ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বাসযোগ্য না হলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলেও লাভ নেই

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ৯ জানুয়ারি ২০১৯

বিশ্বাসযোগ্য না হলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলেও লাভ নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নিজের অবস্থানের কোন পরিবর্তন হয়নি উল্লেখ করে ইসি মাহবুব তালুকদার মন্তব্য করেছেন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া একটা প্রাথমিক প্রাপ্তি। আসল কথা হচ্ছে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হচ্ছে কিনা এবং বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে কিনা। গ্রহণযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য না হলে অংশগ্রহণমূল হলে কোন লাভ নেই উল্লেখ করেন। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহ করা এক লিখিত বিবৃতিতে তিনি এই মন্তব্য করেন। ইসির বৈঠকে ভিন্ন মতপ্রকাশ, নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে বৈঠক ত্যাগ এবং নির্বাচনে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই মন্তব্য করে বিভিন্ন সময় বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন বিএনপিপন্থী বলে পরিচিত মাহবুব তালুকদার। শেষ পর্যন্ত গত ৩ জানুয়রি নির্বাচন পরবর্তী কমিশনের এক ধন্যবাদজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে এবারের নির্বাচন নিয়ে ভূয়সী প্রসংশা করেন। বলেন, আগের নির্বাচন অংশীদারিত্বমূলক হয়নি। এই প্রথম একটা অংশীদারিত্বমূলক, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পেরেছি। দেশের নির্বাচনের ইতিহাসে এই নির্বাচন একটা ঐতিহ্য সৃষ্টি করবে। এই নির্বাচন ধরেই পরবর্তী ইতিহাসে যে নির্বাচনের ধারা সেটা পরবর্তী সময়ে হয়তো ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ থাকবে উল্লেখ করেন। তবে মঙ্গলবার তার বিবৃতিতে এই অবস্থানেরও পরিবর্তন করেছেন তিনি। বলেন, বিগত ৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠানটি ছিল ধন্যবাদজ্ঞাপন অনুষ্ঠান। কাউকে প্রশংসাসূচক কথা বলে ধন্যবাদ জানানো হয় এবং সেটাই সৌজন্যের প্রকাশ। আমার ধন্যবাদজ্ঞাপন বক্তব্য রাজনৈতিকভাবে বিচার বিশ্লেষণ করা ঠিক হবে না। লিখিত বিবৃতিতে তিনি বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে নিজের অবস্থানের কোন পরিবর্তন হয়নি। ভোটের পর গত ৩ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে’ তার বক্তব্য ঘিরে সৃষ্ট ‘বিভ্রান্তি’ অবসানে মঙ্গলবার এক লিখিত বক্তব্যে একথা জানান তিনি। বলেন, তিনি সেদিন বলেছিলেন যে ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিয়েছি‘, এর সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন সম্পর্ক নেই। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত ৩ জানুয়ারিতে নির্বাচন কমিশনে আয়োজিত ‘ধন্যবাদজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে’ আমি যে বক্তব্য রাখি তাতে কিছু বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। অনেক সাংবাদিক আমাকে প্রশ্ন করেছেন, আমি আমার অবস্থান পরিবর্তন করেছি কিনা! এ সম্পর্কে বিভ্রান্তির অবসান ঘটাতে বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। আমি আমার বক্তব্যে বলেছি, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিয়েছি। ইতোপূর্বে ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখের বক্তব্যে আমি বলেছিলাম, ‘সব দল অংশগ্রহণ করলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলা হয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া একটি প্রাথমিক প্রাপ্তি। আসল কথা হচ্ছে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হচ্ছে কি না এবং বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে কি না? নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য না হলে অংশগ্রহণমূলক হলেও কোন লাভ নেই। নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ধন্যবাদজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে আমি কোন কথা বলিনি। কেমন নির্বাচন হয়েছে সাংবাদিকদের এহেন প্রশ্নের জবাবে আমি পূর্বে বলেছি, নিজেদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন, তাহলে এ প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন। এখনও আমি সেই কথাই বলি। আমার অবস্থানের কোন পরিবর্তন হয়নি। বিগত ৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠানটি ছিল ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠান। কাউকে প্রশংসাসূচক কথা বলে ধন্যবাদ জানানো হয় এবং সেটাই সৌজন্যের প্রকাশ। আমার ধন্যবাদজ্ঞাপন বক্তব্য রাজনৈতিকভাবে বিচার বিশ্লেষণ করা ঠিক হবে না। নির্বাচনের আগে গত ১৭ ডিসেম্বর ‘নির্বাচনে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই’ মাহবুব তালুকদারের এমন বক্তব্যে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে নির্বাচন কমিশন।
×