ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনাকে হারিয়ে জয়ে ফিরল মাশরাফির রংপুর

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ৭ জানুয়ারি ২০১৯

 খুলনাকে হারিয়ে জয়ে ফিরল মাশরাফির রংপুর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথম ম্যাচে দিনের আলোয়, দ্বিতীয় ম্যাচে কৃত্রিম আলোয় আগে ব্যাটিং করে দিন-রাতের পার্থক্যটা বুঝেছে রংপুর রাইডার্স। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) গত আসরে চ্যাম্পিয়নরা ৯৮ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল প্রথম ম্যাচে, তাই হারতে হয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে রবিবার রাতে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে রাইলি রুশোর অপরাজিত ৭৬ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৩ উইকেটে ১৬৯ রান তুলেছিল রংপুর। শেষ পর্যন্ত ৮ রানে খুলনা টাইটান্সকে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফিরেছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। যদিও পল স্টারলিং ও জুনায়েদ সিদ্দিকীর ৯০ রানের উদ্বোধনী জুটিতে জয়ের ভিত পেয়ে গিয়েছিল খুলনা। কিন্তু ৬১ রান করে স্টারলিংয়ের বিদায় এবং রংপুরের বোলারদের দারুণ প্রত্যাবর্তনে ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় তারা। সবাই বলেন মিরপুরের রহস্যময় উইকেটে রান করার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার রুশোর হাত স্ট্রোকসমৃদ্ধ হলেও তিনি বিষয়টি মনেপ্রাণে রপ্ত করতে পেরেছেন এক ম্যাচ খেলেই। এদিনও বিধ্বংসী ক্রিস গেইল রংপুরের একাদশে থাকলেন অনুপস্থিত। কিন্তু রুশো তার অভাব বুঝতে দেননি। যদিও তার ওপেনিং সঙ্গী মেহেদী মারুফ (৫) আগের মতোই ব্যর্থ হলেন অহেতুক তুলে মারতে গিয়ে। তবে রুশোর সতর্ক ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৪২ রান তুলতে সক্ষম হয় রংপুর। এর মধ্যে শরিফুল ইসলামের করা ষষ্ঠ ওভারে ১৩ রান তুলে নেন এ্যালেক্স হেলস-রুশো। খুলনার হয়ে এই ৬ ওভার দারুণভাবে সামাল দিয়েছেন মূলত যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত পেসার আহসান আলী খান ২ ওভারে একটি মেডেনে ২ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে। ওয়ানডাউনে আসা হেলসও বেশিদূর যেতে পারেননি, আউট হয়েছেন ৯ বলে ১৫ রান করে। এরপর মোহাম্মদ মিঠুন এসে কিছুটা চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাকেও কার্লোস ব্রেথওয়েটের শিকার হতে হয়েছে দশম ওভারে ১৭ বলে ৩ চারে ১৯ রান করার পর। প্রথম ১০ ওভারে ৩ উইকেটে ৬৬ রান নিয়ে কিছুটা চাপেই পড়ে রংপুর। তখন ২০ বলে মাত্র ১ চারে ১৯ রান করেছেন রুশো! তবে রবি বোপারার সঙ্গে ঝড়োগতির এক জুটি গড়ে তোলেন। বিধ্বংসী রূপে আবির্ভূত হন ইনিংসের ১৬তম ওভারে। আলী খানকে ছক্কা হাঁকিয়ে অর্ধশতক পূর্ণ করেন রুশো। আলী ওই ওভারে দেন ১৬ রান। ১৮তম ওভারে ব্রেথওয়েটকে পিটিয়ে ২১ ও শেষ ওভারে আলীকে তুলোধুনো করে ১৭ রান তুলে নেন রুশো-বোপারা । চতুর্থ উইকেটে রুশো-বোপারার মাত্র ৬১ বলে ১০৪ রানের অবিচ্ছন্ন জুটিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬৯ রানের বড় সংগ্রহ পায় রংপুর। শেষ ৫ ওভারেই আসে ৬৭ রান! ৫২ বলে ৮ চার, ২ ছক্কায় ৭৬ রানে রুশো এবং ২৯ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ৪০ রানে বোপারা অপরাজিত থাকেন। জবাব দিতে নেমে খুলনার হয়ে শুরুটা বেশি দ্রুতগতিতে করেছিলেন পল স্টারলিং ও জুনায়েদ সিদ্দিকী। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে তারা তুলে নেন ৬১ রান। মাশরাফি ২ ওভারে ১৯, শফিউল ইসলাম ১ ওভারে ১৯ আর সোহাগ গাজী ৩ ওভারে দেন ২১ রান। ইনিংসের অর্ধ সময়ে লক্ষ্যের মাঝামাঝি পৌঁছে যায় খুলনা ১০ ওভারে বিনা উইকেটে ৮৫ রান তুলে। তবে নাজমুল ইসলাম অপু ও ফরহাদ রেজার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে এরপর কিছুটা খেলায় ফেরে রংপুর। ১২তম ওভারে বেনি হাওয়েলের বলে জুনায়েদ ৩০ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ৩৩ রান করে সাজঘরে ফিরলে ৯০ রানের জুটি ভাঙ্গে। পরের ওভারেই নাজমুল হোসেন শান্তও (১) আউট হয়ে যান। তবে স্টারলিং অর্ধশতক হাঁকান, তিনি অবশ্য ১৪তম ওভারে মাশরাফির বলে লাইন হারিয়ে বোল্ড হয়ে যান। স্টারলিং ৪৬ বলে ৮ চার, ১ ছক্কায় ৬১ রান করেছিলেন। এরপর রিয়াদ-আরিফুল জুটি দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। তবে ফরহাদের ১৮তম ওভারেই খেলার গতি পাল্টে যায়। ওই ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে ১৭ বলে ২৪ করা রিয়াদকে সাজঘরে পাঠান তিনি। শেষ ১২ বলে জিততে ৩০ রানের প্রয়োজন পড়ে খুলনার। সেটি আর পারেনি তারা রংপুরের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে। দুই ওভারে ২১ রান তুলে ৫ উইকেটে ১৬১ রান তুলতে সক্ষম হয় খুলনা। ২ উইকেট নেন ফরহাদ। স্কোর ॥ রংপুর রাইডার্স ইনিংস- ১৬৯/৩; ২০ ওভার (রুশো ৭৬*, মারুফ ৫, হেলস ১৫, মিঠুন ১৯, বোপারা ৪০*; তাইজুল ০/১৮, আলী ১/৩৫, শরিফুল ০/৩০, জহির ১/৩০, ব্রেথওয়েট ৬, ১/৩৯, রিয়াদ ০/৬)। খুলনা টাইটান্স ইনিংস- ১৬১/৫; ২০ ওভার (স্টারলিং ৬১, জুনায়েদ ৩৩, শান্ত ১, রিয়াদ ২৪, আরিফুল ১২, ব্রেথওয়েট ৬*, জহুরুল ১২*; মাশরাফি ১/৩৫, সোহাগ ০/২১, শফিউল ২/৪৪, অপু ০/১২, ফরহাদ ১/২৮, হাওয়েল ১/১৯)। ফল ॥ রংপুর রাইডার্স ৮ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ রাইলি রুশো (রংপুর রাইডার্স)।
×