ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংরক্ষিত মহিলা আসনে আগামী সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ১১ জানুয়ারি ২০১৯

 সংরক্ষিত মহিলা আসনে আগামী সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এবার সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচনের তোড়জোর শুরু হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই এই সংরক্ষিত আসনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোতে মহিলা আসনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে চলছে হিসাব- নিকাশ। সাধারণ আসনের নির্বাচিত সদস্যরা মহিলা আসনের সদস্যদের নির্বাচনের জন্য ভোট প্রদান করবেন। তবে প্রত্যেক আসনে জোট বা দলের পক্ষ থেকে একজন করে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হলে ভোটের কোন প্রয়োজন হবে না। সংবিধানে জাতীয় সংসদের ৫০টি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আছে। সাধারণ আসনে নির্বাচনের ফলের অনুপাত অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই আসন সংখ্যা বণ্টিত হবে। দলের পাশাপাশি জোটগতভাবেও এই আসন বণ্টন হতে পারে। আইন অনুযায়ী মহিলা আসনের মোট সংখ্যাকে সংসদের সাধারণ আসনের মোট সংখ্যা দ্বারা ভাগ করার পর ভাগফল হিসেবে প্রাপ্ত সংখ্যা দ্বারা প্রত্যেক রাজনৈতিক দল বা জোটের অন্তুর্ভুক্ত সদস্যদের মোট আসন সংখ্যাকে গুণ করে যে সংখ্যা পাওয়া যাবে সেই সংখ্যাই হবে রাজনৈতিক বা জোটের অনুকূলে বণ্টিত মহিলা আসন সংখ্যা। গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট অধিকাংশ আসন লাভ করেছে। সংসদের ৩শ’ আসনের মধ্যে মহাজোটের ভাগে রয়েছে ২৮৮ আসন। এর বাইরে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের ভাগে আসন সংখ্যা ৮সহ স্বতন্ত্র সদস্য রয়েছেন তিনজন। এই হিসেবে মহিলা আসন বণ্টনে মহাজোট এককভাবে ৪৮ আসন পাচ্ছে। এর বাইরে বিএনপি এবং স্বতন্ত্র মিলে বাকি দুটি আসন পাবে। তবে আলাদাভাবে আওয়ামী লীগ ৪৩ আসন, বিরোধী দলে যাওয়া জাতীয় পার্টির ৪টি, বিএনপি, ওয়ার্কার্স পার্টি এবং স্বতন্ত্র মিলে পাচ্ছে ১ টি করে আসন। তবে বিএনপি সদস্যরা এখন পর্যন্ত শপথ নেননি। আইন অনুযায়ী বিএনপি যদি এখন শপথ গ্রহণ না করে এবং তফসিলের পরে মহিলা আসনের প্রার্থী মনোনয়ন না দেয় তাহলে তারা সংরক্ষিত মহিলা আসন পাওয়া সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। পরবর্তীতে তারা শপথ নিলেও তাদের ভাগে কোন সংরক্ষিত আসন বণ্টন হবে না। অন্য দলগুলোর মধ্যে এই আসন সংখ্যাভাগ হয়ে যাবে। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যদি কোন জোটে যোগ দেয় তাহলে তাদের ভাগে মহিলা আসন বণ্টন হবে। কিন্তু কোট জোটে না গেলে তারাও কোন আসন পাবে না বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব। জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসন নির্বাচন আইন ২০০৪ এর ধারা ৪ এর উপধারা ২ অনুযায়ী সংরক্ষিত মহিলা আসন বণ্টনের পর পরবর্তীতে রাজনৈতিক দল বা জোটসমূহের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত সাধারণ আসনে নির্বাচিত সদস্যদের আসন সংখ্যার কোনরূপ পরিবর্তন হলে এই পরিবর্তনের কারণে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল জোটের অনুকূলে বণ্টনকৃত আসন সংখ্যার কোন পরিবর্তন হবে না। এদিকে জাতীয় নির্বাচনের পর এখন কমিশনের মহিলা আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। অপরদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রার্থী বাছাই শুরু হয়েছে। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে চারজন প্রার্থীর মনোনয়নের তালিকা স্পীকারের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে ইসি সচিব সাংবাদিকদের বলেন, আগামী সপ্তাহে সংরক্ষিত মহিলা আসনে তফসিল ঘোষণা করা হবে। জানা গেছে, প্রতি আসনের বিপরীতে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হলে ইসির পক্ষ থেকে ভোটাভুটির আয়োজন করা হবে। আর একজন করে প্রার্থী দেয়া হলে প্রত্যাহারের পরেই নির্বাচিত বলে ঘোষণা দেয়া হবে। আইন অনুযায়ী, যে দলের অনুকূলে যতটি আসন নির্ধারিত হবে দলগুলো সেই সব আসন প্রতি এক বা একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবে। তবে একজন করে প্রার্থী দেয়া হলে ভোটাভুটির প্রয়োজন হবে না। তবে আসন প্রতি একাধিক প্রার্থী থাকলে দলের সদস্যদের ভোটে একজন নির্বাচিত হবেন। জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন আইন ২০০৪ অনুযায়ী, গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনের জন্য ইসি দল ও জোটওয়ারি তালিকা তৈরি করবে এবং ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে। আগামী সপ্তাহে তফসিল ঘোষণার আগে প্রকাশ করা হবে ভোটার তালিকা। আইন অনুযায়ী, সংসদের সাধারণ আসনে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবে শপথগ্রহণকারী ব্যক্তিরাই সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনে ভোটার হবেন। জানা গেছে, সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্বাচনে ইসির পক্ষ থেকে দল বা জোটে যোগ দেয়ার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকে চিঠিও দেবে ইসি সচিবালয়। তফসিল ঘোষণার আগে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হবে। সংরক্ষিত নারী আসনের ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশনেই রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই, প্রত্যাহার ও ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
×