ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

২৮ বছর পর ডাকসু গঠনতন্ত্র যুগোপযোগী করার সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৮ জানুয়ারি ২০১৯

২৮ বছর পর ডাকসু গঠনতন্ত্র যুগোপযোগী করার সিদ্ধান্ত

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালের ৬ জুন। প্রশাসনের নানা উদ্যোগ ও প্রতিশ্রুতির পরও গত ২৮ বছরে কোন নির্বাচন হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান চলতি বছরের ৩০ মার্চের মধ্যে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তারই প্রেক্ষিতে ২৮ বছর আগের গঠনতন্ত্রকে যুগোপযোগী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বর্তমান বাস্তবতার প্রেক্ষিতে ডাকসু গঠনতন্ত্রের প্রয়োজনীয় সংশোধনী কিংবা পরিমার্জনের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার ১০ জানুয়ারি ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল মোট ১৩টি ছাত্র সংগঠনকে নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা ডেকেছে কর্তৃপক্ষ। এর আগে সংগঠনগুলোর মতামত নিয়ে প্রয়োজনীয় সংশোধনী কিংবা পরিমার্জনের সুপারিশ প্রদানের জন্য ৫ সদস্যের কমিটি করে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম (এফএইচ) হলের প্রাধ্যক্ষ ও আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। মানবাধিকার কমিশনের সাবেক এই চেয়ারম্যান ছাড়াও কমিটিতে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার দা সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, কবি জসীম উদ্দীন হলের প্রাধ্যক্ষ ও আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ রহমত উল্লাহ, রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা এবং শামসুন নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সুপ্রিয়া সাহা। এছাড়া ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন-৪) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান কমিটিকে সার্বিক বিষয়ে সহায়তা প্রদান করবে। ড. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই জন্য ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনসমূহের সঙ্গে আগামী ১০ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন লাউঞ্জে বেলা ১১টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। চিঠিতে আরো বলা হয়, উক্ত সভায় উপস্থিত হয়ে অথবা লিখিতভাবে আপনার সংগঠনের বক্তব্য অথবা সুপারিশমালা উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ করছি। কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংখ্যা যেমন বেড়েছে, ঠিক তেমনি হল ও বিভাগের সংখ্যাও বেড়েছে। এছাড়াও আমাদের রয়েছে শতবর্ষের চ্যালেঞ্জ। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠুক -এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই গঠনতন্ত্র পরিমার্জন করার জন্যই কমিটি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সোমবার একটি সভা করেছি। ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর কাছে চিঠি পাঠানোর প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে। মতবিনিময় বৈঠক শেষে উপাচার্যের কাছে সুপারিশগুলো তুলে ধরা হবে। উপাচার্য সেটি সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করবেন। চিঠির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচনের পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। গঠনতন্ত্র পরিমার্জনের জন্য আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়েও একটি কমিটি করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের মোট ১৩টি ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ডাকসুকে সচল করাই আমাদের সবার প্রত্যাশা। একটি সুষ্ঠু ডাকসু নির্বাচনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করছি। ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে চিঠি পেয়েছি। যেহেতু ১৯৯৮ সালের পর গঠনতন্ত্র নিয়ে কাজ হয়নি, তাই বর্তমান বাস্তবতার প্রেক্ষিতে গঠনতন্ত্র যুগোপযোগী করা উচিত। সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনাসমূহ ১০ জানুয়ারির মতবিনিময় সভায় তুলে ধরব। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, চিঠি আমাদের হাতে এসেছে আজকে সোমবার। আমরা ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাদের নিয়ে আলোচনা করে আমাদের সুপারিশগুলো নির্ধারণ করব।
×