ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীর গাছে গাছে আমের মুকুল-গুটি

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ১২ জানুয়ারি ২০১৯

 রাজশাহীর গাছে গাছে আমের মুকুল-গুটি

সাধারণত মাঘের শেষে রাজশাহী অঞ্চলের বাগানে দেখা মিলে আমের মুকুলের। তবে এবার পৌষের শীতেই রাজশাহীর গাছে গাছে উঁকি দিয়েছে আগাম আমের মুকুল। কোথাও কোথাও গুটিও দেখা দিয়েছে। শুধু আমের মুকুল নয়, এই পৌষেই গাছে গাছে ফুটতে শুরু করেছে শিমুলও। ফাল্গুনের অনেক আগেই রাজশাহীর কোথাও কোথাও বাতাসে বইছে ম.ম সুবাস। রাজশাহী মহানগরীর ভাটাপাড়া এলাকার একটি কিন্ডারগার্টেনের স্কুলের গাছে তো আমের গুটিও দেখা যাচ্ছে। এছাড়া নগরীর গৌরহাঙ্গা, শিরোইল, ভেড়িপাড়া, পুলিশ লাইন, মালোপাড়া, মেহেরচন্ডি ও ভদ্রা আবাসিক এলাকায় দেখা গেছে, বেশ কিছু আমগাছে উঁকি দিচ্ছে মুকুল। সোনারাঙা সেই মুকুলের পরিমাণ কম হলেও এর সৌরভ ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে। জেলার প্রধান আম উৎপাদনকারী এলাকা চারঘাট-বাঘার বাগানেও সুবাস ছড়াচ্ছে আমের মুকুল। আর কিছুদিনের মধ্যে গাছেগুলোতে পুরো দমে আসতে শুরু করবে আমের মুকুল। আর সে জন্য আগেই বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। বাগান মালিকরা জানান, পৌষের শেষে গাছে মুকুল দেখে তারা বুঝছেন আমের মৌসুম এসে যাচ্ছে। তাই মনে আশার প্রদীপ জ্বলে উঠেছে। জোরেশোরে নিচ্ছেন বাগানের পরিচর্যা। আগাম মুকুল দেখে আম চাষীরা অনেকে খুশি হলেও কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, শীত বিদায় নেয়ার আগেই আমের মুকুল আসা ভাল নয়। এখন ঘন কুয়াশা পড়লে গাছে আগেভাগে আসা মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা ফলনেও প্রভাব ফেলবে। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলীম উদ্দিন বলেন, এবার তীব্র শীতেই আম গাছে আগাম মুকুল এসেছে। তবে শীতের কারণে এ মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু আবহাওয়ার উন্নতি হয়ে তাপমাত্রা একটু বাড়লে সমস্যা হবে না। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, রাজশাহীতে প্রতি বছরই কিছু আমগাছে আগাম মুকুল আসে। এবারও আসতে শুরু করেছে। ঘন কুয়াশার কবলে না পড়লে এসব গাছে আগাম ফলন পাওয়া যায়। আর আবহাওয়া বৈরী হলে ফলন মেলে না। তবে নিয়ম মেনে শেষ মাঘে যেসব গাছে মুকুল আসবে সেসব গাছে মুকুল স্থায়ী হবে। এদিকে আমের রাজধানী হিসেবে খ্যাত জেলার চারঘাট-বাঘার গাছে গাছেও দেখা দিয়েছে আগাম আমের মুকুল। কিছু এলাকায় আমের গাছে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল। বাতাসে ছড়াচ্ছে মুকুলের সুবাস। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন শোভা পাচ্ছে আমের মুকুল। চারঘাট উপজেলার কালুহাটি এলাকার আম চাষী বাহাদুর রহমান বলেন, আগাম মুকুল দেখা পাওয়ায় মনটা ভালই লাগছে। তবে এ মুকুল টিকে থাকলে এবার বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে। তবে ঘনকুয়াশা দেখা দিলে আমের মুকুল পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে আবার ক্ষতির আশঙ্কায় রয়ে যায়। বাঘার রুস্তুমপুর এলাকার আম ব্যবসায়ী সেলিম রেজা জানান, আগাম গাছে মুকুল আসায় চাষী ও ব্যবসায়ীরা এখন ব্যস্ত মুকুল পরিচর্যায়। যাতে করে আগাম মুকুলের কোন ধরনের ক্ষতি না হয়। তবে কিছু গাছে এবার মুকুল আসায় আমের ব্যবসা ভাল হবার লক্ষণ বলে মনে করছেন কেউ কেউ। আমের মুকুল টিকে গেলে আমে বাম্পার ফলনও হতে পারে বলে ধারণা চাষী ও ব্যবসায়ীদের। এদিকে রাজশাহীর ফল গবেষণাগারের বাগানে দেখা মিলেছে রীতিমতো আমের। সেখানে ঝুলছে বাড়ন্ত আম। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলীম উদ্দিন বলেন, এ আম নিয়ে গবেষণা চলছে। পরীক্ষা-নীরিক্ষা চলছে। কোন জাতের আম তা এখনও নির্ধারণ করা হয় না। গবেষণা শেষে এ আমের নামকরণ করা হবে। -মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী থেকে
×