ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে ক্লাবগুলোর প্রস্তুতি

অভিষেকেই শিরোপাস্বপ্ন বসুন্ধরা কিংসের

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯

  অভিষেকেই শিরোপাস্বপ্ন বসুন্ধরা কিংসের

জাহিদুল আলম জয় ॥ ঢাকা আবাহনী ও মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব দেশের ফুটবলের শীর্ষ দুই জনপ্রিয় ক্লাব। এখনও এই দুই ক্লাবের জনপ্রিয়তায় হানা দিতে পারেনি কোন দল। বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র, শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র, চট্টগ্রাম আবাহনী এ জনপ্রিয়তায় ভাগ নেয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু কেউই সফল হতে পারেনি। ঢাকা আবাহনী এখনও দাপটের সঙ্গে সাফল্য ধরে রাখলেও নিদারুণ ব্যর্থতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান। যে কারণে আগের সেই ধুন্ধুমার লড়াই এখন নেই বললেই চলে। তবে এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) আসন্ন নতুন মৌসুমে জমজমাট লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এর কারণ পরাশক্তি হিসেবে আরেক দলের আবির্ভাব। গেল ডিসেম্বরে স্বাধীনতা কাপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে বসুন্ধরা কিংস বিপিএলেও শিরোপার দিকে দৃষ্টি দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, মৌসুম শুরুর ফেডারেশন কাপেও রানার্সআপ হয়েছিল দলটি। দলবদলের মাঠেও তারা ছিল সরব। দেশী ও বিদেশী মিলিয়ে এবার সেরা দলের একটি বসুন্ধরা কিংস। এ কারণে আসন্ন বিপিএলে নবাগত দলটির দিকে দৃষ্টি থাকছে সবার। নতুন বছরের প্রথমদিনেই ক্যালেন্ডার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। আগামী ১৮ জানুয়ারি মাঠে গড়াতে চলেছে প্রিমিয়ার লীগের একাদশ আসর। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে লীগ পিছিয়ে ফেডারেশন কাপ দিয়ে শুরু হয়েছে ঘরোয়া মৌসুম। তারপর আবারও লীগ পিছিয়ে দিয়ে বছরে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হয় স্বাধীনতা কাপ ফুটবল। বাফুফের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এপ্রিলে শেষ হবে লীগের প্রথম লেগ, আর মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত চলবে দ্বিতীয় লেগ। তাতে লীগের শেষভাগে আবারও বর্ষার কবলে পড়বে লীগ। তবে এ নিয়ে বাফুফের কোন মাথাব্যথা নেই। কোনমতে লীগ শেষ করতে পারলেই তারা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে! বাংলাদেশ আমলে প্রথম লীগ শুরু হয় ১৯৭২ সাল থেকে। ১৯৯৩ সালে নাম বদলে প্রিমিয়ার ডিভিশন লীগ এবং ২০০৭ সালে নাম বদলে ‘বি’ লীগ ২০০৯ সালে ‘বাংলাদেশ লীগ’ এবং ২০১২ সালে নতুন নামকরণ হয় ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ (বিপিএল) নামে। ৪৭ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে খেলতে যাচ্ছে বসুন্ধরা। আর অভিষেকেই শিরোপায় চোখ রাখছেন দলটির ফুটবলাররা। এ লক্ষ্যে এখন কঠোর অনুশীলনে ব্যস্ত দলটি। বাংলাদেশের ফুটবল-উন্মাদনা কতটা বেশি তা ভালভাবে টের পাওয়া যায় ফুটবল বিশ্বকাপের সময়। ফুটবলের সেই মহামঞ্চে খেলার অভিজ্ঞতা আছে, এমন কোন ফুটবলার বাংলাদেশী ক্লাবের হয়ে খেলবেন স্বাভাবিকভাবেই সেটা অনেক বড় ব্যাপার। তেমনটাই ঘটেছে সদ্য বিদায়ী বছরে। দেশের ঘরোয়া ফুটবলের সংস্কৃতিকে ভেঙ্গে কোস্টারিকার স্ট্রাইকার ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেসকে দলে ভিড়িয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের নবাগত ক্লাব ‘বসুন্ধরা কিংস’। বাংলাদেশের মাঠও মাতিয়ে চলেছেন বিশ্বকাপের এ তারকা। কেবল খেলোয়াড় নয়, ইউরোপ থেকে হেভিওয়েট কোচিং স্টাফদের এনেও দেশের ফুটবল-পাড়ায় হইচই ফেলে দিয়েছে বসুন্ধরা। স্পেনের অস্কার ব্রুজন দায়িত্ব নিয়েছেন হেডকোচের। এর আগে মালদ্বীপের নিউ রেডিয়েন্টে থেকে দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা। তার আগে ভারতে কাজ করেছেন বলে উপমহাদেশের ফুটবলটা ব্রুজনের নখদর্পণে। তার সহকারী কোচ হিসেবে আছেন দু’জন। একজন ট্রেইনার। গোলকিপিং কোচসহ মোট ছয়জনের কোচিং টিম কাজ করবে টিম বসুন্ধরা কিংসের জন্য। তবে স্প্যানিশ হেডকোচ ব্রুজনের লবিংয়ে বেশকিছু বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে ক্লাবটি। রাশিয়া বিশ্বকাপ খেলা স্ট্রাইকার কলিন্দ্রেস এসেছে তার সুবাদেই। ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আবাসিক ক্যাম্প করেছে ক্লাবটি। সিনিয়র-জুনিয়র মিলিয়ে ৬০ খেলোয়াড়ের থাকার বন্দোবস্ত সেখানে। বসুন্ধরা আবাসিকের ভেতরেই ক্লাবের নিজস্ব মাঠ। নতুন মৌসুম শুরুর বেশ আগে থেকেই শুরু হয়ে গেছে অনুশীলন। এখন তো আরও জোরেশোরে চলছে প্রস্তুতি।
×