ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটিতে ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রস্তাবনা পেশ

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ১১ জানুয়ারি ২০১৯

 ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটিতে ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রস্তাবনা পেশ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) গঠনতন্ত্র সংশোধন ও পরিমার্জনের বিষয়ে গঠিত কমিটির কাছে নিজেদের প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে ছাত্র সংগঠনগুলো। এছাড়া বৈঠকে সময় স্বল্পতার কারণে আগামী সোমবারের (১৪ জানুয়ারি) মধ্যে লিখিত আকারে প্রস্তাবনাগুলো জমা দেয়ার আহ্বান জানান কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মিজানুর রহমান। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শুরু হয়ে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের কনফারেন্স রুমে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির উদ্যোগে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক আইন বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান, সদস্য অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল, অধ্যাপক রহমত উল্লাহ, অধ্যাপক সুপ্রিয়া সাহা ও অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সার্বিক বিষয়ে নিয়ে অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে ডাকসুর সভাপতির ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা, ডাকসুতে নতুন সম্পাদক পদ সৃষ্টি ও নারী নেতৃত্ব তৈরি, ছাত্র অধিকার বিষয়ক সম্পাদক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদ সৃষ্টির দাবি জানিয়েছে। ভোটার কিংবা প্রার্থিতার বিষয়ে অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী, তারাই প্রার্থী এবং ভোটার হতে পারবেন। তবে নিয়মিত শিক্ষার্থীর সংজ্ঞা নিয়ে দুই-একটি সংগঠনের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। এ বিষয়ে ছাত্র সংগঠনগুলো আরও সুচিন্তিত মতামত দিবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সুনির্দিষ্ট মতামতের জন্য আগামী সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ছাত্র সংগঠনগুলোকে সময় দেয়া হয়েছে। তারা এই সময়ের মধ্যে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য লিখিত আকারে জমা দিতে পারবে। ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির আহ্বানে ঢাবির ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ছাত্রদলের ঢাবি সভাপতি মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দীকী, ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক তমা বর্মন, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীরসহ ১৩টি ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত হয়ে তাদের প্রস্তাবনা উপস্থাপন করে। বৈঠক শেষে তারা সাংবাদিকদের সামনে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, আমরা চাই সকল সংগঠন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। আর ক্যাম্পাসে সহাবস্থান আছে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী তারা ক্যাম্পাসে আসছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি তাদের মতাদর্শ গ্রহণ করে নেয় তাহলে তারা ক্যাম্পাসে আসতে পারবে, কেউ তো তাদের বাধা দিচ্ছে না। ঢাবি ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর বলেন, ডাকসুর বর্তমান গঠনতন্ত্রে সভাপতিকে একচেটিয়া ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এতে পদাধিকার বলে সভাপতি (উপাচার্য) নির্বাচিত প্রতিনিধিকে বহিষ্কার করতে পারবে। তিনি যে বিষয়ে চাইবেন সে বিষয়ই আলোচিত হবে। আমরা বিষয়গুলোর পরিবর্তনে প্রস্তাবনা রেখেছি। পাশাপাশি যেহেতু দীর্ঘদিন নির্বাচন হয়নি তাই আমরা একটি নির্দিষ্ট সেশন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়ার বিষয়টি বলেছি। ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার বলেন, ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমরা মনে করি। সহাবস্থান নিশ্চিত না হলে আমরা নির্বাচনে অংশ নাও নিতে পারি। উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরবর্তীতে ৩১ অক্টোবর সর্বপ্রথম ডাকসু নির্বাচনের জন্য হলভিত্তিক খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ডাকসু গঠনতন্ত্র সংশোধনের সুপারিশমালা জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
×