ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রিজভীর অভিযোগ

খালেদার সঙ্গে স্বজনদের দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৮ জানুয়ারি ২০১৯

খালেদার সঙ্গে স্বজনদের দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কারাগারে বন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আত্মীয়-স্বজনদের দেখা করতে না দেয়ার অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, গত তিন সপ্তাহ যাবত খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে দেখা করার কোন অনুমতি দেয়নি কারা কর্তৃপক্ষ। আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে না দেয়ায় বন্দীদের আইনসম্মত অধিকার থেকে সরকারের নির্দেশে তাকে বঞ্চিত করছে কারা কর্তৃপক্ষ। সোমবার নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। বলেন, চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব, আত্মীয়-স্বজন ও দলের সিনিয়র নেতাদের সাক্ষাতের জন্য বার বার আবেদন করার পরও কারা কর্তৃপক্ষ কোন কর্ণপাত করছে না। কারাবিধি অনুযায়ী ৭ দিন পরপর বন্দীদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ আছে। অথচ দেশনেত্রীর ক্ষেত্রে এই বিধান করা হলো ১৫ দিন পর পর। এখন সেই বিধানকেও সরকারের নির্দেশে কারা কর্তৃপক্ষ অগ্রাহ্য করছে। তিনি বলেন, গত তিন সপ্তাহে আত্মীয়রা কেউ খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পাননি কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। এই নিষ্ঠুর আচরণ মুক্তিহীন বেগম জিয়াকে অন্তরীণ রেখে বাইরের দুনিয়া থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করার পাঁয়তারা। রীতিমতো কঠিন মানসিক নির্যাতন। এ নিয়ে শুধু তার আত্মীয়-স্বজনরাই নয়, দেশবাসী উদ্বেগাকুল ও উৎকণ্ঠিত। ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে দেয়ার যে কারাবিধান, সেটিকে গায়ের জোরে লঙ্ঘন করাটা বেগম জিয়াকে নিয়ে সরকারের আরেকটি নতুন কোন খারাপ পরিকল্পনা কি না সেই প্রশ্নটা আরও দীর্ঘতর হচ্ছে। পৃথিবীর কোন নিষ্ঠুর স্বৈরতান্ত্রিক দেশেও বন্দীদের সঙ্গে এরূপ দুর্ব্যবহার করা হয় না, যা করা হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম জিয়ার সঙ্গে। এ সময় তিনি একাদশ নির্বাচনের ফল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের বক্তব্যের সমালোচনা করেন করেন। বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন জনগণের ললাটে এক বিষাক্ত কাঁটা। অথচ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, এবারের নির্বাচনের শৃঙ্খলা আগামীবারেও থাকবে। আত্মমর্যাদাহীন, অনুশোচনাহীন, আজ্ঞাবাহী একজন মানুষের পক্ষে নির্বাচন নিয়ে এই ধরনের অঙ্গীকার করা ছাড়া আর কি-ই বা বলার থাকতে পারে। বিবেক বিক্রি করা এইচ টি ইমাম সাহেবরা মানুষের ভোট কেড়ে নিতে দ্বিধাহীন, নির্লজ্জ। মানবিক বিবেচনাগুলো এদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে। ক্ষমতা ধরে রাখতে পুলিশের বুটের তলায় মানুষের ভোটাধিকার চেপে দেয়ার যে কলঙ্কজনক দৃষ্টান্ত স্থাপনের পুনরাবৃত্তি করার অঙ্গীকার করলেন আগামী নির্বাচনের জন্য। বিএনপির এই নেতা বলেন, যারা বিবেক বিসর্জন দেয়, ন্যায়-অন্যায়ের এবং নৈতিকতার ধার ধারে না, কেবল তাদের দ্বারাই পূর্বে সংঘটিত যে কোন ঘৃণ্য কাজের পুনরাবৃত্তিই হওয়াই সম্ভব। জনগণের অধিকারের পক্ষে আমাদের উচ্চারণ থামবে না। জনগণের ওপর জবরদস্তি করে ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ওপর এই মানসিক নির্যাতনের উদ্দেশ্যই হচ্ছে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নানাভাবে পর্যুদস্ত করার পরিকল্পনারই অংশ। নির্বাচন পূর্বাপর ব্যাপক সহিংসতা, রক্তপাত, ধানের শীষের প্রার্থীদের ওপর গুলি, নেতাকর্মী-সমর্থকদের নির্বিচারে আক্রমণ করে রক্তাক্ত করাসহ ধানের শীষের প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদের পাইকারি হারে গ্রেফতার, আদালতকে ব্যবহার করে প্রার্থিতা বাতিলসহ ভোটের নামে নিষ্ঠুর তামাশায় শুধু দেশবাসীই নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও ক্ষুব্ধ ও প্রতিবাদে সোচ্চার। মানুষের ভোটাধিকার হরণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ন্যক্কারজনক ভূমিকায় দেশবাসী হতবাক ও ক্ষুব্ধ। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন জনগণের ললাটে এক বিষাক্ত কাঁটা। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু, শাহিদা রফিক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ।
×