ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদের বাইরেও বিরোধী দল হয় ॥ কোর্টে খালেদা

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯

 সংসদের বাইরেও বিরোধী দল  হয় ॥ কোর্টে খালেদা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আদালতে বলেছেন, বিরোধী দল শুধু সংসদেই হয় না, সংসদের বাইরেও বিরোধী দল হয়। বিএনপি যে অবস্থানেই থাকুক, বিএনপি জনপ্রিয় একটি দল। জনগণের পক্ষে থাকলেই বিরোধী দল হয়। রবিবার দুপুরে নাইকো দুর্নীতি মামলায় শুনানির এক পর্যায়ে তিনি এসব কথা বলেন। অভিযোগ গঠন শুনানির এক পর্যায়ে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আজকে আমরা বিরোধী দল, সেজন্য আমাদের এ অবস্থা। তখনই আদালতে খালেদা জিয়া বলেন, বিরোধী দল সরকারেও হয়। সংসদের বাইরেও হয়। বিরোধী দল সবখানেই হয়। আদালত পরবর্তী অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ২১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। রবিবার দুপুরে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নং বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমান এ আদেশ প্রদান করেন । বেলা ১২টা ২০ মিনিটে হুইল চেয়ারে খালেদা জিয়াকে আদালত কক্ষে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার আসামি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নিজের পক্ষে শুনানি করছিলেন। তিনি বলেন, আজ আমরা বিরোধী দলে আছি বলেই বিপদে পড়েছি। তার ওই কথার পরেই পাশ থেকে আসামিপক্ষের আইনজীবী বোরহানউদ্দিন বলেন, আপনারা কি বিরোধী দলে আছেন? তখন তার প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, বিরোধী দল শুধু পার্লামেন্টের ভেতরেই হয় না, পার্লামেন্টের বাইরেও বিরোধী দল হয়। যারা রাজপথে থাকে, জনগণের কথা বলে, মানুষের অধিকারের কথা বলে তারাই বিরোধী দল। মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে বেলা ১২টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা বক্তব্য তুলে ধরেন মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল তখনই এ চুক্তি হয়। আমরা শুধু ধারাবাহিকতা রেখেছি। বলা হচ্ছে, আমি লিগ্যাল এ্যাডভাইজার ছিলাম, মতামত দিয়েছি চুক্তির পক্ষে। অথচ এ সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র আমরা পাইনি। সত্যায়িত অথবা ফটোকপি কোনটাই না। এর পর আজকের (রবিবারের ) মতো শুনানি শেষ করার জন্য সময় চেয়ে মওদুদ আহমদ বলেন, আজকে আমার হাইকোর্টে ৩৬৫ আসামির আগাম জামিন আছে। আমাকে ওইখানে যেতে হবে। আজকের মতো সময় দেয়া হোক। এরপর আদালত পরবর্তী অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ২১ জানুয়ারি দিন ধার্য করে। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করেন। পরের বছরের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। মামলার প্রধান আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক সচিব মোঃ শফিউর রহমান, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন। মামলার পলাতক অন্য ৩ আসামি হলেন- সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
×