ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার শপথ

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ১১ জানুয়ারি ২০১৯

 বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে অসাম্প্রদায়িক  দেশ গড়ার শপথ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সোনার বাংলা বিনির্মাণের অঙ্গীকারের মধ্যে বৃহস্পতিবার যথাযোগ্য মর্যাদায় সারাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন, স্মৃতিচারণ, আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিলসহ প্রতিটি অনুষ্ঠানেই জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতামুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের দৃঢ় শপথ ব্যক্ত করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু ভবনের ভেতরে যান এবং সেখানে বেশ কিছুক্ষণ সময় অতিবহিত করেন। শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডাঃ দীপু মনি, সংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, এনামুল হক শামীম, প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর পাকিস্তানের অন্ধকার কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু প্রথমে লন্ডন ও পরে দিল্লী হয়ে ১৯৭২ সালের এই দিনে স্বদেশের প্রিয় মাটিতে ফিরে আসেন। দিবসটি উপলক্ষে ধানম-ি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় এবং সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। ভোর সাড়ে ৬টার দিক থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা মিছিল করে ৩২ নম্বর সড়কের পূর্ব ও পশ্চিম পাশের মোড়ে জমায়েত হতে থাকেন। সকাল ৭টার মধ্যেই সর্বস্তরের মানুষের ভিড়ে কানায়-কানায় পূর্ণ হয়ে যায় ৩২ নম্বর সড়ক ও আশেপাশের এলাকা। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধানমন্ত্রীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকা ত্যাগ করার পর সর্বস্তরের নারী-পুরুষ বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্যদিয়ে বাঙালী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। সকাল ১০টার মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ফুলে-ফুলে ভরে যায়। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন দিনটি উপলক্ষে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, দোয়া, ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা করেন না, সদ্য অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ তাদের চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। আগামী দিনে আন্দোলন করলেও জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। তিনি বলেন, একজন রাজনীতিকের জীবনে মানুষের ভালবাসার চেয়ে বড় সম্পদ আর কিছু নেই। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকেও আমরা মানুষকে ভালবাসার শিক্ষা পেয়েছি। কাজেই আজ থেকে আমরা এই শপথই নেব, বঙ্গবন্ধুর সততা ও সাহসের আদর্শকে আমরা ধারণ করব এবং আমাদের শপথ হবে, আমরা মাটির কাছে থাকব, মানুষের কাছে থাকব, মানুষের কাজে থাকব এবং জনস্বার্থে কাজ করে যাব। আওয়ামী লীগ জাতির পিতার আদর্শকে বুকে ধারণ করেই গণমানুষের কাতারে গিয়ে কাজ করবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর সততা ও সাহসের দৃষ্টান্তকে আমরা ধারণ করব। এছাড়া আমাদের শপথ হবে আমরা মাটির কাছে থাকব, মানুষের কাছে থাকব। মানুষের কাজে থাকব।
×