ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

হেফাজত আমিরের নারী শিক্ষাবিরোধী বক্তব্যে তোলপাড়

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯

 হেফাজত আমিরের  নারী শিক্ষাবিরোধী  বক্তব্যে  তোলপাড়

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমেদ শফী। চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলনে হেফাজত আমির বলেন, ‘আপনারা মেয়েদের স্কুল-কলেজে দেবেন না। ক্লাস ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়াতে পারবেন।’ তিনি শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত থাকেননি, মাহফিলে উপস্থিত সকলের কাছ থেকে ওয়াদা আদায় করেন। হেফাজত আমিরের এ বক্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বর্তমান যুগে নারীদের পিছিয়ে রাখার এই বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় বলে শিক্ষাবিদ এমনকি সাধারণ মানুষেরও অভিমত। শনিবার এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেল বলেন, এটা ওনার ব্যক্তিগত অভিমত, যা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমেদ শফী হাটহাজারী মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিলে অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, আপনারা মেয়েদের স্কুল কলেজে দেবেন না। বেশি হলে ক্লাস ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়াতে পারবেন। আর যদি এর চেয়ে বেশি পড়ান, পত্রপত্রিকায় দেখতেছেন আপনারা মেয়েকে ক্লাস এইট, নাইন, টেন, বিএ, এমএ, পর্যন্ত পড়ালে ওই মেয়ে কিছুদিন পর আপনার মেয়ে থাকবে না। তাই আপনারা আমার কাছে ওয়াদা করেন। বেশি পড়ালে আপনার মেয়েকে টানাটানি করে অন্য পুরুষ নিয়ে যাবে। হেফাজত আমিরের এ বক্তব্য বিভিন্ন মাধ্যমে সারাদেশে ভাইরাল হয়। উঠে সমালোচনার ঝড়। ইসলামী ফ্রন্ট নেতা এমএ মতিন, নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারুসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মাওলানা শফীর এমন বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেছেন, তার এ বক্তব্য ইসলামী আদর্শ পরিপন্থী। ইসলামে যেখানে নারী অধিকারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া সেখানে আহমদ শফীর এ বক্তব্যে নারীদের পিছিয়ে দেবে। তারা আরও বলেছেন, হেফাজত আমিরের এমন বক্তব্য ইসলামের অপব্যাখ্যা ছাড়া আর কিছু নয়। অপরদিকে, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল শনিবার সকালে চট্টগ্রামে তার বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, মাওলানা শফীর বক্তব্য তার একান্ত ব্যক্তিগত। রাষ্ট্রীয় নীতিমালার সঙ্গে ন্যূনতম সম্পর্ক নেই।
×