ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্রে বালু উত্তোলনের মহোৎসব

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ৮ জানুয়ারি ২০১৯

গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্রে বালু উত্তোলনের মহোৎসব

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা, ৭ জানুয়ারি ॥ গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। ওই সব নদী থেকে অবাধে প্রতিদিন শত শত ট্রাক বালু পরিবহন করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। মাঝে মধ্যে প্রশাসন থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হলেও বালু ব্যবসায়ীরা স্থান পরির্বতন করে আবারও নতুন করে বালু উত্তোলন শুরু করে থাকে। জানা গেছে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ব্রহ্মপুত্র নদ ও সদর উপজেলার গোঘাঘাট এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে কোন ধরনের ইজারা ছাড়াই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন শত শত ট্রাক বালু চলে যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন স্থানে। বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রভাবশালীদের নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বালু ব্যবসার নামে প্রতি সপ্তাহে লাখ লাখ টাকা ভাগাভাগি হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদের গোঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন বালু উত্তোলন করে ৭/৮টি ট্রাক্টর বা কাঁকড়ায় বিভিন্ন জায়গায় তা পরিবহন করা হচ্ছে। প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু হয় বালু উত্তোলনের মহোৎসব, চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। ওই এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্ব একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলছে বালুর জমজমাট ব্যবসা। ইজারা ছাড়াই জেলার নদ-নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে অনেকেই বিপুল পরিমাণ টাকার মালিক হলেও সরকার মোটা অংকের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গভীর গর্ত করে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করায় বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙ্গন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নদী তীরবর্তী মানুষ। এছাড়া নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে নদীর তীরবর্তী বসতবাড়িসহ ফসলি জমি। এছাড়া খোলা ট্রাক্টরে (কাঁকড়া) বালু পরিবহন ও স্তূপ করে রাখা বালুর কারণে স্বাস্থ্যগত সমস্যার মুখে পড়ে এলাকাবাসী। অথচ ২০১০ সালের বালুমহাল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশে কোন উন্মুক্ত স্থান বা নদনদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সরকারী- বেসরকারী স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। এ আইন অমান্যকারীদের জেল-জরিমানারও বিধান রয়েছে। এ বিষয়ে কামারজানি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জাকির জানান, একাধিকবার নিষেধ করা সত্ত্বেও বালু ব্যবসায়ীদের নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না।
×