ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নয়া পল্টনে পুলিশের গাড়ি পোড়ানো সেই যুবক গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ১১ জানুয়ারি ২০১৯

  নয়া পল্টনে পুলিশের গাড়ি পোড়ানো সেই যুবক  গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে গ্রেফতার হলো সেই বহুল আলোচিত যুবক ওয়াসিম। এই ছাত্রদল কর্মী গত বছরের ১৪ নবেম্বর রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের ওপর পরিকল্পিত হামলা ও পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয়ার সঙ্গে জড়িত। পুলিশের গাড়িতে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার সেই ভিডিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছিল। এ নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় চলতে থাকে। এমন তোলপাড়ের মধ্যেই বিএনপির তরফ থেকে বলা হয়েছিল, ছাত্রলীগের লোকজন পুলিশের গাড়িতে পরিকল্পিতভাবে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বিএনপি ও দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। মূলত পুলিশকে বিএনপির প্রতিপক্ষ করতেই এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে আওয়ামী লীগের তরফ থেকে। মিথ্যা ছবি দিয়ে ফেসবুকে তোলপাড় সৃষ্টি করা হয়েছিল। বুধবার রাতে রাজধানী ঢাকার পল্লবী থানাধীন উর্দুভাষী অবাঙালীদের বসবাসের ক্যাম্প যা বিহারী ক্যাম্প হিসেবে পরিচিত সেই এলাকা থেকে ওয়াসিমকে (২৮) গ্রেফতার করে পল্লবী থানা পুলিশ। ডিএমপির মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে যাকে পুলিশের গাড়িতে আগুন দিতে দেখা গেছে, গ্রেফতারকৃত ওয়াসিমই সেই যুবক। দুপুরে এক অনানুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোঃ আবদুল বাতেন জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপির তরফ থেকে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়। গত ১৪ নবেম্বর মনোনয়নপত্র বিতরণের মধ্যেই নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দুপুরের দিকে একটি বড় আকারের মিছিল থেকে পুলিশ ও পুলিশের গাড়ির ওপর হামলা চালানো হয়। পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার পর তার ওপর দাঁড়িয়ে উন্মত্ততা প্রকাশ করে। পুলিশকে মারধর করে। পুলিশের পাঁচজন কর্মকর্তা ও দুই জন আনসার সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২৩ সদস্য আহত হয়েছিলেন। এছাড়া পথচারী, বিএনপি নেতাকর্মীসহ অন্য মানুষ মিলিয়ে আহত হয়েছিলেন অন্তত ৫০/৬০ জন। আহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও ছিল অন্তত ১০ জন। এ ঘটনায় পল্টন মডেল থানায় ৩টি মামলা দায়ের করা হয় পুলিশের তরফ থেকে। মামলাগুলোর তদন্তকালে পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে সিসি ক্যামেরা ও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে। যাচাই-বাছাই শেষে পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া সেই যুবককে শনাক্ত করা হয়। তাকে দীর্ঘদিন ধরেই গ্রেফতারের চেষ্টা চলছিল। যদিও ঘটনার পরপরই বিএনপির তরফ থেকে বলা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা মাথায় হেলমেট পরে ওই হামলা চালিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। ওই সময় ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সবাই বিএনপি ও দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী। পুলিশের গাড়িতে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন দেয়া ওই যুবককেও শনাক্ত করা হয়। গ্রেফতারকৃত ওয়াসিমই সেই যুবক। ওয়াসিম গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করার কথা এবং ভিডিও ফুটেজ দেখে তা তার নিজের বলে স্বীকার করেছে। ওয়াসিমকে নিয়ে ওই ঘটনায় ১৪ জন গ্রেফতার হলো। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ওইদিন পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানসহ দুটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। জ্বালিয়ে দেয়া গাড়িটি মতিঝিল জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ব্যবহার করতেন।
×