ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিপিএলে এবার সিলেট পর্ব

প্রকাশিত: ০৪:৫৮, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯

বিপিএলে এবার সিলেট পর্ব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ষষ্ঠ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসরের প্রথম ধাপ শেষ হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের কারণে বরাবরের মতো নবেম্বর-ডিসেম্বরের পরিবর্তে এবার গত ৫ জানুয়ারি শুরু হয় বিপিএল। এবার শুরু থেকেই বিদেশী অনেক মহাতারকা যোগ দেয়া, ডিআরএস প্রযুক্তি সংযোজন, স্পাইডার ক্যামেরা ও ড্রোন ব্যবহারে সবার মনোযোগের কেন্দ্রে এসেছিল বিপিএল। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার দুই তারকা স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার যোগ দেয়াতে বাড়তি মাত্রা পায় বাংলাদেশের এ ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি২০ আসর। ঢাকা পর্বে ৯ দিনে ১৪ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। যাতে গত আসরের রানার্সআপ ঢাকা ডায়নামাইটস ৪ ম্যাচ খেলে অপরাজেয় হিসেবে ৮ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে শীর্ষে রয়েছে। আর চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স এই ধাপে সর্বাধিক ৫ ম্যাচ খেলে মাত্র ২ জয়ের বিপরীতে ৩টিতে হেরে তিনে অবস্থান নিয়ে শেষ করেছে। ৪ ম্যাচের সবই হেরে সবচেয়ে বাজে অবস্থা খুলনা টাইটান্সের। এবার দলগুলো সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৫ দিনে ৮ ম্যাচ খেলবে। মঙ্গলবার থেকেই শুরু হবে সিলেট পর্ব। মিরপুরের উইকেট বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বোধ্য, এখানে ব্যাটসম্যানদের রান করতে নাভিশ্বাস উঠে যায়। বিপিএলের শুরুতে কয়েকটি ম্যাচে রানই হয়নি বলে এমনটাই দাবি করেছিলেন কয়েকজন ক্রিকেটার। তবে এরপরও কয়েকজন টি২০ ক্রিকেটে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃতদের ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহ দেখা গেছে। সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস ছিল খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে ঢাকার ৬ উইকেটে ১৯২। এছাড়া দলটি ৫ উইকেটে ১৮৯, ৯ উইকেটে ১৮৩ এবং ৭ উইকেটে ১৭৩ রানের বড় সংগ্রহগুলো গড়েছে। অর্থাৎ চার ম্যাচেই দারুণ ব্যাটিং দেখিয়েছে স্বাগতিক দলের ব্যাটসম্যানরা। চ্যাম্পিয়ন রংপুরও দুই ম্যাচে ৯ উইকেটে ১৮১ ও ৩ উইকেটে ১৬৯ রানের বড় দুটি সংগ্রহ পেয়েছে। সবমিলিয়ে হয়েছে ১১টি অর্ধশতক, যার মধ্যে আফগানিস্তানের তরুন হজরতুল্লাহ জাজাই, দক্ষিণ আফ্রিকার রাইলি রুশো ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিকোলাস পুরান ২টি করে মোট ৬টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন। বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শুধু মেহেদী হাসান মিরাজ ও রনি তালুকদার অর্ধশতক পেয়েছেন। রংপুরের হয়ে রুশো ৪৪ বলে ৮৩ রানের ইনিংস খেলেছেন ঢাকার বিপক্ষে যেটি চলতি আসরে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এখন পর্যন্ত। ৫ ম্যাচে ১১৫.০০ গড়ে ২৩০ রান করে সেরা রান সংগ্রাহকও তিনি। সবাই প্রত্যাশা করছেন সিলেট পর্বে অনেক রান হবে এবং উইকেটও টি২০ ক্রিকেটের জন্য একেবারে মানানসই ধরনের হবে। সেই সিলেট পর্বটা আগামীকাল শুরু হবে। শেষ হওয়া ঢাকা পর্বে তুলনামূলকভাবে ব্যাটসম্যানদের চেয়ে বোলাররাই বেশি দাপট দেখিয়েছেন। বিশেষ করে পেসাররা দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা তেমন ভাল করতে পারেননি, তবে বোলাররা ভাল করেছেন। রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ৫ ম্যাচে ১০ উইকেট শিকার করেছেন। এছাড়া তার সতীর্থ শফিউল ইসলামও ৯ উইকেট নিয়ে শীর্ষ তালিকায় আছেন। সিলেট সিক্সার্সের হয়ে তাসকিন আহমেদ দারুণভাবে প্রত্যাবর্তন করেছেন। ৩ ম্যাচে তিনি ৭ উইকেট শিকার করেন। ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান স্পিনারদের মধ্যে সবার ওপরে ৭ উইকেট নিয়ে। আর বোলারদের এমন দাপটের কারণেই বেশ কিছু ম্যাচেই বিভিন্ন দলের ব্যাটিংয়ে দুরবস্থা দেখা গেছে। বিশেষ করে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহের মধ্যে এবার রয়েছে রংপুরের বিপক্ষে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ৬৩ রানে গুটিয়ে যাওয়া। এছাড়া খুলনা টাইটান্সের ৮৭ ও রংপুরের ৯৮ রানও আছে। ব্যাটিং দৈন্যতার কারণে এবার সর্বাধিক ১০৫ রানের বড় ব্যবধানে জয়টা তুলে নিয়েছে ঢাকা। তারা খুলনার বিপক্ষে এ জয় পায়। দ্বিতীয় সর্বাধিক ৮৩ রানের জয়ও তারাই পেয়েছে রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে। আর উইকেটের ব্যবধানে বড় জয় রংপুরের। তারা ৯ উইকেটে হারিয়েছিল কুমিল্লাকে। সবচেয়ে শ্বাসরুদ্ধকর ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হয়েছে চিটাগং ভাইকিংস ও খুলনা টাইটান্সের মধ্যে। ম্যাচটি নির্ধারিত ওভারের খেলায় টাই হয়ে যায়। যার কারণে বিপিএলের ইতিহাসে প্রথমবার সুপার ওভার হয়েছে। সেই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে ১ রানে জয় পায় চিটাগং। এই ম্যাচগুলোয় ডিআরএস প্রথম ৮ ম্যাচে আল্ট্রা এজ, হাটস্পট ও ¯িœকোমিটার না থাকায় বিতর্কিত হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে এই ঘাটতি পূরণ করে শেষ ৬টি ম্যাচ নির্বিঘ্নেই অনুষ্ঠিত হয়েছে সার্বিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে। সবমিলিয়ে এবারের ঢাকা পর্ব নানাবিধ রোমাঞ্চকর ঘটনার মধ্যে দিয়েই শেষ হয়েছে। এবার সিলেটে বাড়তি রোমাঞ্চ দেখার অপেক্ষা। আগামী ১৯ জানুয়ারি সিলেট পর্ব শেষে ২১ জানুয়ারি পুনরায় ঢাকায় ফিরবে বিপিএল।
×