ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে স্ত্রী হত্যায় জড়িত স্বামী দুই সহযোগীসহ গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ১২ জানুয়ারি ২০১৯

  গাজীপুরে স্ত্রী হত্যায় জড়িত স্বামী দুই সহযোগীসহ গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদেশ থেকে আনা টাকার হিসাব না দেয়ায় দীর্ঘ দিনের প্রেমের পর বিয়ে করা সেই স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা করে স্বামী। হত্যার পর লাশ প্রথমে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে। এরপর রাতের আঁধারে মাত্র সাড়ে ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে তারই দুই সহযোগী লাশটি বাড়ির পাশের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়। আলোচিত সেই গৃহবধূর হত্যাকারী স্বামী ও তার সেই দুই সহযোগী অবশেষে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। গত ৩ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে গাজীপুর নগরীর ভাওরাইদ উত্তরপাড়া এলাকার গৃহবধূ আফরোজা বেগম (২৬) নিখোঁজ হয়। এমন ঘটনায় গ্রামে নানা কথাবার্তা ওঠে। শেষ পর্যন্ত স্বামীর সঙ্গে গৃহবধূর ঝগড়ার ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়। এতে করে স্বামীর ওপর মানুষের সন্দেহ বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে পরদিন ৪ জানুয়ারি বাড়ির পাশের একটি সেপটিক ট্যাংক থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার হয়। এরপর থেকেই স্বামীসহ তার বন্ধু আরও কয়েকজন পলাতক। গত ১০ জানুয়ারি বিকেলে র‌্যাব-১ এর একটি দল নারায়ণগঞ্জ জেলার ডেমরা এলাকা থেকে গৃহবধূর স্বামী শাহজাহান মিয়াকে (২৮) আটক করে। তার পিতার নাম মৃত আনোয়ার হোসেন। বাড়ি জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ থানাধীন মন্ডলপাড়ায়। তার দুই সহযোগী মোঃ খোকন মিয়া (২২) ও মোঃ মুকুল মিয়াকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়। দুপুরে র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম কাওরানবাজার বাহিনীটির মিডিয়া সেন্টারে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে জানান, শাহজাহানের ছোটবেলায় পিতা মারা যায়। মাকে সঙ্গে নিয়ে জীবিকার জন্য গাজীপুরে আসে। প্রথমে সে রিক্সা চালাত। পরে সে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করে। ৮ বছর আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন বিদেশে পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানের সুতার কারখানায় কাজ করার সময় আফরোজার সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে প্রেম। সেই সুবাদে বিয়ে। এরপর মুকুল গাজীপুর-মাওনা রোডে লেগুনার ড্রাইভার হিসেবে কাজ শুরু করে। বিয়ের পর তারা বোন জামাই জবান আলীর বাসায় বসবাস শুরু করে। ২০১৬ সালে নিহত আফরোজা সৌদি আরব যায়। ৬ মাস আগে দেশে ফিরে বোন জামাইয়ের বাসায় থাকতে আপত্তি করে। পরে তারা ভাওরাইদের মাসুদ মিয়ার বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস শুরু করে। শাহজাহান তার স্ত্রীর কাছে বিদেশ থেকে আনা টাকার হিসাব চায়। স্ত্রী তা দিতে আপত্তি করে। এ নিয়েই মূলত কলহ শুরু হয়। শাহজাহান জানায়, গত ৩ জানুয়ারি তাদের মধ্যে তীব্র ঝগড়া হয়। মারামারি পর্যন্ত হয়ে যায়। সে রাগের বশবর্তী হয়ে স্ত্রী আফরোজাকে গলা টিপে হত্যা করে। হত্যার সময় তার শিশু কন্যা বাসার বাইরে ছিল। ধরা পড়ার ভয়ে সে লাশ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে। পরে খোকন ও মুকুলকে ঘটনা জানিয়ে ওইদিনই রাতে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়। লাশ গুমে সহযোগিতার জন্য শাহজাহান খোকনকে ৪ হাজার টাকা আর মুকুলকে আড়াই হাজার টাকা দেয়। গ্রেফতারকৃত তিনজনই পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। হত্যার দায়ও স্বীকার করেছে।
×