মোঃ খলিলুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ ॥ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ নগরীর সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফুটওভারব্রিজ না থাকায় পথচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পার হচ্ছে। এতে বহু পথচারী সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। এ বাসস্ট্যান্ডটিতে ত্রিমুখী রাস্তা রয়েছে। পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা উক্ত স্থানে জরুরী ভিত্তিতে একটি ফুটওভারব্রিজ নির্মাণের জোর দাবি জানান।
জানা গেছে, সাইনবোর্ড নামক স্থানটি অত্যন্ত ব্যস্ততম একটি বাসস্ট্যান্ড এলাকা। কেননা এ বাসস্ট্যান্ড দিয়েই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি অতিক্রম করেছে। এছাড়াও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্করোডটিও এখান থেকে শুরু হয়েছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্করোড দিয়ে নারায়ণগঞ্জ নগরীরসহ ফতুল্লার ভূঁইঘর, মামুদপুর, কুতুবপুর, দেলপাড়া, জালকুড়ি, ফতুল্লা ওসমানী স্টেডিয়াম, লামাপাড়া, শিবু মার্কেট, সস্তাপুর, চাঁনমারীসহ এলাকাগুলোতে লোকজনকে যাতায়াত করতে হয়। এছাড়াও এ মহাসড়কের উত্তর ও দক্ষিণ পাশের এলাকাগুলোর লোকজনও এ বাসস্ট্যান্ডটি দিয়ে আসা-যাওয়া করছে। এ কারণে বাসস্ট্যান্ডটি সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকছে। প্রতিদিন হাজারও পথচারী এ ত্রিমুখী রাস্তা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পার হচ্ছে। এসব এলাকার বহু ছাত্র-ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত রয়েছে। ফলে প্রতিদিনই তাদের এ বাসস্ট্যান্ড দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও মহিলাদের মহাসড়ক পার হতে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সাইনবোর্ড এলাকায় সরেজমিন অবস্থান করে পথচারীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পার হতে দেখা গেছে। আবার অনেকেই দৌড়াদৌড়ি করেও মহাসড়ক পার হচ্ছেন। জালকুড়ি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হালিম জানান, আমি আমার দুই শিশু ও স্ত্রীকে নিয়ে ২০ মিনিট ধরে মহাসড়ক পার হওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম। যানবাহন চলাচল অব্যাহত থাকায় পার হতে অনেক সময় লেগেছে। পরে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মহাসড়কটি পার হয়েছি। আমরা ফুটওভারব্রিজের অভাবে কি ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়কটি পার হচ্ছি তা কেউ সরেজমিন না আসলে দূর থেকে কেউ বুঝতে পারবে না। জালকুড়ি পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা কলেজ ছাত্রীরুবিনা আক্তার জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়কের শিমরাইল, মৌচাক, সানারপাড়সহ আশপাশে পথচারীদের জন্য ফুটওভারব্রিজ রয়েছে। অথচ দীর্ঘদিন ধরে উক্ত স্থানে ফুটওভারব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও কোন প্রতিকার হচ্ছে না। সাইনবোর্ড এলাকার দোকানী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, এ বাসস্ট্যান্ডে ফুটওভারব্রিজ না থাকায় প্রায়ই সময় পথচারী সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত হচ্ছে। মামুদপুর এলাকার বাসিন্দা বিলকিছ আক্তার জানান, রাজধানী ঢাকায় অনেক জায়গায় ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে যেখানে সারাদিনে একটি লোকও পার হতে দেখা যায়নি। অথচ এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার পথচারী পার হচ্ছেন। কিন্তু ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে না। এটা কোন ধরনের বৈষম্য। বলতে পারেন।
সাইনবোর্ড এলাকায় কর্মরত ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) মোঃ জিয়াউল করীম জানান, সাইনবোর্ড এলাকায় দ্রুততম সময়ে একটি ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করা অতি জরুরী হয়ে পড়েছে। কারণ সাইনবোর্ড এলাকার উত্তর ও দক্ষিণ পার্শ্বে কয়েক লাখ মানুষ বসবাস করে। দুটি স্কুল ও বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা রয়েছে। এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পার হচ্ছে। তিনি আরও জানান, প্রতি ঘণ্টায় আনুমানিক ৩-৪ হাজার পথচারী মহাসড়কটি পার হয়। এভাবে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পথচারীদের চাপ থাকে।
তিনি আরও জানান, হাইওয়ে রোডে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল অব্যাহত থাকায় প্রায় সময় মহাসড়কের এক পাশে পথচারীরা মহাসড়কটি পার হতে জড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। তখন আমাদের ট্রাফিক পুলিশরা বাধ্য হয়ে মহাসড়কের যানবাহন থামিয়ে তাদের পার করে থাকেন।
এভাবেও যানজটের সৃষ্টি হয়। এখানে ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করা পথচারীদের দীর্ঘদিনে দাবিও রয়েছে।