ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেনি আপীল বিভাগ

১৫ মার্চের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা কেটে গেল

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৭ জানুয়ারি ২০১৯

১৫ মার্চের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা কেটে গেল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের বিষয়ে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেনি সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। ফলে ডাকসু নির্বাচন করতে আর কোন বাধা রইল না। রবিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট আপীল বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন মনজিল মোরসেদ। শুনানি শেষে সর্বোচ্চ আদালত চেম্বার আদালতের স্থগিতাদেশ তুলে নেয়। রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জনকণ্ঠকে বলেন, এই আদেশের ফলে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন হতে বাধা নেই । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ১৫ মার্চের মধ্যে যেহেতু নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত আছে, ফলে এই আবেদনটি আর শুনানির প্রয়োজন নেই। মনজিল মোরসেদ বলেন, যেহেতু সংসদ নির্বাচন হয়ে গেছে এবং আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত আছে ফলে হাইকোর্টের আদেশের ওপর চেম্বার আদালতের আদেশ তুলে নেয়া হোক। গত বছরের ১৭ জানুয়ারি ছয় মাসের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ নির্বাচন করার জন্য রায় দেয় হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে বিবাদীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন এ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছয় মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে মর্মে চিঠি দিয়ে আদালতকে জানানোর পর অবমাননার আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয় সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ। এরপর গত ১ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করে। ওই দিনই চেম্বার আদালত হাই কোর্টের আদেশটি স্থগিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনটি শুনানির জন্য ১১ অক্টোবর দিন ধার্য্য করে দেয়। দুই যুগ ধরে ডাকসু নির্বাচন না হওয়ায় প্রশাসনকে বাধ্য করতে ২০১২ সালে এই রিট আবেদন করেছিলেন ২৫ শিক্ষার্থী। আদালত তখন রুল দিয়ে জানতে চেয়েছিল, ডাকসু নির্বাচন করার ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। শিক্ষা সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরের কাছে এই জবাব চাওয়া হয়েছিল। ছয় বছর আগে নির্দিষ্ট সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচন করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। একইসঙ্গে গত ৩০ বছর ধরে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়াকে কেন বেআইনী ঘোষণা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়। ২৫ শিক্ষার্থীর করা রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এ আদেশ দেন। আদেশে চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। রিট আবেদনে বলা হয়, ১৯৯০ সালের পর আর ডাকসু নির্বাচন হয়নি। ঢাবি কর্তৃপক্ষ ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসন আইনানুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যর্থ হয়েছে। তাই যথাসময়ে নির্বাচন করার নির্দেশনা চেয়ে এ রিট আবেদন করা হয়। রিটের আগে ডাকসু নির্বাচনের পদক্ষেপ নিতে ৩১ শিক্ষার্থীর পক্ষে ২০১২ সালের ১১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর ও ট্রেজারারকে লিগ্যাল নোটিস দেন এ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই নোটিসের কোন জবাব না দেয়ায় ওই বছরই ২৫ শিক্ষার্থীর পক্ষে রিট আবেদন করা হয়।
×