ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সব দলকে আবারও সংলাপে ডাকবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯

  সব দলকে আবারও সংলাপে ডাকবেন প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছিল তাদের আবার আমন্ত্রণ জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঐক্যফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্টসহ ৭৫ রাজনৈতিক দলকে শীঘ্রই গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়ে দাওয়াত দেয়া হবে। রবিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকার আশপাশের জেলা, উপজেলা, পৌরসভা শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রদের সঙ্গে এক যৌথসভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান। আগামী ১৯ জানুয়ারি ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের বিজয়োৎসব পালনের জনসভা সফল করতেই এই যৌথসভা হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের সব রাজনৈতিক দলকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানিয়ে দীর্ঘ সময় কথা বলেছেন। ঐক্যফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্ট, জাতীয় পার্টিসহ ৭৫ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গণভবনে সংলাপ হয়েছিল। এখন নির্বাচন শেষ হয়েছে। আমাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) রবিবারের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ বৈঠকে বলেছেন, যাদের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে, তিনি তাদের আবারও আমন্ত্রণ জানাবেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কিছু মতবিনিময় করবেন, নেতাদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা থাকবে। বৈঠকে এ ব্যাপারে আমরা সবাই একমত হয়েছি। ফলে যারা সংলাপে এসেছিলেন তাদের আবারও সংলাপে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন নেত্রী। একসঙ্গে সবাইকে দাওয়াত দেয়া হবে। সেটা খুব শীঘ্রই জানিয়ে দেয়া হবে। আমন্ত্রণের বিষয়ে তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দল গণভবনে আমন্ত্রিত। ঐক্যফ্রন্ট আছে, যুক্তফ্রন্ট আছে, ১৪ দল আছে, জাতীয় পার্টি আছে, অন্যান্য দল আছে সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। যাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সংলাপ করেছিলেন তাদের চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ঐক্যফ্রন্ট প্রধান ড. কামালের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ড. কামাল হোসেন জানেন বিএনপির সঙ্গে জামায়াত আছে, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি আছে। কামাল হোসেন বিএনপির সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট করেছেন। কাজেই তিনি এখন আবার জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে আছে শুনে এটা মনে হয় যেন তিনি অবাক হচ্ছেন। বিএনপির সঙ্গে জামায়াত আছে এটা জানলে তিনি নির্বাচন করতেন না, এমন কোন কথা ড. কামাল কোন সময় বলেননি। ড. কামাল সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, উনি (ড. কামাল) জেনেশুনে বিষপান করেছেন। জামায়াত বিএনপির সঙ্গে ছিল, নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট করা ভুল হয়েছে। ড. কামালের এই ভুল স্বীকার এবং স্বীকারোক্তি অব্যাহত রাখলেই চলবে। আমাদের দেশের নেতারা একেক সময় একেক কথা বলেন। তাই ড. কামালের এমন বক্তব্য আমরা স্ববিরোধী বলেই মনে করছি। কেননা তিনি জেনেই তো বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করেছেন। আর জামায়াত ছাড়া তো বিএনপির কোন অস্তিত্ব নেই। বিএনপি মানেই জামায়াত, জামায়াত মানেই বিএনপি। এ অবস্থায় ড. কামাল যিনি জেনেশুনে কেন এত বড় ভুল করলেন, তাকেই সেই ভুলের খেসারত দিতে হবে। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপিসহ দেশের সকল রাজনৈতিক দল অংশ নেবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী উপজেলা নির্বাচনের জন্য সব দলকে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। এ নির্বাচনে বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টসহ অন্যান্য দল আসবে বলে আশা করি। তবে আমরা বিরোধী প্রতিপক্ষকে দুর্বল মনে করি না। তারা এলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ভাল লাগে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা সম্পর্কে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা বিজয় উদযাপন করতে চাই। তাই জনসভাকে মহাসমাবেশে রূপ পাবে এবং ওই মহাসমাবেশে বিশাল উপস্থিতি থাকবে বলে আশা করছি। নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন, ঢাকঢোল নিয়ে মহাসমাবেশে আসবেন। মহাসমাবেশে আমাদের দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী দিনে দল ও সরকার কীভাবে চলবে সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন। বৈঠকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ্যাডভোকেট মেসবাহ উদ্দিন সিরাজ, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন।
×