ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংবাদ সম্মেলনে আসম রবের ঘোষণা

ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত ৭ জনের কেউ শপথ নেবেন না

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৭ জানুয়ারি ২০১৯

  ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত ৭ জনের কেউ শপথ নেবেন না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচিত ৭ জনের মধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেউ শপথ নেবেন না বলে জানিয়েছেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব। রবিবার দুপুরে আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের মতিঝিল চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুও বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত কেউ শপথ নেবেন না। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভবিষ্যত কি? এমন এক প্রশ্নের জবাবে জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভাঙ্গার কোন প্রশ্নও আসে না। জনগণের স্বার্থে গণতন্ত্র রক্ষায় যে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে তা স্থায়ী থাকবে। তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্ট ছিল, আছে এবং থাকবে। ঐক্যফ্রন্ট জনগণের দাবি আদায়ে যে আন্দোলন করে আসছিল, সেই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আগামী মঙ্গলবার মিটিং আছে সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, শনিবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে গণফোরামের বর্ধিত সভায় ড. কামাল হোসেনের একটি বক্তব্য গণমাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ড. কামাল হোসেন কোনভাবে বলেননি গণফোরাম থেকে নির্বাচিতরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন। এর সংশোধনীর জন্য ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রেস রিলিজ পাঠানো হয়েছে। আশা করি, এ প্রশ্নে আর কোন ভুল বোঝাবুঝি থাকবে না। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণ প্রশ্নে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে বিন্দুমাত্র অনৈক্য নেই। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আগের চাইতেও আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ আছে এবং থাকবে। মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, আমরা আবারও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের নামে প্রহসন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সেদিনেই প্রত্যাখ্যান করেছে। এ প্রহসনের নির্বাচন আবারও প্রমাণ করেছে এদেশে দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আন্দোলন কর্মসূচী চালিয়ে যাবে। গণফোরামের নির্বাচিত দু’জন শপথ নেয়ার বিষয়ে আমরা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেব- ড. কামাল হোসেনের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে মন্টু বলেন, ইতিবাচকতা মানে এই নয় যে শপথ নেবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে ৮ জানুয়ারি নতুন কর্মসূচী দেয়া হতে পারে বলেও জানান মন্টু। তিনি বলেন, সেদিন আমরা আবার বসব। সেদিন সিদ্ধান্ত হবে নতুন কর্মসূচী সম্পর্কে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এ জোটের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, হাবিবুর রহমান খোকা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরউল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ। উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণফোরাম থেকে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর মৌলভীবাজার-২ আসনে এবং মোকাব্বির খান সিলেট-২ আসনে নির্বাচিত হন। আর বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন বগুড়া-৬ আসনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে জাহিদুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আমিনুল ইসলাম ও চাঁপাই নবাবগঞ্জ-৩ আসনে হারুনুর রশীদ। আর বগুড়া-৭ আসনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে রেজাউল করিম বাবলু নির্বাচিত হলেও তিনি ইতোমধ্যেই জাতীয় সংসদের স্পীকারের কাছে শপথ নিয়েছেন। প্রসঙ্গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে নির্বাচনের ফল দেখেই ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি নির্বাচিত ৭ জন শপথ নেবেন না বলে জানিয়ে দেন। পরে ৩ জানুয়ারি বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সকল প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জোটের সিনিয়র নেতারা সাংবাদিকদের জানান বৈঠকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত ৭ জনের শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যেক প্রার্থী নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করা ও নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে জাতিসংঘ ও কমনওয়েল্থসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওইদিনই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচন বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দেয়া হয়।
×