ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ম্যানচেস্টার সিটির গোলোৎসবে বার্টনের বেইজ্জতি

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ১১ জানুয়ারি ২০১৯

 ম্যানচেস্টার সিটির গোলোৎসবে বার্টনের বেইজ্জতি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তাই বলে এতটা নির্দয় হবেন জেসুস, ব্রুইনে, মাহরেজরা! ইংলিশ লীগ কাপের সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচে তৃতীয় সারির দল বার্টন এ্যালবিওনকে ৯-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি। বুধবার রাতে সিটির মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের পুরোটা সময়ই গোলোৎসবে ব্যস্ত ছিলেন পেপ গার্ডিওলার শিষ্যরা। এতে নেতৃত্ব দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড গ্যাব্রিয়েল জেসুস। ম্যাচের আগে তার সেরা একাদশে খেলা নিয়ে নেতিবাচক কথা হয়। এ কারণেই বোধ হয় হ্যাটট্রিকসহ একাই চার গোল করে তার জবাব দিয়েছেন জেসুস। বিজয়ী দলের বাকি পাঁচ গোলদাতা কেভিন ডি ব্রুইনে, ওলেকসান্দের জিনচেঙ্কো, ফিলিপ ফোডেন, কাইল ওয়াকার ও রিয়াদ মাহরেজ। অপ্রতিরোধ্য এই জয়ে ফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সিটি। ২৩ জানুয়ারি বার্টনের মাঠে শেষ চারের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি নিতান্তই নিয়ম রক্ষার হতে চলেছে এটা বলাই যায়! আক্রমণভাগে জায়গা পেতে সার্জিও এ্যাগুয়েরোর সঙ্গে জেসুসকে লড়াই করতে হবে। ম্যাচের আগে এমনটাই বলেছিলেন সিটি কোচ গার্ডিওলা। দুর্দান্ত পারফর্মেন্সে দাবিটা জোরালো করেছেন ২১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। নিজেদের মাঠে ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই এগিয়ে যায় সিটি। বাঁ দিক থেকে ডেভিড সিলভার বাড়ানো ক্রসে নিখুঁত হেডে জাল খুঁজে নেন বেলজিয়ামের মিডফিল্ডার ডি ব্রুইনে। ৩০ মিনিটে লেরয় সানের শট গোলরক্ষক ফেরানোর পর জেসুসের হেড জালে জড়ায়। চার মিনিট পর গিনদোয়ানের বানানো সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্কোরলাইন ৩-০ করেন জেসুস। ৩৭ মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে জিনচেঙ্কো গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে লক্ষ্যভেদ করলে চার গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। বিরতির পর ৫৭ মিনিটে সিলভার ক্রসে হেডে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন জেসুস। এরপর ৬২ মিনিটে ফোডেন, তিন মিনিট পর আবার জেসুস আর ৭০ মিনিটে ওয়াকারের লক্ষ্যভেদে দুই হালি গোল পূর্ণ করে সিটিজেনরা। ৮৩ মিনিটে বার্টনের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন সাবেক লিচেস্টার সিটি ফরোয়ার্ড রিয়াদ মাহরেজ। এই ম্যাচে অনেকগুলো গৌরবময় রেকর্ড গড়েছে সিটি। ইংলিশ লীগ কাপের ইতিহাসে সেমিতে এই প্রথম ৯-০ গোলের জয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়। তাছাড়া ১৮৭১-৭২ মৌসুমে এফএ কাপের ম্যাচে এমন ফলাফলের পর এই প্রথম এত বড় জয়। টানা দুই ম্যাচে ৭ বা তার বেশি গোল করে ৫১ বছরের একটি রেকর্ডও স্পর্শ করেছে ম্যানসিটি। ১৯৬৭ সালে লিডস ইউনাইটেড সাপোরা লুক্সেমবার্গকে ৯-০ গোলে হারানোর আগে চেলসিকে হারিয়েছিল ৭-০ গোলে। কোচ হিসেবে এটি গার্ডিওলার জন্য যৌথভাবে সর্বোচ্চ বড় জয়। এর আগেরটি ছিল ২০১১ সালে, বার্সিলোনার হয়ে। ওই ম্যাচে লা’হসপিটালেটকে ৯-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন মেসি-ইনিয়েস্তারা। ১৯৮৭ সালের পর প্রথমবারের মতো ৯ গোল করেছে ম্যানসিটি। ওই বছর হার্ডার্সফিল্ড টাউনকে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে ১০-১ গোলে হারিয়েছিল তারা। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ব্রাজিলের পালমেইরাস থেকে সিটিতে যোগ দেয়া জেসুস শুরুতেই নজর কাড়েন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে প্রথম দুই ম্যাচে তিনটি গোল করেন তিনি। ফলে ওই সময়ে কয়েক ম্যাচ এ্যাগুয়েরোকে বেঞ্চে রেখে জেসুসকে নিয়ে একাদশ সাজিয়েছিলেন দলটির কোচ গার্ডিওলা। দ্রুতই অবশ্য স্প্যানিশ কোচের পরিকল্পনার সঙ্গে মানিয়ে নেন ২০১১ সালে এ্যাটলেটিকো থেকে সিটিতে আসা এ্যাগুয়েরো। যে কারণে জেসুস-এ্যাগুয়েরোর লড়াই বেশ জমে উঠে। আর সাম্প্রতিক সময়ে বেশিরভাগ সময় বেঞ্চে বসে থাকতে হচ্ছে জেসুসকে। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের জন্য কাজটা সহজ হয়ে যায়, গত মৌসুমের মাঝামাঝি জেসুস হাঁটুর লিগামেন্টে চোট পাওয়ায়। এরপর এ্যাগুয়েরোই নিয়মিত সেরা একাদশে খেলে যাচ্ছেন। এ কারণেই গার্ডিওলা বলেছিলেন, সেরা একাদশে খেলতে জেসুসকে লড়াই করতে হবে। বলার ঘণ্টাখানেক বাদেই চার গোল করে মোক্ষম জবাব দিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। এখন তাই গার্ডিওলাকে মধুর সমস্যাতেই পড়তে হবে এটা নিশ্চিত করে বলা যায়।
×