ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পায়রা বন্দরের চ্যানেল খনন কাজের চুক্তি সই

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ১৫ জানুয়ারি ২০১৯

পায়রা বন্দরের চ্যানেল খনন কাজের চুক্তি সই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পায়রা বন্দরের চ্যানেল খনন কাজের জন্য চুক্তি হয়েছে। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পায়রা ড্রেজিং কোম্পানি লিমিটেড সোমবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চুক্তিটি সই করেছে। বেলজিয়ামের জান ডে লুন বন্দর চ্যানেলটি খনন করবে। বেলজিয়াম এক্সপোর্ট ক্রেডিট এজেন্সির সহায়তায় এইচএসবিসি এবং এর কনসোর্টিয়াম ব্যাংক প্রকল্পের জন্য ৮ হাজার ৬৪৩ কোটি ঋণ দিচ্ছে। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এম জাহাঙ্গীর আলম এবং বেলজিয়ামভিত্তিক জান ডে নুল ড্রেজিং কোম্পানির চেয়ারম্যান ডেভিড জোকার নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবদুস সামাদ এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আফসর এইচ উদ্দিন এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। প্রকল্পটি বেলজিয়ামের জান ডে নুল কর্তৃক গঠিত পায়রা ড্রেজিং কোম্পানি লিমিটেড বাস্তবায়ন করবে। এ জন্য ব্যয় হবে প্রায় ৮ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জোয়ারের সহায়তায় সর্বোচ্চ ১২ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বন্দরের জেটিতে সরাসরি ভিড়তে পারবে। কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুত কেন্দ্রসমূহের জন্য বিদেশ থেকে বছরে ২০ মিলিয়ন মেট্টিক টন কয়লা বন্দরের টার্মিনালে সরাসরি খালাস করা যাবে, যা দেশের পশ্চিমাঞ্চলের জ্বালানি ও বিদ্যুত উৎপাদনের উপকরণ চাহিদা পূরণ করবে। ২০ ফুট দৈর্ঘ্যরে তিন হাজার কন্টেইনারবাহী জাহাজ ও ৪০ হাজার মেট্টিক টন ধারণক্ষমতার বাল্কবাহী জাহাজ বন্দরের জেটিতে সরাসরি ভিড়তে পারবে। বন্দর অবকাঠামোসহ অন্যান্য কাজ কন্টেইনার, বাল্ক ও এলএনজি টার্মিনাল ইত্যাদি স্থাপনা নির্মাণের লক্ষ্যে আগ্রহী দেশ ও প্রতিষ্ঠান পায়রা বন্দরে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে। বন্দর কেন্দ্রিক দেশের দক্ষিণাঞ্চলে শিল্প অবকাঠামো গড়ে উঠবে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। পায়রা বন্দরকে গভীর সমুদ্র বন্দর আকারে গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাবনাবাদ চ্যানেলকে ভবিষ্যতে ১৪ দশমিক ৫ মিটার গভীর করা হবে। এ নতুন গভীর সমুদ্র বন্দর দেশের উত্তর-দক্ষিণ অঞ্চলে অর্থনৈতিক করিডোর প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করবে যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দক্ষিণের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে রূপান্তরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ড্রেজিং বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং দক্ষিণ এশিয়ার উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে। প্রল্পটির আওতায় পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলে ১০ দশকি ৫ মিটার ড্রাফটের ৪০ হাজার টন ধারণক্ষমতার বাল্ক ক্যারিয়ারের চলাচলে সক্ষম চ্যানেল (টার্নিং বেসিনসহ) ডিজাইন এবং ক্যাপিটাল ড্রেজিংসহ ১২ বছর পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং করা হবে। ক্যাপিটাল ড্রেজিং-এর ফলে ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, ১০০ থেকে ১২৫ মিটার প্রস্থ এবং সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৫ মিটার গভীরতা পর্যন্ত চ্যানেল তৈরি হবে। ইঞ্জিনিয়ারিং সমীক্ষার জন্য ১৪ মাস এবং ক্যাপিটাল ড্রেজিং করতে ১৪ মাস সময় প্রয়োজন হবে। এরপর ছয় মাস প্রাথমিক রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং এবং ৯ বছর ২ মাস রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সর্বমোট প্রায় ৮ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে যা বেলজিয়াম এক্সপোর্ট ক্রেডিট এজেন্সির সহায়তায় এইচএসবিসি এবং এর কনসোর্টিয়াম ব্যাংক হতে পায়রা ড্রেজিং কোম্পানি লিমিটেড গ্রহণ করবে। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং শেষ হওয়ার ছয় মাস পর থেকে ২০টি সমপরিমাণ অর্ধ-বার্ষিক কিস্তিতে সুদসহ পরিশোধ করবে। পায়রা বন্দরের আয় থেকে এই অর্থ পরিশোধ করা হবে।
×