ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে ক্লাবগুলোর প্রস্তুতি

রহমতগঞ্জের লক্ষ্য সেরা ছয়ে থাকা ...

প্রকাশিত: ০৭:১১, ১০ জানুয়ারি ২০১৯

রহমতগঞ্জের লক্ষ্য সেরা ছয়ে থাকা ...

রুমেল খান ॥ একটা সময় ছিল যখন প্রিমিয়ার ফুটবল লীগে মোহামেডান-আবাহনীর পয়েন্ট কেড়ে নিত পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ক্লাব রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। নিজেদের তারা প্রতিষ্ঠিত করেছিল ‘জায়ান্ট কিলার’ হিসেবে। যদিও তাদের আরও একটি স্থানীয় ও মজার নিকনেম আছে। সেটা হচ্ছে ‘ডাইলপট্টি’। ১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পুরনো ঢাকার এই ক্লাবটি। বয়সের বিচারে তারা ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানের চেয়েও তিন বছরের সিনিয়র। ২০১৩ মৌসুমে ডাইলপট্টিরা বাজে খেলার খেসারত দেয় প্রিমিয়ার লীগ থেকে অবনমিত হয়ে। পরের বছরই অবশ্য বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লীগের শিরোপা জিতে আবারও সর্বোচ্চ স্তরে উঠে আসে। তবে রেলিগেশন হতে হতেও অনেকবারই বেঁচে গিয়েছে ক্লাবটি। ৮৬ বছরের ইতিহাসে ক্লাবটি বহুবারই গিয়েছে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে। পাতানো খেলার অভিযোগে ক্লাবটি বাফুফে কর্তৃক শাস্তি পেয়েছে কয়েকবার। ক্লাবের কর্মকর্তা-খেলোয়াড়ও নিষিদ্ধ হয়েছেন। ফলে ক্লাবটি হয়ে পড়ে ছন্নছাড়া। সাংগঠনিকভাবেও হয়ে পড়ে দুর্বল। ক্লাব কর্তৃপক্ষ আপ্রাণ চেষ্টা করছে ক্লাবের হারানো সুনাম আবারও ফিরিয়ে আনতে। দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বাফুফের বয়সভিত্তিক দলের সাবেক তারকা কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানীকে। আসন্ন প্রিমিয়ার লীগে অবশ্য শিরোপায় চোখ নেই রহমতগঞ্জের। বাস্তবতা উপলব্ধি করেই গতবার কোনমতে রেলিগেশন এড়ানো দলটি এবার থাকতে চায় টেবিলের মধ্যভাগে। নির্দিষ্ট করে বললে সেরা ছয়ে। দলবদলে বড় নাম যোগ না হলেও তাদের আশা দেখাচ্ছে বিদেশীরা। মাঝমাঠকে প্রাধান্য দিয়ে ছোট পাসে খেলার লক্ষ্য কোচের। দেশের অন্যতম প্রাচীন ক্লাব রহমতগঞ্জ। তবে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির দেশের ফুটবলে নেই বড় কোন সাফল্য। প্রিমিয়ার লীগে বরাবরই নিচের সারিতে অবস্থান পুরান ঢাকার ক্লাবটির। একটা ‘মোটামুটি’ সাফল্য অবশ্য আছে। তৎকালীন ঢাকা লীগে ১৯৭৭ সালে তারা রানার্সআপ হয়েছিল (সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আবাহনী ক্রীড়াচক্র)। সেটাই শেষ। এরপর এ রকম কোন সাফল্যের ধারে কাছেই যেতে পারেনি তারা। এই মৌসুমে ফেডারেশন কাপে গ্রুপপর্বেই বিদায়। স্বাধীনতা কাপে কোয়ার্টার ফাইনালে হারতে হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের কাছে। বিপিএলে হতাশা ভুলে ভাল কিছুর আশায় রহমতগঞ্জ। নেতৃত্বে ক্লাবটির পরিচিত মুখ ফয়সাল। রক্ষণে শাকিল, মাঝ মাঠে জামাল আহমেদ, যাদের জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। মাসুদ রানা, চৌমরিন রাখাইনদের আক্রমণভাগের দায়িত্ব। সঙ্গে ফরেন রিক্রুট কঙ্গোর সিও জুনাপিও, দুই নাইজিরিয়ান মানডে ও দামিয়ান আর জাপানিজ আতসুসি। রহমতগঞ্জের স্ট্রাইকার সিও জুনাপিও বলেন, ‘এই দলে সবার মধ্যে জয়ের ক্ষুধা রয়েছে। সবাই সেরাটা দিতে চায়। সেটা করতে পারলে শিরোপা জেতাও অসম্ভব নয়। আমিও তাই চাই, আর অবশ্যই চাই লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে।’ দলের কোচ জিলানী। ১০ বছর পর আবারও ক্লাব ফুটবলের কোচিংয়ে ফেরা এই কোচ চাইছেন, ছোট পাসে খেলার কৌশল রপ্ত করা। মাঝ মাঠকেই প্রাধান্য দিতে চান এই অভিজ্ঞ কোচ। দলকে খেলাতে চান ৪-২-৩-১ ফরমেশনে। শিরোপার আশা করাটা যে বাড়াবাড়ি তা ভালমতোই জানা আছে রহমতগঞ্জ কোচ ও অধিনায়কের। তাই মাঝারি দল নিয়ে টেবিলের মাঝামাঝিতে থাকাই লক্ষ্য তাদের।
×