ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘খনা’ নাটক নিয়ে ভারত গেল বটতলা

প্রকাশিত: ০৭:৪১, ১০ জানুয়ারি ২০১৯

‘খনা’ নাটক নিয়ে ভারত গেল বটতলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ির রবীন্দ্রভবন মঞ্চে আগামীকাল ১১ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে তিন দিনের এক নাট্যোৎসব শুরু হচ্ছে। উৎসবের উদ্বোধনী দিনে বাংলাদেশের বটতলার নন্দিত প্রযোজনা ‘খনা’ নাটকের মঞ্চায়ন হবে। এদিন ‘খনা’ নাটকের ৬৬তম প্রদর্শনী হবে বলে জানা গেছে। উৎসবে অংশ নিতে বটতলার ১৮ সদস্যের একটি টিম গতকাল বুধবার বাংলাদেশ থেকে ভারতের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছে। বটতলার ‘খনা’ নাটকটি রচনা করেছেন সামিনা লুৎফা নিত্রা ও নির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ আলী হায়দার। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে নিয়মিত অভিনয় করেন সামিনা লুৎফা নিত্রা, ইমরান খান মুন্না, কাজী রোকসানা রুমা, ইভান রিয়াজ, তৌফিক হাসান, শেউতি শাগুফতা, মিজানুর রহমান, সুমিত তেওয়ারি রানা, ম. সাঈদ, পঙ্কজ মজুমদার, হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, হুমায়ূন আজম রেওয়াজ, নাফিউল ইসলাম, হাফিজা আক্তার ঝুমা। ‘খনা’ নাটকে সুর ও সঙ্গীতে আছেন শারমিন ইতি, হুমায়ূন আজম রেওয়াজ, শেউতি শাগুফতা, লোচন পলাশ, ‘খনা’ নাটকের নেপথ্যে মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনা আবু আউদ আশরাফী, সুর ও সঙ্গীত পরিকল্পনা ব্রাত্য আমিন, শারমিন ইতি ও জিয়াউল আবেদীন রাখাল, পোশাক পরিকল্পনা তাহমিনা সুলতানা মৌ ও তৌফিক হাসান ভূঁইয়া, কোরিওগ্রাফি মোহাম্মদ রাফি ও নাসির উদ্দিন নাদিম, প্রপস হুমায়রা আখতার এবং পোস্টার তৌহিন হাসান। ‘খনা’ কাহিনীতে দেখা যায় এক বিদুষী ‘খনা’ যার অন্য নাম লীলাবতী। তার গল্পটা অনেক পুরনো, কিংবদন্তির ঘেরাটোপে বন্দী। তবু যেটুকুর তল খুঁজে পাওয়া যায় তাতে বোধ হয় যে তিনি এক বিদুষী জ্যোতিষী, স্বামী মিহিরও একই বৃত্তিধারী। শ্বশুর যশস্বী জ্যোতিষী বরাহ মিহির। পুত্রজায়ার যশ, খ্যাতি ও বিদ্যার প্রভাব দর্শনে বরাহের হীনমন্যতা ও ঈর্ষা। শ্বশুরের নির্দেশে লীলাবতীর জিহ্বা কর্তন ও তার ‘খনা’ হয়ে ওঠার গল্প পেরিয়েছে প্রজন্মের সীমানা। খনার বচনের মাঝে টিকে থাকা শত বছরের আগের জল, মাটি, ফসল আর মানুষের গন্ধ মাখা জ্ঞান আর সত্যটুকু কি সত্যি লীলাবতীর? নাকি এ সত্য-তথ্য সবই এ ভূ-খ-ের বৃষ্টি, পলি, আর জল হাওয়ার সঙ্গে মিশে থাকা যুগান্তরের সামষ্টিক জ্ঞানের সংকলন? লীলাবতী শুধুই কি একজন নারী বলে তার পরিণতি নির্মম, নাকি তিনি নারী হয়ে মিশেছিলেন চাষাভুষোর সনে, সেই তার কাল। পুরুষতন্ত্র না শ্রেণী কাঠামো, নাকি উভয় দাঁড়ায় লীলাবতীর বিপ্রতীপে। মিহির বা প্রাকৃত লোকালয় কারোর পরোয়া না করা জীবন ত্যাগী নেশার ঘোর তাকে নিয়ে যায় দিগন্তের ওপার। খনার সত্য শুধু থেকে যায় কৃষকের মুখে। তবু প্রশ্ন থাকে, খনার সত্যই কি একক সত্য? নাকি আজকে নির্ভুল যা কাল তা হতে পারে অসত্য? শুধু সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোর যে মৃত্যুনেশা তার সে নেশা কি এক রোখা জেদ? খনা নিজেই নিজেকে সম্মুখীন প্রশ্ন করেন।
×