ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চীনে উত্তর কোরীয় নেতা

প্রকাশিত: ০৩:৪১, ৯ জানুয়ারি ২০১৯

চীনে উত্তর কোরীয় নেতা

উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন সোমবার চীন সফরে গেছেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের আমন্ত্রণে চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে স্ত্রী রি সোল-জু এবং সরকারের কয়েকজন উর্ধতন কর্মকর্তা তার সফরসঙ্গী হয়েছেন বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে। এ নিয়ে এক বছরের মধ্যে চতুর্থবারের মতো চীন সফরে গেলেন উন। এএফপি। ধারণা করা হচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্ভাব্য দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠকের জন্য মধ্যস্থতার প্রত্যাশা নিয়ে উন অঘোষিত বেজিং সফরে গেছেন। বিষয়টির প্রতি আন্তর্জাতিক মহলেরও দৃষ্টি রয়েছে। গত বছরও উনের প্রত্যেকটি চীন সফর ছিল অঘোষিত, আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি, সফর শুরুর পর অথবা উত্তর কোরিয়ায় ফিরে যাওয়ার পর দুইদেশ সফরের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করেছে। উন সোমবার ব্যক্তিগত ট্রেনে সস্ত্রীক চড়ে বসার পর থেকেই তার চীন সফর নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। মঙ্গলবার উনের ৩৫তম জন্মদিন বলে দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু গণমাধ্যম জানালেও পিয়ংইয়ং কখনই তার জন্ম তারিখ বা বয়স নিশ্চিত করেনি। চীন উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। দেশটির সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ের বাণিজ্য ও সহযোগিতার সম্পর্কও প্রবল। পিতার মৃত্যুর পর তিনি দেশটির নেতার দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেয়ার প্রথম ছয় বছরে একবারও তার চীন সফরের কথা শোনা যায়নি। তবে গত বছরই তিনি তিনবার বেজিং যান। গত জুনে তিনি সিঙ্গাপুরে ট্রাম্পের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকের আগে তিনি একবার চীনে যান। এবারের সফরে উত্তরের শীর্ষ নেতা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এবং কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে কথা বলবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। উনের চীন সফর তার সঙ্গে ট্রাম্পের দ্বিতীয় বৈঠকের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলেছে। ট্রাম্প চলতি সপ্তাহে ঘোষণা দেন যে দুইদেশের দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠকের স্থান শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে। ওয়াশিংটন সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ‘ভাল সংলাপ চলছে’। পিয়ংইয়ংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকছে। অন্যদিকে বছরের শুরুতে দেশবাসীর উদ্দেশে দেয়া ভাষণে কিম পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কথা বললেও যুক্তরাষ্ট্র যদি নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেয় তাহলে দিক বদলানোর হুঁশিয়ারি দেন। ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর দি ন্যাশনাল ইন্টারেস্টের বিশ্লেষক হ্যারি জে কাজিয়ানিস বলেন, জুনে সিঙ্গাপুর বৈঠকের পর থেকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মূলত বাণিজ্য বিরোধের জন্য দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘উন বেজিং গেছেন মূলত শি’র সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক করার জন্য। উন ট্রাম্প প্রশাসনকে এটি দেখাতে চায় যে, ওয়াশিংটন অথবা সিউল পিয়ংইয়ংকে যে প্রস্তাবই দিক না কেন, তাদের সামনে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অন্যান্য বিকল্পও খোলা আছে। অন্যদিকে বেজিংও ওয়াশিংটনকে এটি দেখাতে চায় যে তাদের হাতে উত্তর কোরিয়া কার্ড আছে। এটি তারা যখন ইচ্ছা যেভাবে খুশি খেলতে পারে। চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমসে নাম উল্লেখ না করে বিশ্লেষকের বরাতে বলা হয়েছে, উন এখনও বিশ্বাস করেন যে, চীন অভ্যন্তরীণ ও কূটনৈতিক ইস্যুতে তাকে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করতে পারে।
×