ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দ্রুত গার্মেন্টসে বেতনের অসঙ্গতি দূর করা হবে ॥ টিপু মুনশি

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১০ জানুয়ারি ২০১৯

দ্রুত গার্মেন্টসে বেতনের অসঙ্গতি দূর করা হবে ॥ টিপু মুনশি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পোশাক খাত শ্রমিকদের বেতনের অসঙ্গতি দ্রুত দূর করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নবনিযুক্ত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, নতুন মজুরি কাঠামোর কারণে কোন শ্রমিকের বেতন কমে গেলে তা আগামী এক মাসের মধ্যে সমন্বয় করা হবে। তবে শ্রমিকদের এই আন্দোলনে বাইরের লোকের ইন্ধন রয়েছে কি-না সরকারের পক্ষ থেকে তা কঠোরভাবে মনিটর করা হচ্ছে। বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে গার্মেন্টস খাতের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে জরুরী সংবাদ সম্মেলন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ওই সময় তিনি শিল্পখাত বাঁচাতে শ্রমিকদের ধৈর্য ধারণ করে কাজে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের সকল সমস্যা সমাধানে সরকার আন্তরিক। এ কারণে নতুন বেতন কাঠামোর অসঙ্গতি দূর করতে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। যেই কমিটিতে সরকারের পাশাপাশি শ্রমিক প্রতিনিধিরাও রয়েছেন। শুধু তাই নয়, নতুন বেতন কাঠামোর কারণে কোনো শ্রমিকের বেতন কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে তা সমন্বয় করে পরিশোধ করা হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন বেতন কাঠামোর অসঙ্গতি দূর করতে শ্রমিক পক্ষের পাঁচজন, মালিক পক্ষের পাঁচজনসহ শ্রম এবং বাণিজ্য সচিবের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি কাজ করবে। এই কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতনের বিষয়ে আর কোন সমস্যা থাকবে না। তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সমস্যা নিরসনে প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও কারখানা ভাঙচুর কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, এ ধরনের আন্দোলনে অনেক সময় বাইরের লোক ঢুকে যায়। সে বিষয়টি সরকার কঠোরভাবে মনিটর করছে। তিনি বলেন, গার্মেন্টস খাতে কোন কিছু হলেই শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসে এটা ঠিক নয়। বেতনের বিষয়টি নিয়ে সরকার গঠিত কমিটি কাজ শুরু করে দিয়েছে। তাই এ মুহূর্তে এ ধরনের আন্দোলন ঠিক নয়। নিজেদের স্বার্থে শ্রমিকদের কাজে ফিরে যাওয়া উচিত। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন যাবত নতুন মজুরি কাঠামো নিয়ে আন্দোলন করছে গার্মেন্টস শ্রমিকরা। বুধবারও গাজীপুর, সাভারসহ ঢাকার কয়েকটি স্থানে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে। পোশাক কারখানার শ্রমিকরা এ সময় বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও মহাসড়ক অবরোধ করছে। এদিকে দেশের রফতানি আয়ের প্রধান পোশাক খাত শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করে গত ২৫ নবেম্বর গেজেট প্রকাশ করে সরকার। ডিসেম্বরের ১ তারিখ থেকে তা কার্যকর করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। তবে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি ও অন্যান্য খাতের শ্রমিকদের মজুরির বিবেচনায় পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা করার দাবি ছিল বিভিন্ন বাম শ্রমিক সংগঠনের। সেই দাবি পূরণ না হওয়ায় বিক্ষোভ, মানববন্ধনের মতো কর্মসূচী পালন করে আসছিল সংগঠনগুলো। তাদের অভিযোগ সরকার তাদের জন্য যে নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে দিয়েছে, মালিকপক্ষ সে অনুযায়ী বেতন দিচ্ছে না। বরং তাদের নানাভাবে অন্যায়-অবিচারের শিকার হতে হচ্ছে। টানা কয়েকদিনের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের নতুন সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নজান সুফিয়ান মঙ্গলবার বিকেলে গার্মেন্ট মালিক, শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন। ওই বৈঠকেই বেতনের অসঙ্গতি দূর করার জন্য একটি কমিটি করে দেয়া হয়। শ্রমিক-মালিক ও সরকারের ত্রিপক্ষীয় ও বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, গত ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া পোশাক শ্রমিকদের বেতন কাঠামোতে কোন বৈষম্য বা অসঙ্গতি থেকে থাকলে চলতি জানুয়ারি মাসের মধ্যেই তা সংশোধন করা হবে। ফেব্রুয়ারিতে সংশোধিত গ্রেডিংয়েই বেতন পাবেন শ্রমিকরা।
×