ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জৌলুস ছড়াচ্ছে মুন্সীগঞ্জের নান্দনিক ডিসি পার্ক

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ১২ জানুয়ারি ২০১৯

  জৌলুস ছড়াচ্ছে মুন্সীগঞ্জের নান্দনিক ডিসি পার্ক

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জে জৌলুস ছড়াচ্ছে ডিসি পার্ক। মূল শহরের পুরাতন কাছারীর নান্দনিক এই পার্ক এখন সব মানুষের বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দু। পার্কটি ঘিরে বদলে গেছে মফস্বল শহরটির চেহারা। নানা জাতের ফুল ও বৃক্ষের মেলায় জীববৈচিত্র্যের এখন অপরূপ নিদর্শন এটি। রং-বেরঙের ফুলে এভাবেই জৌলুস ছড়াচ্ছে পার্কটি। পার্কটির আকর্ষণীয় ঝর্ণা বিশেষ আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে। রয়েছে ওয়াকওয়েসহ বসার নানা রকমের নির্মাণশৈলী। মুক্তমঞ্চ এবং মঞ্চের উপরের তলার কফি হাউস পূর্ণতা এনেছে পার্কটিতে। প্রায় ৪১ শতাংশ জমির ওপর এই পার্ক শহরের চেহারা পাল্টে দিয়েছে। মোগল স্থাপত্য ইদ্রাকপুর কেল্লার পাশে পুরনো হাসপাতাল ঘেঁষা পার্কটি এখন শহরের সবচেয়ে সুন্দর স্থান। অনিন্দ্য সুন্দর এই পার্ক ঘিরে শহরবাসীর দৃষ্টিভঙ্গিরও যেন ইতিবাচক পরিবর্তন হচ্ছে। সত্য ও সুন্দরের অনুরণন চলছে পার্ক ঘিরে। উদ্বোধনের আগেই পার্কের এই ভাললাগা। আর পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধনের পর এটি আরও বেশি সৌন্দর্য ছড়াবে বলে সকলের আশা। প্রবীণরা এখনই নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করে এখানে। বিশ্রাম করে। এই সুবিধা আরও বেড়ে যাবে। আজ শনিবার সকালে পার্কটির উদ্বোধন হচ্ছে। উদ্বোধন নিয়ে উৎসব আমেজ বিরাজ করছে এখন। বৃক্ষ বাছাইয়ের পর সংগ্রহ এবং পরিকল্পিতভাবে তা রোপণ করে পরম যত্নে রাখা হয়েছে। ফুল ও নানা রকমের দর্শনীয় এবং বিলুপ্তপ্রায় বৃক্ষ স্থান পেয়েছে পার্কে। তাই পার্কের গুরুত্ব এখন নানাদিক থেকেই অনেক উপরে। স্থাপত্য এবং বৃক্ষ দু’দিক থেকে এই দেশের অন্যতম পার্ক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য। চমৎকার রুচির প্রতিফলন ঘটেছে পার্কটিতে। নান্দনিকতা এবং বৈচিত্র্যভরা এই পার্কের পরতে পরতে সৃজনশীলতা। অথচ কয়েক মাস আগেও ছিল এটি ময়লার ভাঁগাড়, যা এই শহরে এখন বিস্ময়কর। লাকড়ির দোকান, রেন্ট-এ কারসহ নানা কিছুতে এই সরকারী খাস জায়গা ছিল বেদখল। আর পৌরসভার ময়লা ফেলার ডাস্টবিন হিসেবে স্থানটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেই লক্ষ্যে এখানে বড় ডাস্টবিনও তৈরি করা হয়। কিন্তু এখন তা শুধুই স্মৃতি। এখন পরিণত হয়েছে দেশসেরা পার্কে। জেলা শহরের এখন উঁচু মানের পার্ক এটি। এই পার্ক ঘিরেই আমাদের সোনালি প্রজন্মকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। নারী, পুরুষসহ সকল বয়সী মানুষ এই পার্কে এসে প্রশান্তি পাচ্ছে। তাই সকলের পদচারণায় পার্কটিতে এখন প্রাণের স্পন্দন। উদ্বোধনের আগেই সকলের প্রিয় স্থানে পরিণত হয়েছে ডিসি পার্ক, যা ইতিহাসের এক স্বর্ণখচিত নাম। এই পার্ক মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমের সৌরভ ছড়াবে। সকলের প্রত্যশা জীববৈচিত্র্যের প্রতি বিশেষ ভালবাসা জন্মাবে এই পার্ক। পার্কটির দায়িত্বে থাকা স্থপতি বিপ্লব বড়ুয়া জানান, জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা চমৎকার রুচীর অধিকারী। তার পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন করছি মাত্র। আর পার্কের এই নান্দনিকতা এবং বৈচিত্র্য এসেছে তার সৃজনশীলতার কারণেই। পার্কটিতে বৃক্ষরোপণ এবং তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মুন্সী (বৃক্ষপ্রেমিক)। তিনি জানান, এমনসব বৃক্ষ বাছাই করে দিচ্ছেন জেলা প্রশাসক সেই গাছই সংগ্রহ করে তা রোপণ করা হয়েছে। ফুল ও নানা রকমের দর্শনীয় এবং বিলুপ্তপ্রায় বৃক্ষ স্থান পেয়েছে এই পার্কে। তাই এই পার্কের গুরুত্ব এখন নানাদিক থেকেই অনেক উপরে। স্থাপত্য এবং বৃক্ষ দু’দিক থেকে এটি দেশের অন্যতম পার্ক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মতিউল ইসলাম হিরু বলেন, এই পার্ক মুন্সীগঞ্জকে বিশেষ উচ্চতায় নিয়ে গেছে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট শাহিন মোঃ আমানউল্লাহ বলেন, এই পার্ক ঘিরেই আমাদের সোনালি প্রজন্মকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মেহেরুন নেছা নাজমা বলেন, নারী-পুরুষসহ সকল বয়সী মানুষ এই পার্কে এসে প্রশান্তি পাচ্ছে। তাই সকলের পদচারণায় পার্কটিতে এখন প্রাণের স্পন্দন। উদ্বোধনের আগেই সকলের প্রিয় স্থানে পরিণত হয়েছে ডিসি পার্ক। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাঃ হারুন-অর-রশীদ বলেন, এই ডিসি পার্ক মুন্সীগঞ্জের ইতিহাসের এক স্বর্ণখচিত নাম। এই পার্ক মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমের সৌরভ ছড়াবে। জীববৈচিত্রের‌্য প্রতি বিশেষ ভালবাসা জন্মাবে এই পার্ক। আর মুন্সীগঞ্জের বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ডিসি পার্ক। এই পার্কের স্বপ্নদ্রষ্টা অমর হয়ে থাকবেন এর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে। শহরের সবচেয়ে ময়লা-আবর্জনার স্থানটিতে এমন সুন্দর ও নান্দনিক পার্কে রূপ দেয়ার পেছনের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অর্জনকে সাফাল্যম-িত করার সঙ্গে যারা ছিলেন তারা ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন।
×