ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশ সপ্তাহ ৪ ফেব্রুয়ারি শুরু, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:১১, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯

 পুলিশ সপ্তাহ ৪ ফেব্রুয়ারি শুরু, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

শংকর কুমার দে ॥ এ বছর ‘পুলিশ সপ্তাহ’ শুরু হবে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের পদক প্রদানে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে পুলিশ সপ্তাহে। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর যারা পদক পাবেন প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক গ্রহণ করবেন। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের কারণে এবারের পুলিশ সপ্তাহ জানুয়ারি মাসের পরিবর্তে ফেব্রুয়ারিতে হতে যাচ্ছে। প্রতিবছরই পুলিশ সপ্তাহ পালন করা হয় সাধারণত : নতুন বছরের শুরুতে জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহে। কিন্তু নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা মুখ্য হওয়ায় পুলিশ সপ্তাহ হতে যাচ্ছে ফেব্রুয়ারিতে। পুলিশ বাহিনীর যেসব সদস্য সংসদ নির্বাচনে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন সেসব পরীক্ষিত কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার দেবে পদক কমিটি। পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, এ বছর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে জমকালো কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে পুলিশ সপ্তাহ-১৯ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যথারীতি ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে বার্ষিক প্যারেড সালাম গ্রহণ শেষে উদ্বোধন ঘোষণা ও পদক বিতরণ করবেন। পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির স্টল পরিদর্শন শেষে পুলিশ অডিটরিয়ামে পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাদর সঙ্গে কল্যাণ সভায় যোগ দেবেন। সভায় পুলিশ সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশন নেতারা তাদের সার্বিক অবস্থা বর্ণনা করে কিছু দাবি দাওয়া তুলে ধরবেন। আবার কোন কোন কর্মকর্তা পুলিশের সমস্যা সমাধান ও লজিস্টিক বাড়াতে সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগের প্রশংসা করে বক্তব্য রাখতে পারেন। পুলিশ সদর দফতর সূত্রমতে, ৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরদিন উর্ধতন কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেবেন প্রধান অতিথিসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। ৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা বঙ্গভবনে যাবেন। সেখানে রাষ্ট্রপতি তাদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। এছাড়াও সপ্তাহজুড়ে পুলিশ বিভিন্ন সভা সেমিনার আয়োজন করবে। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট নিজেদের ’১৮ সালের কাজের মূল্যায়ন করে ’১৯ সালের কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করবেন। সবশেষে ৮ ফেব্রুয়ারি পুলিশ অফিসার্স মেস ও পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতি বার্ষিক সাধারণ সভায় মিলিত হয়ে আইনশৃঙ্খলা ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত মতবিনিময় করবে। পুলিশ সদর দফতরে আইজি ড. জাবেদ পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ মেসকে নতুন রুপে সাজানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কারণ পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে সারাদেশ থেকে পুলিশ সুপার ও তদুর্দ্ব কর্মকর্তারা এসব মেসে উঠবেন। তাদের বাসযোগ্য এবং সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মোখলেসুর রহমান বলেন, বছরজুড়ে যথারীতি যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে একটি অংশ, যারা বিভিন্ন ক্রাইসিস যেমন জঙ্গী দমন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে স্টুডেন্ট মুভমেন্ট, সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মসূচীর নামে সহিংসতা মোকাবেলায় আহত/নিহত হয়েছেন বা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। পদকের ক্ষেত্রে তাদের বিশেষ বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এছাড়া তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন সেবা ধর্মী কাজে যেসব পুলিশ দৃষ্টান্তমূলক কাজ করেছেন তাদের দেয়া হবে (পিপিএম সেবা) রাষ্ট্রপতি পদক ও (বিপিএম সেবা) বাংলাদেশ পুলিশ পদক। এছাড়াও আগ্নেয়াস্ত্র, মাদক উদ্ধার, চিহ্নিত সন্ত্রাসী মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতারে যারা সফলতার পরিচয় দিয়েছে তাদেরকেও বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এআইজি মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশন সোহেল রানা বলেন, অন্যান্য যে কোন বছরের তুলনায় এবার পুলিশ সপ্তাহ বৈচিত্র্যময় হবে। পুলিশ সদস্যরা স্বতস্ফূর্তভাবে সপ্তাহটি পালনে আগে থেকে ব্যাতিব্যস্ত ছিলেন। নির্বাচন শেষে শ্রান্ত ক্লান্ত পুলিশ এখন ফুর ফুরে। তাই এবারের পুলিশ সপ্তাহটি স্বাচ্ছন্দ্যেই পালিত হবে। প্রসঙ্গত, স্বাধীন বাংলাদেশে ’৭৫ সালে প্রথম পুলিশ সপ্তাহ হয় রাজারবাগ পুলিশ লাইন মাঠে। ৪৩ বছর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে দিক-নির্দেশনামূলক ভাষণ দিয়েছিলেন।
×