ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আট শ’ কোটি ডলার খরচের পরও প্রস্তুত নয় আফগান বিমানবাহিনী

প্রকাশিত: ০৪:২২, ১২ জানুয়ারি ২০১৯

 আট শ’ কোটি ডলার খরচের পরও প্রস্তুত নয় আফগান বিমানবাহিনী

আফগানিস্তানের বিমানবাহিনীকে গড়ে তোলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৮০০ কোটি ডলার খরচ করেছে। কিন্তু এখনও দেশটির বিমানবাহিনী প্রত্যাশা অনুযায়ী সক্ষম হয়ে উঠতে পারেনি। এমন অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহারের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার পরিণতি নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। আফগান বিমানবাহিনীর বৈমানিকরা এখনও তাদের দেয়া যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে যথাযথভাবে বোমা হামলা করতে পারছেন না। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের। নিউইয়র্ক টাইমস তাদের একটি অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেছে। প্রশিক্ষণের সময় একজন আফগান সমন্বয়কের তত্ত্বাবধানে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার অনুশীলন করছিলেন আফগান বৈমানিকরা। এ-২৯ বিমান থেকে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে রাখা একটি ট্রাকে বোমাবর্ষণ করার কথা। বোমাটি ট্রাকের কয়েক গজ দূরে বিস্ফোরিত হয়। পর্যবেক্ষণে থাকা মার্কিন সেনা কর্মকর্তা উচ্ছ্বসিত হয়ে বলে ওঠেন, ‘একদম জায়গায় আঘাত করেছে।’ কিন্তু নিউইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিক লিখেছেন, কয়েক গজ দূরে সেই বোমাটি বিস্ফোরিত হওয়ার আগের প্রচেষ্টাগুলোতে বিমান থেকে ছোঁড়া বোমাকে লক্ষ্যবস্তুর বেশ অনেকটা দূরে বিস্ফোরিত হতে দেখা গেছে। তবে ২০১৩-২০১৪ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জন ই মিচেল মন্তব্য করেছেন, ‘৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ নিখুঁত হতে পারলেই আমি সেটাকে অনেক ভাল মনে করব। কাজটা কতটা কঠিন সে বিষয়ে আপনাদের বাস্তবানুগভাবে চিন্তা করতে হবে।’ এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। ১৭ বছর ধরে যে যুদ্ধে মার্কিন সেনাবাহিনী যুক্ত রয়েছে, তার ইতি টানতে চান তিনি। দেশটিতে রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার মার্কিন সেনা, ট্রাম্প যাদের প্রায় অর্ধেককে ফিরিয়ে নিতে চান। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আফগান তালেবানের দাপট বাড়তে থাকার এই সময়ে আফগান বিমানবাহিনীর মার্কিন সেনাদের ওপর নির্ভরশীলতা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নকে জটিল করে তুলবে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বরাক ওবামার আমল থেকেই মার্কিন সেনাবাহিনীর আফগানিস্তান ত্যাগের একটি শর্ত হয়ে হয়ে রয়েছে আফগান সেনাবাহিনীকে সক্ষম হিসেবে গড়ে তোলা, একটি দক্ষ বিমানবাহিনী যার অংশ। প্রত্যাশা ছিল, নিজস্ব সক্ষমতার ওপর ভর করে আফগান সরকার যেন নিজেরাই জঙ্গীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। মার্কিন সেনা কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়েছেন, এমন পরিস্থিতিতে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সম্ভাব্য বিপদের বিষয়ে। মার্কিন সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান হিসেবে মনোনীত সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি মার্কিন কংগ্রেসকে গত মাসে বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না, আমরা হুট করে চলে গেলে তারা তাদের দেশকে রক্ষা করতে সফল হবে।’
×