কোথায় থেকে এলো আমি জানি না। যে নির্বাচন দেশে-বিদেশে প্রশংসিত, সেখানে সংলাপের প্রশ্ন আসে কীভাবে! জাতিসংঘ বলেছে শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ করতে তারা রাজি। এই নির্বাচনে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার বিপুল জয় হয়েছে। তাই নির্বাচন নিয়ে সংলাপ হাস্যকর। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অনেক ঐক্যবদ্ধ। ‘৭৫ পরবর্তী সময়ে আমাদের সবচেয়ে কমসংখ্যক বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল এবার। শেষ পর্যন্ত আপনারা দেখেছেন মাত্র দুজন বিদ্রোহী ছিল। এটা আওয়ামী লীগের বৃহত্তর ঐক্যের ফসল। তিনি বলেন, যারা দলে কোন পদে নেই তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী পদায়ন করা হবে। বঞ্চিত নেতারা যেন হতাশাগ্রস্ত না হয়ে যায়, সে বিষয়ে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। হতাশা যেন তাদের গ্রাস না করতে পারে। তাদের খোঁজ-খবর আপনাদের রাখতে হবে। কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। বিজয় উদযাপন সমাবেশ সম্পর্কে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সমাবেশে আপনারা যাবেন, আপনাদের সবার দায়িত্ব আছে। সমাবেশে আমাদের প্রমাণ করতে হবে আমরা সুশৃঙ্খল একটি দল। উৎসবমুখরভাবে সমাবেশে উপস্থিত হবেন সমাবেশের সরঞ্জাম নিয়ে। তবে সমাবেশস্থলে প্রবেশের আগে ফেস্টুন-ব্যানার বাইরে রাখতে হবে। গেটের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নারীদের জন্য আলাদা গেটের ব্যবস্থা থাকবে। বেলা ২টার মধ্যে সমাবেশস্থলে পৌঁছাতে হবে। সমাবেশ শেষ না হওয়া বা প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ সমাবেশস্থল ত্যাগ করবেন না। আর রাস্তায় যখন মিছিল করবেন তখন পুরো রাস্তা দখল করবেন না। এক সাইডে ফাঁকা রাখবেন। রাস্তায় চলতে গিয়ে মহাবিজয়ের মহাদাপট দেখাচ্ছে এমন যেন না হয়। সহিষ্ণু হতে হবে, বড় বিজয়ের সঙ্গে আমাদের বড় দায়িত্ব রয়েছে, এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।
×